ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ১৪.৩৬ ভাগ

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ৮ নভেম্বর ২০১৫

পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ১৪.৩৬ ভাগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের সঙ্গে কমেছে সব ধরনের মূল্যসূচক। আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ১৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। বেশিরভাগ কোম্পানির দর হারানোয় বিনিয়োগকারীদের মাঝে কিছুটা হতাশা লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া বিনিয়োগকারীদের বড় একটি অংশই সাইডলাইনে থেকে বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন। গত সপ্তাহের উল্লেখযোগ্য খবরের মধ্যে ছিল- অক্টোবরে রেমিট্যান্স আন্তঃপ্রবাহ হ্রাস, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, বিদেশী বিনিয়োগ ও রফতানিতে দুর্বলতা। এদিকে প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারস (পিডব্লিউসি) তাদের পূর্বাভাসে বলেছে, ২০১৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৩তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। এছাড়া শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সমন্বয়ে সময় বাড়ানোর পক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্য বিনিয়োগকারীদের কিছুটা আশাবাদী করলেও শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকেনি। জানা গেছে, আগের সপ্তাহের চেয়ে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ২৫২ কোটি ২৮ লাখ টাকার। আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫০৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৭৫৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার। উল্লেখ্য, মেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডকে বেমেয়াদীতে রূপান্তরের বিষয়ে হাইকোর্টের সাম্প্রতিক স্থগিতাদেশ বাতিল করেছে সুপ্রীমকোর্টের আপিল বিভাগ। এতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গ্রামীণ ওয়ান স্কিম ওয়ান, এইমস ফার্স্ট ও ফার্স্ট আইসিবি মিউচুয়াল ফান্ডের ট্রাস্টিকে নতুন করে ইফেক্টিভ ডেট ঘোষণার নির্দেশ দিয়েছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সম্পদমূল্যের ভিত্তিতে বিনিয়োগ ফেরত পাওয়ার আশায় গত সপ্তাহে তিনটি ফান্ডেরই বাজারদর বেড়েছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৩ দশমিক ১৭ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১ দশমিক ০৩ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে ১ দশমিক ০৫ শতাংশ। এদিকে, ডিএসইর সার্বিক সূচক বা ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ বা ৬২ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএস৩০ সূচক কমেছে দশমিক ৮৫ শতাংশ বা ১৪ দশমিক ৬১ পয়েন্ট। অপরদিকে শরিয়াহ বা ডিএসইএস সূচক কমেছে দশমিক ৭২ শতাংশ বা ৭ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩২৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে দর বেড়েছে ৬৯টি কোম্পানির, কমেছে ২৪৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টির। লেনদেন হয়নি একটি কোম্পানির শেয়ার। এদিকে, দরপতনের কারণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) কমেছে। আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে দশমিক ১৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৪ শতাংশ। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ডিএসইতে পিই রেশিও ১৫ দশমিক ১৫ পয়েন্টে অবস্থান করে; যা আগের সপ্তাহে ছিল ১৫ দশমিক ২৮ পয়েন্ট। সপ্তাহ শেষে খাতভিত্তিক পিই রেশিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যাংক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ৭ দশমিক ১ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতের ২৮ দশমিক ৯ পয়েন্টে, সিরামিক খাতের ৪২ দশমিক ১ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতের ২৫ দশমিক ২ পয়েন্টে, আর্থিক খাতের ১৭ দশমিক ২ পয়েন্টে, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ৩১ দশমিক ২ পয়েন্টে, জ্বালানি ও বিদ্যুত খাতের ১৩ দশমিক ৩ পয়েন্টে, সাধারণ বীমা খাতের ১০ পয়েন্টে, তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের ২০ দশমিক ৪ পয়েন্টে, পাট খাতের ২০০ দশমিক ৫ পয়েন্টে, বিবিধ খাতের ৩৭ দশমিক ৩ পয়েন্টে, মিউচুয়াল ফান্ড খাতের ৭ দশমিক ২ পয়েন্টে, পেপার এ্যান্ড প্রিন্টিং খাতের ৭ দশমিক ৩ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ২৬ দশমিক ৩ পয়েন্টে, সেবা ও আবাসন খাতের ৩৪ দশমিক ৯ পয়েন্টে, ট্যানারি খাতের ২৪ দশমিক ৪ পয়েন্টে। সাপ্তাহিক লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো- ইফাদ অটোস, স্কয়ার ফার্মা, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, কেডিএস এক্সেসরিজ, কাসেম ড্রাইসেল, বেক্সিমকো ফার্মা, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, বিএসআরএম লিমিটেড, গ্রামীণফোন লিমিটেড ও তিতাস গ্যাস। দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো- ১ম আইসিবি মিউচুয়াল ফান্ড, গ্রামীণ মিউচুয়াল ফান্ড-১, আরামিট লিমিটেড, বিএসআরএম লিমিটেড, এইমস ১ম মিউচুয়াল ফান্ড, এ্যাপোলো ইস্পাত, দেশ গার্মেন্টস, সাউথ ইস্ট ব্যাংক ১ম মিউচুয়াল ফান্ড ও প্রাইম ইসলামী লাইফ।
×