ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সর্বোচ্চ সতর্কতা আর নজরদারিতে কাজ হয়েছে ;###;গতবার হজে গিয়ে ফেরেননি ৩ হাজার হাজী

এবার হজে আদম পাচার হয়নি ॥ সবাই ফিরেছেন

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৯ নভেম্বর ২০১৫

এবার হজে আদম পাচার হয়নি ॥ সবাই ফিরেছেন

আজাদ সুলায়মান ॥ সরকারের কঠোর নজরদারি আর যাচাই-বাছাইয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতার দরুন হজে গিয়ে কেউ পালাতে পারেননি। এবার যারা হজে গিয়েছেন, সবাই ফিরেছেন। সর্বশেষ ৪ নবেম্বরের বিমানের ফ্লাইটে আসা যাত্রীদের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, এবার গতবারের মতো বিপুলসংখ্যক হাজী না ফেরার তেমন কোন তথ্য নেই। কিংবা কোন অভিযোগ এখনও পর্যন্ত মেলেনি। একইভাবে সৌদিয়া এয়ারলাইন্সে পাঠানো প্রায় সব হাজী ফিরেছে বলে জানা যায়। তবে এ দুটো এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে হাজীরা সৌদি যাওয়ার পরও কিছুসংখ্যক হাজী থার্ড ক্যারিয়ার এয়ারলাইন্সে ফিরে আসেন। এজন্য দুটো এয়ারলাইন্সের পক্ষে ফেরার প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। এ সম্পর্কে হজ অধিফতরের পরিচালক ডক্টর আবু সালেহ মোস্তফা কামাল জনকণ্ঠকে বলেন, বিমান ও সৌদিয়ার মাধ্যমে মোট ১ লাখ ৭ হাজার ২৯০ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে যান। তাদের মাধ্যমে মীনা দুর্ঘটনা ও স্বাভাবিক মৃত্যুর শিকার হন মোট ২৭১ জন হাজী। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ আছেন আরও ৪৫ জন। নিখোঁজ হওয়াদের বেশিরভাগই মীনা দুর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকতে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন দেখতে হবে বিমান ও সৌদিয়া কত হাজী ফেরত এনেছেন। বিমানের এমডি ক্যাপ্টেন মোসাদ্দিক আহমেদ জনকণ্ঠকে জানানÑ এ বছর বিমানের ফ্লাইটে ৫৪ হাজার ৮৪৫ জন সৌদি আরব গেছেন। তার মধ্যে ফিরেছেন ৫৩ হাজার ৪৯১ জন। এতে বিমানে না ফেরা ১৩৫৪ জন হাজী থার্ড ক্যারিয়ারের মাধ্যমে দেশে ফেরেন। উল্লেখ্য, ১ লাখ ৭ হাজার ২৯০ জন হজযাত্রীর মধ্যে জাতীয় পতাকাবাহী বাংলাদেশ বিমান ঢাকা-জেদ্দার মধ্যে ১৪০টি ফিরতি ফ্লাইট পরিচালনা করে ৫৪ হাজার ৮৪৫ জন হজযাত্রী বহন করে। বাকি হজযাত্রীরা সৌদি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে দেশে ফিরেন। এ সম্পর্কে হজ অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর হজে গিয়ে প্রায় ৩ হাজার হাজী দেশে ফেরেননি। এ ঘটনায় সৌদি আরবেও ব্যাপক সমালোচনা দেখা দেয়। এতে বাংলাদেশের কয়েকটি হজ এজেন্সিকে কালো তালিকাভুক্ত করে সৌদি সরকার। তারপর ওমরাহ হজ বন্ধ করা হয়। এতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্তা-ব্যক্তিরা কঠোর সমালোচনার মুখে পড়ে। এ কারণে এবার হজের আগেই চার বার করে হজযাত্রীদের ডাটা এন্ট্রি পরীক্ষা করা হয়। পুলিশ প্রতিবেদনেও খুব কড়াকড়ি আরোপের মাধ্যমে এজেন্সিগুলোকে চরম সতর্ক করা হয়। অপেক্ষাকৃত তরুণদের যৌক্তিক কারণ ছাড়া হজে যাওয়ার ব্যাপারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এসব কারণে হজের মাধ্যমে আদম পাচার সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে হজ হাব সভাপতি ইব্রাহিম বাহার জনকণ্ঠকে বলেন, সৌদি সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি বছর হজ বা ওমরাহ করতে গিয়ে শতকরা ১ জন যদি নিখোঁজ হন বা না ফেরেন সেটাকে স্বাভাবিক বলে গণ্য করা হয়। এজন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকে সৌদি সরকার। এ হিসেবে যদি এবার ১ লাখ ৭ হাজার ২৯০ জনের মধ্যে এক হাজার হাজীও দেশে না ফেরেন সেটা ধর্তব্য হবে না। সে ক্ষেত্রে এদের সম্পর্কে কেউ কোন অভিযোগ করলেও সেটা আমলে নেয়া হবে না। হজ নীতিমালার এই বিবেচনায় বলা যাবে এবার হজের নামে কোন আদম পাচার হয়নি। হাব এখনও এ ধরনের কোন অভিযোগ পায়নি।
×