ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ওয়ালটন টেনিস, ক্যারিয়ারের প্রথম একক শিরোপা বাংলাদেশের মাটিতে

উচ্ছ্বসিত ডাচ্্ টেনিসকন্যা ডেমি ট্রান

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ৮ নভেম্বর ২০১৫

উচ্ছ্বসিত ডাচ্্ টেনিসকন্যা ডেমি ট্রান

রুমেল খান ॥ ‘দারুণ অনুভূতি। খুবই খুশি আমি। বাংলাদেশ সফর আমার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এখানেই জিতেছি ক্যারিয়ারের প্রথম একক শিরোপাটি। এর আগে থাইল্যান্ডেও শিরোপা জিতেছিলাম। তবে সেটা ছিল দ্বৈত শিরোপা।’ কথাগুলো ডেমি ট্রানের। হল্যান্ডের চতুর্দশী এই সুদর্শনা টেনিসকন্যা শনিবার জিতেছে তার ক্যারিয়ারের প্রথম একক শিরোপা। ওয়ালটন বাংলাদেশ আইটিএফ জুনিয়র টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে বালিকা এককের ফাইনালে হল্যান্ডের ডেমি ট্রান ৩-৬, ৬-৩, ৬-২ গেমে স্বদেশী সহোদরা লিয়ান ট্রানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। এ যেন উইলিয়াম সহোদরার মতো দ্বৈরথ। ভেনাস-সেরেনার লড়াই। এখানে ভেনাস-সেরেনার পরিবর্তে দুই বোন ডেমি ট্রান এবং লিয়ান ট্রান। তাতে জয়ী বড় বোন ডেমিই। ফাইনালে ডেমি প্রথম সেট হারলেও মনোবল হারায়নি। পরের দুই সেট জিতে ঠিকই পৌঁছে যায় অভীষ্ট লক্ষ্যে। তবে ফাইনালের চেয়েও তাকে এর চেয়েও কঠিন প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তার উত্তর, ‘সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছি সেমিফাইনালে। শ্রীলঙ্কার করুনারতœকে। প্রথম সেটেই হেরে যাই আমি। তারপর টানা দুই সেট জিতে ফাইনালে উঠতে হয় আমাকে (স্কোর ঃ ৬-৭, ৬-৩, ৬-০)।’ ফাইনালে ছোট বোনকে হারাতে হয়েছে? এজন্য নিশ্চয়ই মন কিছুটা হলেও বিষণœ। ‘দেখুন, কাউকে না কাউকে তো হারতেই হতো, তাই না?’ ডেমির জবাব। ডেমির বর্তমান আইটিএফ জুনিয়র র‌্যাঙ্কিং ৭০০ (গত ২ নবেম্বর যা ছিল ৭৪৪)। বাংলাদেশে আসার আগে একটি টুর্নামেন্টে খেলেছে সে। সেটা থাইল্যান্ডে। এর আগে খেলে এসেছে শ্রীলঙ্কাতেও। বাংলাদেশে এই প্রথম এসেছে সে। এখানকার পরিবেশ, আবহাওয়া, আতিথেয়তা, নিরাপত্তা- সবকিছুই দারুণ লেগেছে তার। প্রিয় বা আদর্শ টেনিস খেলোয়াড়? ‘মহিলা টেনিস খেলোয়াড়দের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সেরেনা উইলিয়ামসের খেলা দারুণ ভাল লাগে আমার। তার মতো পাওয়ার টেনিস খেলার স্বপ্ন দেখি। এছাড়া পুরুষ খেলোয়াড়দের মধ্যে আমার প্রিয় হচ্ছেন সুইজারল্যান্ডের রজার ফেদেরার।’ বোন লিয়ান ট্রানের সঙ্গে জুটি বেঁধে এই আসরের সেমিফাইনাল পর্যন্তও উঠেছিল ডেমি। তবে চাইনিজ তাইপের চ্যাং ইয়ুন ও চ্যাং লি জুটির কাছে হেরে বিদায় নিতে হয় দুই বোনকে। ভবিষ্যত লক্ষ্য? ‘আপাতত নিকট ভবিষ্যত লক্ষ্য হচ্ছে আগামী সপ্তাহে রাজশাহীতে গিয়ে আরেকটি টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে সফল হওয়া। এরপর ভিয়েতনামে ফিরে গিয়ে আরেকটি টুর্নামেন্ট খেলব। এরপর থাইল্যান্ডে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেব। আর সূদুরপ্রসারী লক্ষ্য বা পরিকল্পনার কথা যদি বলেন, তাহলে বলব আমার স্বপ্ন হচ্ছে গ্র্যান্ডসø্যাম টুর্নামেন্ট, অলিম্পিক টেনিস এবং ফেড কাপে।‘ পাসপোর্ট হল্যান্ডের। তবে বাবা-মা দুজনেই ভিয়েতনামী। হল্যান্ডে জন্ম হওয়ায় সেই দেশেরই নাগরিক এখন ডেমি। ‘একসময় আমি আমার পূর্বপুরুষের দেশ ভিয়েতনামের হয়েও খেলতে চাই।’ প্রথম প্রেমের স্মৃতি যেমন কখনও ভোলা যায় না, তেমনি আগামীতে ডেমি নিশ্চয়ই আরও অনেক একক শিরোপা জিতবে। কিন্তু ঢাকার মাটিতে জেতা প্রথম শিরোপা জেতার অনুভূতি কি কখনও ভুলতে পারবে সে?
×