ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিশ্রুতি মিয়ানমার প্রেসিডেন্টের ॥ আজ ভোট, মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক্ষমতাসীন ও সুচির দলের মধ্যে

নির্বাচনী ফল মেনে নেব

প্রকাশিত: ০৭:৩৩, ৮ নভেম্বর ২০১৫

নির্বাচনী ফল মেনে নেব

মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন শুক্রবার বলেছেন, সেনাবাহিনী ও সরকার উভয়েই রবিবারের ঐতিহাসিক পার্লামেন্ট নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেবে। তিনি এক স্থিতিশীল পথে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করতে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে কাজ করবেন বলেও জানান। খবর ইয়াহু নিউজের। থেইন সেইন বলেন যে, তিনি ২০১১ সালে এক আধা বেসামরিক সরকারের প্রধান হিসেবে ক্ষমতায় আসার পর যে সংস্কারের সূচনা করেছিলেন, তা চালিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে প্রধান পদক্ষেপ হলো এক সফল নির্বাচন। তিনি দু’মাসের নির্বাচনী প্রচার অভিযানের মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে ভাষণ দিচ্ছিলেন। থেইন সেইন বলেন, আমি আবারও বলতে চাই যে, সরকার ও সামরিক বাহিনী নির্বাচনের ফলাফলের প্রতি সম্মান দেখাবে এবং তা মেনে নেবে। নির্বাচনী ফলাফলের ভিত্তিতে গঠিত নতুন সরকারকে আমি গ্রহণ করব। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আউং সান সুচির নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলই অধিকাংশ ভোট পাবে বলে মনে করা হয়। কিন্তু তিনি প্রেসিডেন্ট পদ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় বিরাট সংখ্যাগরিষ্ঠ পার্লামেন্টারি আসন পাবেন কিনা তা স্পষ্ট নয়। প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্টের ভোটে নির্বাচিত হন এবং তিনিই মন্ত্রিসভা গঠন করেন। মিয়ানমারের জান্তা প্রণীত এক সংবিধান বলে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের এক-চতুর্থাংশ আসন সেনাবাহিনীর জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়। এর অর্থ হলো সুচির ন্যাশনাল লীগ ফল ডেমোক্র্যাসিসহ (এনএলডি) দলকে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে অবশ্যই সব সাধারণ আসনের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি লাভ করতে হবে। সুচি নির্বাচন এবং মার্চের শেষ দিকে নতুন সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের মধ্যবর্তী কয়েক মাস দেশটির দিকে গভীর দৃষ্টি রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ক্ষমতার সুষ্ঠু হস্তান্তর নিরপেক্ষ নির্বাচনের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। থেইন সেইন বলেন যে, নির্বাচনের পর তিনি সব রাজনৈতিক শক্তির নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন এবং আগামী পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলবেন। তিনি বলেন, এসব রাজনৈতিক বৈঠক নির্বাচনোত্তর সময়ে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতেই কেবল সহায়ক হবে না, এক নতুন রাজনৈতিক পরিবেশে ধীরে ধীরে উত্তরণ ঘটাতেও সাহায্য করবে। তিনি স্বীকার করেন যে, নির্বাচন অনুষ্ঠান করা এক চ্যালেঞ্জ, কিন্তু তিনি এক বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সরকারের অঙ্গীকার জোর দিয়ে ব্যক্ত করেন। দশ হাজারেরও বেশি পর্যবেক্ষক নির্বাচনী প্রক্রিয়ার দিকে দৃষ্টি রাখবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। কয়েকটি কারণে নির্বাচনী প্রক্রিয়া বিঘিœত হয়েছে। প্রায় ৪০ লাখ লোক তাদের ভোট দিতে পারবেন না। হাজার হাজার লোকের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। বিদেশে অবস্থানরত লাখ লাখ লোক তাদের নাম যথাসময়ে ভোটার তালিকাভুক্ত করতে ব্যর্থ হয়। ১১ লাখ নির্যাতিত সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের অধিকাংশকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হচ্ছে না। ১৯৬০-এর দশক থেকে মিয়ানমারে কোন নির্বাচিত সরকার নেই। দেশটিতে ৩০ বছরের মধ্যে প্রথম আদমশুমারির ফলাফল মে মাসে প্রকাশিত হয়। শুক্রবার পশ্চিমা শক্তিগুলো এক স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায়। ভোট গ্রহণের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক এবং দু’সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণ ফলাফল পাওয়া যেতে পারে। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ইউনিয়ন সলিডারিটি এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (ইউএসডিপি) সঙ্গেই সুচির এনএলডির মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এটিই ২৫ বছরের মধ্যে দেশের প্রথম পার্লামেন্ট নির্বাচন।
×