ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে আর খেলছেন না সাকিব

প্রকাশিত: ০৬:২২, ৯ নভেম্বর ২০১৫

জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে আর খেলছেন না সাকিব

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে খেলবেন কিনা সেটা নিয়েই কিছুটা সংশয় ছিল। কারণ বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। সিরিজের আগে তাই অনুশীলনেও বিলম্বে যোগ দিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত সিরিজ খেলতে দেশে আসেন তিনি। প্রথম ওয়ানডেতেই ঝলক দেখিয়েছেন, ক্যারিয়ারে নতুন এক অর্জন যোগ হয়েছে তার ওয়ানডেতে প্রথমবার ৫ উইকেট শিকার করে। আরও অনন্য দুটি অর্জনের খুব কাছাকাছি চলে এসেছিলেন। কিন্তু জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে আর খেলাই হবে না তার। স্ত্রীর পাশে থাকার জন্য এক ম্যাচ খেলেই আবার যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিতে হচ্ছে। এ কারণে সিরিজের বাকি দুই ওয়ানডে ও টি২০ খেলতে পারবেন না তিনি। যে দুটি অর্জন হাতছানি দিচ্ছিল তার মধ্যে একটি হচ্ছে দেশসেরা উইকেটশিকারী হওয়া। টেস্টের পর ওয়ানডেতেও বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক উইকেটশিকারী হতে সাকিবের প্রয়োজন ছিল আর মাত্র দুই উইকেট। ওয়ানডেতে তার শিকার ২০৬ উইকেট আর ২০৭ উইকেট নিয়ে শীর্ষে আরেক বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। অন্য একটি অর্জন হচ্ছে তিন ফরমেট মিলিয়ে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ৪০০ উইকেট নেয়ার গৌরব। বর্তমানে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি২০ মিলিয়ে সাকিবের ঝুলিতে আছে ৩৯৮ উইকেট। গত এক বছর ধরেই দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। এ কারণে নির্দিষ্ট দুয়েকজন ক্রিকেটারের পারফর্মেন্সের ওপর নির্ভরতা অনেকটাই কমে গেছে। তবু ব্যাটে-বলে সেরা সাকিবের ওপর বাড়তি একটা নির্ভরতা আছেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দলের ব্যাটিং-বোলিংয়ে দলগত নৈপুণ্য দেখিয়ে যাচ্ছে দল। সে কারণে সাকিবকে নিয়ে সিরিজ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেছিলেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে আমি আশা করি, সাকিব পর্যন্ত ব্যাটিং না আসুক। সাকিব তো বাংলাদেশ দলে আসার পর থেকেই সব সময় একটা নির্ভরতার নাম ছিল। তবে শেষ কয়েকটা সিরিজে ওর ওপর থেকে চাপ অনেক কমেছে। তবে বোলিংয়ে আমাদের প্রয়োজন হবে ওকে।’ সত্যিই প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাটিংয়ে তেমন কিছুই করতে পারলেন না সাকিব। মাশরাফির কথা অনুসারেই যেন জ্বলে উঠলেন বল হাতে। আগের ১৫৬ ওয়ানডেতে যা করেননি সেটাই করলেন প্রথমবার, দখল করলেন ৫ উইকেট। এর আগে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৬ ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনবার এবং জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে দুইবার চার উইকেট নিয়েছিলেন। ২০১০ সালের ৩ ডিসেম্বর ঢাকায় জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধেই নিয়েছিলেন ৩৯ রানে ৪ উইকেট। সেটিই জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে তার সেরা বোলিং নৈপুণ্য ছিল। ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ১৬ রানে ৪ উইকেট। সেটি ২০১১ সালের ১৮ অক্টোবর। টেস্টে এক ইনিংসে ১৪ বার ৫ উইকেট নিয়েছেন। কিন্তু ওয়ানডেতে ওই প্রাপ্তি থেকে দূরে ছিলেন এতদিন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। এবার সেটাও হলো তার। জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ওয়ানডেতেই ৪৭ রান দিয়ে ৫ উইকেট শিকার করলেন। এবার দেশের সেরা ওয়ানডে বোলার হয়ে ওঠার অপেক্ষা তার। সেজন্য প্রয়োজন আর মাত্র দুই উইকেট। ১৫৩ ম্যাচে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক ২০৭ উইকেট আছে বাঁহাতি স্পিনার রাজ্জাকের। আর সাকিবের ঝুলিতে এখন ১৫৭ ম্যাচে ২০৬ উইকেট। টেস্ট ক্রিকেটে অবশ্য বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক উইকেট তারই ঝুলিতে। ৪২ টেস্টে ১৪৭ উইকেট আছে সাকিবের। প্রথম ওয়ানডেতেই ৫ উইকেট পাওয়ার কারণে আরও দুটি মাইলফলক এগিয়ে আসে সাকিবের সামনে। মিরপুরে সর্বাধিক উইকেটশিকারী তিনি। প্রথম বোলার হিসেবে এ ভেন্যুতে ১০০ উইকেট শিকারের খুব কাছে এখন সাকিব। ৬৮ ম্যাচে ৯৪ উইকেট নিয়েছেন এ মাঠে। আর ৬ উইকেট হলেই ১০০ ছুঁয়ে ফেলবেন মিরপুরে। আরেকটি মাইলফলক হচ্ছে তিন ফরমেট মিলিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম বোলার হিসেবে ৪০০ উইকেট শিকারের একেবারেই নিকটে এখন তিনি। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি২০ ম্যাচ থেকে তিনি সবমিলিয়ে শিকার করেছেন ইতোমধ্যে ৩৯৮ উইকেট। অনন্য এ অর্জনটির জন্য আর প্রয়োজন মাত্র দুই উইকেট। কিন্তু সিরিজের মাঝপথে চলে যেতে হচ্ছে বলেই অপেক্ষা এখন পরবর্তী সিরিজ পর্যন্ত।
×