ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রবাসী আয়ে ধীরগতি

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৪ নভেম্বর ২০১৫

প্রবাসী আয়ে ধীরগতি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রবাসী বাংলাদেশীদের পাঠানো রেমিটেন্স দেশের অর্থনীতিকে সচল রেখে থাকে। একটি আমদানিনির্ভর দেশ হওয়ার পরও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি ও ডলারের মূল্য স্থিতিশীল রাখার পিছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে এই রেমিটেন্স। প্রায় প্রতিবছরই প্রবাসী আয়ে তাৎপর্যপূর্ণ প্রবৃদ্ধি হয়। গত অর্থবছরেও ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়ে এক হাজার ৫৩২ কোটি মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল, যা একক কোন অর্থবছরে সর্বোচ্চ। তবে প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধির হাওয়া বর্তমানে আর নেই, অনেকটা স্থবির হয়ে আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের চার মাস শেষে ৫০২ কোটি ১২ লাখ ডলারের রেমিটেন্স দেশে এসেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৫০২ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। সে হিসাবে প্রবাসী আয়ে গতি অনেকটা থমকে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, সর্বশেষ অক্টোবর ’১৫ মাসে ১০৮ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে, যা আগের অর্থবছরের একই মাসে ছিল ১০১ কোটি ৮০ লাখ ডলার। সে হিসাবে অক্টোবরে প্রবাসী আয় কিছু হ্রাস পেয়েছে। প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, অক্টোবর মাসে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ৩৩ কোটি ১৪ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে, যা এর আগের মাসে ছিল ৩৯ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে এক কোটি ৩৩ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে, যা আগের মাসে ছিল এক কোটি ৬৮ লাখ ডলার। প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, বেসরকারী খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে অক্টোবর মাসে ৭২ কোটি ৯১ লাখ ডলারের রেমিটেন্স দেশে এসেছে, যা আগের মাসে ছিল ৯১ কোটি ৮১ লাখ ডলার। সে হিসাবে বেসরকারী ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এক মাসের ব্যবধানের রেমিটেন্স প্রবাস কমেছে ১৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আর বিদেশী ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এক কোটি ৩৭ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে, যা আগের মাসে ছিল এক কোটি ৫৩ লাখ ডলার। রেমিটেন্স কমার কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনশক্তি রফতানি কমে যাওয়া, সে দেশগুলোতে বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, বেসরকারী পর্যায়ে জনশক্তি রফতানিতে অনীহা, সর্বোপরি সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতায় রেমিটেন্স প্রবাহ নেতিবাচক ধারায় রয়েছে। এছাড়া বেশ কিছুদিন ধরে ডলারের বিপরীতে টাকা শক্তিশালী হওয়ায় প্রবাসীরা এখন আর আগের মতো অর্থ দেশে পাঠাতে আগ্রহী হচ্ছে না। তবে প্রতিবারের ন্যায় রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে অন্যান্য মাসের চেয়ে বেশি পরিমাণে রেমিটেন্স দেশে এসেছে। এতে গত দু’মাসে কাক্সিক্ষত পরিমাণের রেমিটেন্স দেশে এসেছিল, সে হিসাবে অক্টোবরে কিছু কমেছে।
×