ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঝুঁকিপূর্ণ কাজে চার লাখেরও বেশি শিশু

প্রকাশিত: ০৩:১৬, ৯ নভেম্বর ২০১৫

ঝুঁকিপূর্ণ কাজে চার লাখেরও বেশি শিশু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে চার লক্ষাধিক শিশু গৃহকর্মের মত মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের জীবনের ঝঁকিও বাড়িয়ে তুলছে। পথশিশুদের অবস্থা এর চেয়েও মারাত্মক। মেয়ে পথশিশুরা যৌন হয়রানির শিকার হয়ে ভাসমান যৌন কর্মীতে রুপান্তির হতে বাধ্য হচ্ছে। তবে একই সঙ্গে ঝঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম প্রতিরোধে সরকার নানা ধরণের কর্মসূচী গ্রহণ করছে। সরকারী নানা সেবা প্রদান অব্যাহত থাকলেও সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীর মধ্যে সেবা গ্রহণের মানসিক অক্ষমতা রয়েছে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ সামাজিকভাবে সচেতন হলেই ঝঁকিপূর্ণ শিশু শ্রম প্রতিরোধ ও নিরসন সম্ভব। সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সুবিধাবঞ্চিত পথশিশু, শিশু গৃহকর্মী ও বস্তিতে বসবাসকারী শিশুদের সুরক্ষা ও অধিকার’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট(এএসডি) ওই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম প্রতিরোধে নবেম্বরের মধ্যে শহরের দৃশ্যমাণ কার্যক্রম লক্ষ্য করা যাবে। সরকারী নানা সেবা থাকা সত্ত্বেও অনেকেই তা গ্রহণ করেন না। লেখাপড়ার এতো সুযোগ সুবিধা রয়েছে, তবু আমাদের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা বিরাজমান। শিশু শ্রম প্রতিরোধে আমাদের সকলের সমন্বিত উদ্যোগ দরকার, সরকার এসব সমস্যা একা সমাধাণ করতে পারবে না। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার বলেন, সরকার সীমিত সামর্থ্যরে মধ্যে শিশুদের উন্নয়নে নানা কর্মসূচী গ্রহণ করছে। কিন্তু তা গ্রহণ করার জন্যে বঞ্চিতদের মানসিক ক্ষমতা কতটুকু আছে তা ভেবে দেখার বিষয়। সমন্বতি কর্মসূচী গ্রহণের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে সবার সম্মিলিত উদ্যোগ দরকার। সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন এএসডি’র উপ নির্বাহী পরিচালক মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুরা কোন প্রকার আইনের দ্বার সুরক্ষিত নয়। সরকার শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ৩৮ টি কাজের তালিকায় গৃহকর্মের মতো একটি মারাত্মক ও বিপজ্জনক কাজ স্থান পায় নি। অথচ ওইসব শিশুরা সম্পূর্ণ অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, শিশু গৃহকর্মীর পাশাপাশি দেশের প্রায় ১২ লাখ পথশিশু নূন্যতম সুযোগ-সুবিধা থেকে সম্পূর্ণরুপে বঞ্চিত। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ছাড়াও মেয়ে পথশিশুরা যৌন হয়রানিরও শিকার হচ্ছে। নির্যাতনের ফলে এদের কেউ কেউ ভাসমান যৌনকর্মীতেও রুপান্তর হচ্ছে। শিশু অধিকার বিশেষজ্ঞ শরফুদ্দিন খানের সঞ্চালনা ও এসএসডি’র নির্বাহী পরিচালক জামিল এইচ চৌধুরির সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিশু একাডেমির পরিচালক মোশাররফ হোসেন, বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আব্দুস শহীদ মাহমুদ, জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসী ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের ন্যাশনাল এডভোকেসি কো-অর্ডিনেটর সাবিরা নূপুর, এএসডির প্রজেক্ট ম্যানেজার ইউ কে এম ফারহানা সুলতানা প্রমুখ।
×