ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রান্সপারেন্সি এবার প্রতিরক্ষা খাত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ৫ নভেম্বর ২০১৫

ট্রান্সপারেন্সি এবার প্রতিরক্ষা খাত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় ১৭ দেশের প্রতিরক্ষা খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঝুঁকি নিয়ে প্রণীত এক আঞ্চলিক গবেষণায় বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাত ‘উচ্চ ঝুঁঁকিপূর্ণ’ বলে অভিমত প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)। বুধবার সংস্থাটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লন্ডন থেকে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। টিআই জানায়, ২০১৪ সালে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১৭ দেশের প্রতিরক্ষা ব্যয়ের সম্মিলিত পরিমাণ প্রায় ৪৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা প্রতিরক্ষা খাতে বৈশ্বিক ব্যয়ের প্রায় এক-চতুর্থাংশ। টিআই মনে করে, এই অঞ্চলের ১৭ দেশের মধ্যে ৬ দেশেরই প্রতিরক্ষা খাতে দুর্নীতির ঝুঁকি অতি উচ্চমাত্রা থেকে সঙ্কটজনক পর্যায়ে। এত আঞ্চলিক নিরাপত্তায় হুমকির সৃষ্টি হয়েছে। এই ছয়টি দেশ হলো- চীন, থাইল্যান্ড, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, কম্বোডিয়া এবং মিয়ানমার। এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় ১৭ দেশের মধ্যে ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় সবচেয়ে নি¤œ ঝুঁকি দেশ হলো নিউজিল্যান্ড। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, তাইওয়ান, জাপান এবং সিঙ্গাপুর নিজ নিজ দেশের প্রতিরক্ষা খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে অনেক অগ্রগতি অর্জন করেছে। এশিয়ার কয়েকটি দেশে নিয়ন্ত্রণহীন সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি এবং দুর্বল ক্রয় ব্যবস্থার কারণে গবেষণার আওতাধীন ৬৫ শতাংশ দেশের জনগণের সামরিক বাহিনীর প্রতি আস্থা অনেক কম বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মানদণ্ডে- বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাত ‘উচ্চ ঝুঁকি’র তালিকায় স্থান পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যয়ের ক্ষেত্রে সংসদীয় জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা এখন সময়ের দাবি। বিশেষত জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতির অনুপস্থিতি সত্ত্বেও ক্রমবর্ধমান হারে প্রতিরক্ষা ক্রয়ের ক্ষেত্রে তথ্যের অপ্রতুলতা এবং গোপনীয়তার সংস্কৃতি গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতার জন্য মঙ্গলজনক নয়। তবে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা খাতের সামগ্রিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির স্বার্থে ভবিষ্যতে এ রকম কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ মহলের সুযোগ সৃষ্টি করা ও সার্বিকভাবে প্রতিরক্ষা ব্যয়ে সংসদের কার্যকর ক্ষমতা বৃদ্ধি ও কার্যকর করা উন্নত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য। উল্লেখ্য, দ্য গবর্নমেন্ট ডিফেন্স এ্যান্টি করাপশন ইনডেক্সে’ (সংক্ষেপে জিআই) শীর্ষক প্রতিবেদনে ৭৭টি নির্দেশকের ভিত্তিতে একটি দেশের প্রতিরক্ষা খাতের পাঁচটি ঝুঁকির ক্ষেত্র বিশ্লেষণ করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঝুঁকি নিরূপিত হয়। এই পাঁচটি ঝুঁকির ক্ষেত্র হলো- রাজনৈতিক, আর্থিক, জনবল, পরিচালনা এবং ক্রয়। গবেষণার অন্তর্ভুক্ত ৭৭টি প্রশ্নের প্রতিটি উত্তরকে ০-৪ পর্যন্ত স্কেলে রূপান্তরের পর একটি দেশের অবস্থানকে ‘এ’ থেকে ‘এফ’ শ্রেণীতে বিন্যস্ত করা হয়। ‘এ’ শ্রেণী হল সবচেয়ে কম ঝুঁকিসম্পন্ন এবং ‘এফ’ শ্রেণী হলো সবচেয়ে উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন। প্রতিটি দেশের মূল্যায়ন সম্পন্ন হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞগণ উক্ত মূল্যায়নের চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মতো ‘ডি’ শ্রেণী বা উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন দেশের শ্রেণীতে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশ হলো- ভারত, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স এবং ইন্দোনেশিয়া।
×