ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

॥ পল মজরক ॥

প্রযুক্তি পণ্যে আলীবাবার আয় বেড়েছে

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ৭ নভেম্বর ২০১৫

প্রযুক্তি পণ্যে আলীবাবার  আয় বেড়েছে

চীনের অর্থনীতিতে মন্থরতা দেখা দেয়া সত্ত্বেও সর্বশেষ প্রান্তিকে বৃহৎ ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠান আলীবাবার আয় দারুণভাবে বেড়ে গেছে। এটা হয়েছে মোবাইলের ব্যাপক প্রসার ঘটার কারণে। অর্থাৎ মোবাইল ফোনের বিক্রি হু হু করে বেড়ে গেছে বলে। অনলাইন কেনাবেচায় আলীবাবার আধিপত্য থাকায় বিনিয়োগকারীরা এই ভেবে উদ্বিগ্ন ছিলেন যে, দেশের অর্থনৈতিক সমস্যার ধাক্কা এই কোম্পানির গায়েও এসে লাগতে পারে। গত বছর আলীবাবা বেশ ঢাকঢোল পিটিয়ে শেয়ারের প্রাথমিক লভ্যাংশ ভালই দিয়েছিল। কিন্তু এ বছরের প্রথমার্ধে এর আয় হয়েছিল নিষ্প্রভ। এমনকি এর শেয়ারের দাম অল্পসময়ের জন্য তালিকামূল্যের নিচেও নেমে এসেছিল। এখন আবার কোম্পানিটির স্থিতিশীলতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। অতি সম্প্রতি আলীবাবা জানিয়েছে যে, সর্বশেষ প্রান্তিকে তার বিক্রি বেড়েছে ৩২ শতাংশ বা অর্থমূল্যের দিক দিয়ে ৩৫০ কোটি ডলার। শেয়ার প্রতি আয় বেড়েছে ৩০ শতাংশ। যেদিন আলীবাবার এই তথ্যগুলো পরিবেশন করে সেদিনই সকালের লেনদেনে তার শেয়ারের দাম লাফ মেরে ৫ শতাংশ বেড়ে যায়। তারপরও পর্যবেক্ষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে চলেছেন যে, চীনের অর্থনীতিতে সামগ্রিক মন্থরতার কারণে আলীবাবার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। প্রবৃদ্ধি মন্থর হলে চীনের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর পকেটে টান পড়বে। এই মধ্যবিত্ত শ্রেণী আবার আলীবাবার অনলাইনে নিয়মিত কেনাকাটা করে থাকে। আলীবাবার শেয়ারের দাম এখন ৭৯ ডলার। আইপিওর পর উঠেছিল ১১০ ডলারে। অর্থাৎ ওই দাম থেকে এখনও যথেষ্ট পিছিয়ে। চীনের অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা সম্পর্কে বলতে গিয়ে কোম্পানির নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান জো টিসাই বলেন, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্রেতাদের গড় ব্যয় ক্ষমতার ভিত্তিতে পরিমাপ করা হয়। তবে তাঁর কোম্পানি মনে করে না যে চীনের প্রবৃদ্ধি সামান্য হ্রাস পাওযার ফলে আলীবাবার সাইটগুলোতে ভোক্তাদের খরচের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এসে পড়বে। তিনি বলেন, চীনের ভোক্তাদের দিকে তাকালে দেখতে পাবেন তাদের যথেষ্ট মাত্রায় তারল্য আছে। অর্থাৎ তাদের এ্যাকাউন্টে প্রচুর নগদ অর্থ জমা আছে। ম্যাক্রো অর্থনীতিতে সাময়িক বিপর্যয় তাদের ভোগ ব্যবহারের ধারার ওপর মৌলিক কোন প্রভাব ফেলবে না। টিসাই বলেন, দেশের উৎপাদনের শতাংশ হিসাবে চীনাদের ভোগ ব্যবহারের মাত্রা উন্নত দেশগুলোর তুলনায় এখনও যথেষ্ট কম। তিনি আশা করেন চীনাদের ভোগের মাত্রাটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বৃহত্তর অংশে পরিণত হবে। অনেক ইন্টারনেট কুশীলবের মতো আলীবাবা তার বিকাশের সুযোগ-সুবিধার সন্ধান করতে গিয়ে মোবাইল ফোনকে বেছে নিচ্ছে! মোবাইলের বিজ্ঞাপন থেকে কোম্পানির আয় অনলাইন ডেস্কটপের বিজ্ঞাপনের আয় থেকে বরাবরই কম। তবে মোবাইলের বিজ্ঞাপন আয় এক বছর আগের তুলনায় তিনগুণ বেড়ে ১৭০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। আলীবাবা ক’দিন আগে জানিয়েছে যে, এর ই-কামর্স সাইটগুলোতে সার্বিক লেনদেনের প্রায় ৬২ শতাংশ মোবাইল ফোনের দ্বারা হয়েছে। আলীবাবার নয়া প্রধান নির্বাহী ড্যানিয়েল ঝাং বলেন, আজ চীনের দৃশ্যপটের দিকে তাকালে দেখা যাবে চীনে মোট খুচরা কেনাবেচার মাত্র ১০ শতাংশ অনলাইনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। তার মানে আলীবাবার সামনে এখনও বিপুল সম্ভাবনা রয়ে গেছে।
×