ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আইজিসিসিতে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত সন্ধ্যা

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৭ নভেম্বর ২০১৫

আইজিসিসিতে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত সন্ধ্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মিলনায়তনের বেশিরভাগ শ্রোতাই ছিল শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও ভাই-বোন। নিজেদের ছেলে-মেয়েদের ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে অগ্রগতি কেমন দেখাই মুখ্য বিষয়। স্বল্পসংখ্যক শ্রোতা ছিলেন যারা উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সুর মূর্ছনায় নিজেদের সপে দিয়েছিলেন। ঢাকার গুলশানের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আয়োজিত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার এ আসরে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত পরিবেশন করে দেশের নবীন শিক্ষার্থীরা, যারা সবাই এ কেন্দ্রেরই ছাত্রছাত্রী। এ অনুষ্ঠানের শিরোনাম ‘সা-মা-পা’। ভারতের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী ওস্তাদ সন্তোষ মিশ্র দীর্ঘ ছয় মাস প্রশিক্ষণের পর তাদের এ আসরে সঙ্গীত পরিবেশনের উপযোগী করে তোলেন। নবীন শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করার জন্য তিনি নিজেও এ অনুষ্ঠানে গজল পরিবেশন করেন। একটি সঙ্গীত পরিবারে জন্ম নেয়া শিল্পী সন্তোষ মিশ্র বেড়ে উঠেছেন সাঙ্গীতিক আবহে। বাবা সঙ্গীতজ্ঞ মিথিলেশ মিশ্রর কাছেই খুব ছোটবেলায় সঙ্গীতে হাতে খড়ি। পরবর্তীতে কিরানা ঘরানার ওস্তাদ গোলাম মোহাম্মদ খানের কাছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নেন। অনুষ্ঠানের শুরু হয় ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে। এরপর রাজিয়া মুন্নী পরিবেশন করেন রাগ-ভীমপলাশী। ‘যারে কোয়েলিয়া যা’ বন্দিশে তিনি আলাপ, খেয়াল, বিস্তার ও সবশেষে তারানা পরিবেশন করেন। শ্রোতারা মগ্ন হয়ে এই নবীন শিক্ষার্থীর পরিবেশিত খেয়াল শুনছিলেন। পরিবেশনায় মুন্সিয়ানার পরিচয় না থাকলেও শুদ্ধ সঙ্গীত শেখার প্রতি যে আগ্রহ আছে, দেখেই সহজে বোঝা যায়। রাগের প্রতিটা তান সুরে গাওয়ার প্রবণতা ছিল। পরে অনিন্দিতা রায় পরিবেশন করেন রাগ ইমন। সুরেলা কণ্ঠের অধিকারী এই নবীন শিল্পী ‘মিরণকে ঘর আইয়ে বনম’ বন্দিশে সকলকে মুগ্ধ করেন। তিনিও প্রথমে আলাপ পরে খেয়াল ও বিস্তার এবং তারানা দিয়ে রাগ শেষ করেন। শিক্ষার্থীদের শেষ শিল্পী ছিল শ্যামলী দাশ। তার পরিবেশনায় ছিল রাগ মালকোশ। প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় শুদ্ধ সঙ্গীতের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ প্রতিফলিত হয়। প্রত্যেক পরিবেশনার আগে শিক্ষার্থীরা তাঁদের ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য সবার কাছে অনুরোধ জানায়। দেশের সঙ্গীতের এক দৈন্যয় এ এক বড়তি পাওয়া। উপস্থিত শ্রোতা সকলকে বার বার করতালি দিয়ে উৎসাহিত করেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে গজল পরিবেশন করেন ওস্তাদ সন্তোষ মিশ্র। মূলত তাঁর শিক্ষার্থীদর অনুপ্ররণার জন্যই তিনি এ পরিবেশনায় অংশ নেন। গজল পরিবেশনার আগে তিনি বলেন, আজকের এ উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের আসর মূলত আমার ছাত্রছাত্রীদের জন্য। কিন্তু তাদের উৎসাহ যোগানোর জন্য আমি গজল পরিবেশন করছি। তিনি ভীম পলশ্রী রাগে ‘জিন্দেগীতো সাভি পেয়ারকিয়া করতে’ শিরোনামে গজল পরিবেশন করেন। শিল্পীদের তবলায় সঙ্গত করেন অভিজিৎ রায়, গিটারে টিকে তারেক ও অক্টোপ্যাডে প্রদীপ রায়।
×