ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জঙ্গী কানেকশন নেই

রাবি শিক্ষক শফিউল হক হত্যা মামলার চার্জশীট শীঘ্রই

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ১০ নভেম্বর ২০১৫

রাবি শিক্ষক শফিউল হক হত্যা মামলার চার্জশীট শীঘ্রই

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে সর্বাধিক আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর শিক্ষক একেএম শফিউল হক লিলন হত্যাকা-ের অভিযোগপত্র প্রায় প্রস্তুত। শীঘ্রই তা আদালতে দাখিলের প্রক্রিয়া চলছে। এ মাসেই অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। গত বছরের ১৫ নবেম্বর বিশ^বিদ্যালয় সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক একেএম শফিউল হক লিলন। কয়েক দফা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বদলের পর অবশেষে হত্যাকা-ের এক বছরের মাথায় মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। এই হত্যাকা-ে জঙ্গী কানেকশন নয়, এমনকি আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের ও কোন যোগসূত্র নেই। তবে আটক যুবদল নেতা পিন্টুর স্ত্রী রেশমার দ্বন্দ্বেই অপর যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন উজ্জলের (পলাতক) পরিকল্পনায় শিক্ষক লিলনকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা রেজাউস সাদিক। তবে রাজশাহী জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জল এখনও পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। পলাতক থেকেই মামলা থেকে তার নাম বাদ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। গত বছরের ১৫ নবেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপকণ্ঠে চৌদ্দপাই এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে দুপুর বেলায় খুন হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক একেএম শফিউল ইসলাম লিলন। এ ঘটনার পাঁচ ঘণ্টার মাথায় ফেসবুকে হত্যার দায় স্বীকার করে স্ট্যাটাস দেয় জঙ্গী সংগঠন আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২। ঘটনার পরের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এন্তাজুল হক বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে মতিহার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ হত্যা মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন মতিহার থানার তৎকালীন ওসি আলমগীর হোসেন। ঘটনার কয়েকদিন পর ২৩ নবেম্বর এই হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে যুবদল নেতা আব্দুস সামাদ পিন্টুসহ ৬ জনকে আটক করে র‌্যাব। সেইসঙ্গে এই হত্যাকা-ে জঙ্গী কানেকশন নয়, আটক যুবদল নেতা পিন্টুর স্ত্রী রেশমার দ্বন্দ্বের জের ধরে হত্যার কথা জানানো হয় এবং রাজশাহী জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জলকে মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে দাবি করা হয়। এরপর ২৫ নবেম্বর আটক ৬ জনকে আদালতে হাজির করা হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তদন্তে অগ্রগতি না হওয়ায় চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি মামলাটি মহানগর গোয়েন্দা শাখায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আসিকুর রহমান। গোয়েন্দা পুলিশ লিলন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যুবদল নেতা পিন্টু স্ত্রী নাসরিন আখতার রেশমাসহ ২০ জনকে আটক করে চলতি বছরের ৭ মার্চ রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর রেশমাকে রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ড শেষে ১৯ মার্চ রেশমা হত্যাকা-ের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়। তবে র‌্যাবের কাছে এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জলের নাম এলেও এক বছরেও তাকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো ওই যুবদল নেতাকে মামলা থেকে বাদ দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। দীর্ঘদিন মামলাটি তদন্ত করার পর পরিদর্শক আসিকুর রহমানকে আরএমপি থেকে বদলি করে দেয়া হয়। গত মাসে তদন্তের দায়িত্ব পান গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রেজাউস সাদিক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ওয়ারদাতুল আকমাম বলেন, হত্যার প্রায় একবছর হতে চললেও হত্যাকা-ের সঙ্গে ঠিক কারা জড়িত, তা এখনও পরিষ্কার করা হয়নি। তবে তদন্তের সঙ্গে যুক্ত পুলিশের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা তাকে জানিয়েছেন আগামী ১৫ নবেম্বরের আগেই এই হতাকা-ের সঙ্গে যুক্ত ১২ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করবেন। [জঞঋ নড়ড়শসধৎশ ংঃধৎঃ: }থএড়ইধপশ[জঞঋ নড়ড়শসধৎশ বহফ: }থএড়ইধপশ রেজাউস সাদিক বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা নাসরিন আখতার রেশমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের জের ধরেই তার স্বামী আব্দুস সামাদ পিন্টু ও সহযোগীরা অধ্যাপক লিলনকে হত্যা করে। এই খুনের ঘটনা ঘটাতে নাসরিন তার স্বামীকে প্ররোচিত করেন বলে তিনি আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন। তবে এই হত্যাকা-টি ঘটানো হয়েছে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জলের পরিকল্পনা মোতাবেক।
×