ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাকিবের ক্যারিয়ারসেরা বোলিং, জিম্বাবুইয়ে পরাজিত ১৪৫ রানে

টাইগারদের শুরু উদ্ভাসিত জয়ে

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ৮ নভেম্বর ২০১৫

টাইগারদের শুরু উদ্ভাসিত জয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার॥ প্রস্তুতি ম্যাচ আর আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে বিস্তর ফারাক। সেই পার্থক্যটা সফরকারী জিম্বাবুইয়েকে বুঝিয়ে দিয়েছেন ব্যাট হাতে মুশফিকুর রহীম ও বল হাতে সাকিব আল হাসান। শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডেতে প্রস্তুতি ম্যাচে বিশাল জয় পাওয়া জিম্বাবুইয়েকে ১৪৫ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। মুশফিকের ১০৭ রানে বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ২৭৩ রান তুলেছিল। জবাব দিতে নেমে জিম্বাবুইয়ে সাকিবের ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে ১৩ ওভার ৫ বল আগেই ৯ উইকেটে ১২৮ রান তুলে গুটিয়ে যায়। আহত থাকায় ব্যাট করতে পারেননি জিম্বাবুইয়ে ব্যাটসম্যান রিচমন্ড মুতুম্বামি। সাকিব ওয়ানডেতে এই প্রথম ৫ উইকেট শিকার করেন মাত্র ৪৭ রান দিয়ে। এ জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। প্রস্তুতি ম্যাচের ফলাফলটা বারবারই পৈশাচিক হাসি দিচ্ছিল বাংলাদেশ দলকে। ৭ উইকেটে সফরকারী জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে বিধ্বস্ত হয়েছিল বিসিবি একাদশ। এ কারণে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে একটা শঙ্কা ছিল। বিপরীত দিক থেকে জিম্বাবুইয়ে ছিল বেশ উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত। প্রস্তুতি ম্যাচের অভিজ্ঞতা থেকে টস জিতেই বাংলাদেশকে ব্যাটিং দেয় তারা। দিবারাত্রির ওয়ানডে তাই যেকোন দলই রাতের ডিউ ফ্যাক্টরের সুবিধা নিতে এমনই করবে। টস পর্যন্ত দু’দিনের ঘটনাক্রম এবং বাংলাদেশ দল ব্যাটিংয়ে নামার পর শুরুটা যেমন হলো ওই ভীতিটাই ফিরে আসে। দ্বিতীয় ওভারেই নির্ভরযোগ্য ওপেনার তামিম ইকবালের নতুন সঙ্গী লিটন শুন্য রানে সাজঘরে ফিরে যান। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও বেশিক্ষণ থাকতে পারলেন না। মাত্র ৮.৩ ওভার, দলীয় ৩০ রানেই দুই টপঅর্ডার সাজঘরে ফেরার কারণে বিপদ নেমে আসে। তবে মুশফিক ক্রিজে আসার পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। তৃতীয় উইকেটে ৭০ রানের জুটিতে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে ওঠে বাংলাদেশ। তবে তামিম ৪০ রান করে ফিরে যাওয়ার পর সাকিব তেমন কিছুই করতে পারেননি। মাত্র ১৬ রানেই সাজঘরে ফিরেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ১২৩ রানে ৪ উইকেট চলে যাওয়ার কারণে বিপদটা যেন আবার নেমে আসে টাইগার শিবিরে। কিন্তু মুশফিককে দারুন সঙ্গ দিলেন তরুন সাব্বির রহমান। দু’জনে পঞ্চম উইকেটে গড়ে তোলেন ১১৯ রানের জুটি। সাব্বির ক্যারিয়ারসেরা ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন ৫৮ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকিয়ে। এটি তাঁর ওয়ানডেতে দ্বিতীয় অর্ধশতক। মুশফিক ব্যক্তিগত ৫৩ ও ৯০ রানে দুটি ক্যাচ দিয়ে জীবন ফিরে পেলেও সেঞ্চুরির আগে থামেননি। ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। ভাল একটা অবস্থান তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শেষদিকে আবারও ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় সংগ্রহটা আরও বড় হয়নি। শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশ ৭৩ রান তুলতে পারলেও হারায় ৫ উইকেট। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৭৩ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশের সংগ্রহটা এমনই (২৭৭) ছিল। কিন্তু জিম্বাবুইয়ে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে জিতে গিয়েছিল জিম্বাবুইয়ে। এবারও জবাবটা সেভাবেই দিতে শুরু করে তারা। বিনা উইকেটে ৪০ রান তুলেও ফেলে। তবে সাকিব বোলিংয়ে আসার পরই পাল্টে যায় সব। চামু চিবাভাকে শিকার করে প্রথম সাফল্য আনেন তিনি। এরপর জিম্বাবুইয়ে দলের যুদ্ধটা শুধু সাকিব ঘূর্ণির বিরুদ্ধেই হলো। একাই ৫ উইকেট শিকার করে ধসিয়ে দিলেন তিনি জিম্বাবুইয়ের ইনিংস। যদিও মাশরাফি দারুন বোলিং করে দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়েছেন। আর ‘কাটার’ ও সুইংয়ে বিশ্বের তোলপাড় সৃষ্টি করা পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে বেশ সতর্ক হয়েই খেলেছে জিম্বাবুইয়ে। কিন্তু মূল ধ্বংসের কাজটা করে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৫ উইকেট শিকার করেন সাকিব। ফিল্ডিংয়ের সময় গোঁড়ালিতে আঘাত পাওয়া জিম্বাবুইয়ে ব্যাটসম্যান রিচমন্ড মুতুম্বামি ব্যাট করতে নামতে পারেননি। জিম্বাবুইয়ে ইনিংসে একমাত্র যোদ্ধা অধিনায়ক চিগুম্বুরা ৫১ বলে ২ ছক্কায় ৪১ রান করার পর নাসির হোসেনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার পরই তাই খেলা শেষ হয়ে যায়। এছাড়া আরেক ওপেনার লুক জঙ্গে ৩৯ রানের একটি ভাল ইনিংস খেলেছেন। বাকিদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ৩৬.১ ওভারেই ১২৮ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুইয়ে।
×