ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এ নিয়ে টানা পঞ্চম সিরিজ বাংলাদেশের, দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুইয়ে পরাজিত ৫৮ রানে

টাইগারদের সিরিজ জয়

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১০ নভেম্বর ২০১৫

টাইগারদের সিরিজ জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পরাজিত হওয়ার ভয়ের হীমস্রোতটা বইতে শুরু করেছিল। এলটন চিগুম্বুরা ও সিকান্দার রাজা দারুণ ব্যাটিং করে জিম্বাবুইয়েকে জয়ের পথে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। কিন্তু এ দু’জনকেই শিকার করে ব্রেক থ্রু দেন পেসার আলআমিন হোসেন। তারপর বাংলাদেশী বোলারদের সাঁড়াশি আক্রমণে কোণ্ঠাসা জিম্বাবুইয়ে। তাই সিরিজে সমতা আনা হলো না সফরকারীদের। সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৫৮ রানের আরেকটি সহজ জয় পেল বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ তুলেছিল ৯ উইকেটে ২৪১। জবাবে আলআমিন ও মুস্তাফিজুর রহমানের পেস আক্রমণের মুখে ৪৩.২ ওভারে ১৮৩ রানেই থমকে যায় জিম্বাবুইয়ের ইনিংস। ফলে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করল টাইগাররা। এ নিয়ে টানা ৫ সিরিজ জয় করে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে সফল বছর পেল বাংলাদেশ। এটি টাইগারদের সবমিলিয়ে ২০তম ওয়ানডে সিরিজ জয়। আগের মতোই টস জিতে বাংলাদেশকে প্রথম ব্যাট করতে পাঠায় জিম্বাবুইয়ে। এবার তামিম তার পুরনো সঙ্গী ইমরুল কায়েসকে পেয়েছেন। পুরনো এ জুটিটা ভালভাবেই শুরু করেছিল। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৩২ রান। তবে আবারও পুরনো বিপদগ্রস্ত চেহারায় ফেরে দল। বড় ইনিংস খেলার প্রত্যয় জানিয়েও পারেননি তামিম। ১৯ রান করেই বিদায় নিয়েছেন। এবারও ব্যর্থ হয়েছেন লিটন কুমার দাস ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মিডলঅর্ডারের নির্ভরতা মুশফিকুর রহীমের ব্যাটের দিকেই আবার তাকাতে হয়েছে টাইগারদের। কিন্তু এদিন খুব বেশি দূর যেতে পারলেন না। স্পিনার গ্রায়েম ক্রেমারের আগের বলটিতে সীমানা ছাড়া করেছিলেন। একই কায়দায় কাভার দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে পরের বলে ক্যাচ দেন লুক জঙ্গের কাছে। ২১ রানেই বিদায় মুশফিক, দলীয় ১২৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ। শুরু থেকেই জিম্বাবুইয়ের পেসাররা দারুণ বোলিং করে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের চাপে রেখেছেন। আর শেষদিকে তাদের স্পিনাররাও দারুণ বোলিং করে। অবশ্য চতুর্থ উইকেটে ইমরুলের সঙ্গে দারুণ ৪৮ রানের জুটিটি মজবুত একটা ভিত গড়ে দিচ্ছিল। ইমরুল শুরু থেকেই ছিলেন জিম্বাবুইয়ে বোলারদের ওপর চড়াও। দেখেশুনে তিনি চার-ছক্কা হাঁকিয়ে যাচ্ছিলেন। ক্যারিয়ারের ১১তম অর্ধশতক হাঁকিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু শন উইলিয়ামসকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে তালুবন্দী হন ক্রেমারের হাতে। ৮৯ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৭৬ রান করে ইতি ঘটে ইমরুলের ইনিংসটির। এরপর বাংলাদেশ একটি চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পেয়েছে মূলত দুই অলরাউন্ডার সাব্বির রহমান ও নাসির হোসেনের মাঝারি দুটি ইনিংসের সুবাদে। সাব্বির ৪০ বলে ৪ চারে ৩৩ ও নাসির ৫৩ বলে ৩ চারে ৪১ রান করে দলকে একটি সম্মানজনক সংগ্রহ পেতে ভূমিকা রেখেছেন। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ২৪১ রান পায় বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিল জিম্বাবুইয়ে। তবে ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই প্রথম আঘাত হানেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। তিনি ফিরিয়ে দেন রেগিস চাকাবভাকে (১)। বাংলাদেশী বোলাররা পেস এবং স্পিনের যৌথ আক্রমণে চেপে ধরে সফরকারীদের। দলীয় ৭৮ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পরে তারা। এই চাপটা সামাল দিয়ে উল্টো বাংলাদেশ শিবিরে পরাজয়ের শঙ্কা জেগে তোলেন অধিনায়ক চিগুম্বুরা ও রাজা। পঞ্চম উইকেটে ৭৩ রানের জুটি গড়েন দু’জন। এ সময় আগের ম্যাচের বিধ্বংসী বল করা সাকিবের অভাবটা পুরোটা সময়েই টের পেয়েছে টাইগাররা। ফিরতি স্পেলে বোলিং করতে এসেই রাজাকে ফিরিয়ে দিয়ে শঙ্কা দূর করেন আলআমিন। চিগুম্বুরাকেও সাজঘরে ফিরিয়ে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ এনে দেন ম্যাচে। চিগুম্বুরা ৪৭ ও রাজা ৩৩ রান করেছিলেন। এরপর আর মুস্তাফিজের পেস ও নাসিরের ঘূর্ণিতে দিশেহারা জিম্বাবুইয়ের ইনিংস মুখ থুবড়ে পড়ে ৬ ওভার ৪ বল আগেই। তারা অলআউট হয় ৪৩.২ ওভারে ১৮৩ রানে। পানিয়াঙ্গারার ক্যাচ ধরে অনন্য এক যোগ্যতা অর্জন হয় মাশরাফির। ওয়ানডেতে ১০০০ রান, ৫০ উইকেট আর ৫০ ক্যাচের অনন্য অর্জনে নিজের নাম লেখান মাশরাফি। প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এই অর্জন তার। এক ম্যাচ আগেই ৫৮ রানের জয় তুলে নিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে।
×