ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দেশ চলবে জনগণের ইচ্ছায় ॥ আশা ভোটারদের

ঐতিহাসিক নির্বাচনে ভোট দিয়ে খুশি মিয়ানমারবাসী

প্রকাশিত: ০৭:৩০, ১০ নভেম্বর ২০১৫

ঐতিহাসিক নির্বাচনে ভোট দিয়ে খুশি মিয়ানমারবাসী

রবিবার অনুষ্ঠিত মিয়ানমারের নির্বাচনে দেশজুড়ে ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের লম্বা লাইন দেখা গেছে। পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে দেশটির জনসাধারণ স্বতঃস্ফূর্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেন। ভোটারদের অনেকেই এটিকে তাদের জীবনের প্রকৃত নির্বাচন বলে অভিহিত করেছেন। এর আগে দেশটিতে পাঁচ দশক ধরে সামরিক শাসন চলে এবং কয়েকবার কারচুপিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় বা নির্বাচন বাতিল করা হয়। ৬৩ বছর বয়সী ইউ সান মাও রবিবার ভোট দেয়ার পর বলেছেন, আমরা দীর্ঘ সময় সরকারের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এটি আমাদের স্বাধীনতা পাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ। তিনি জানান, তার পরিবার ও বন্ধুরাও এই নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। মিয়ানমারে গত ২৫ বছরের মধ্যে এই নির্বাচনকে সবচেয়ে অবাধ বলে গণ্য করা হচ্ছে এবং দেশটির পাঁচ বছর ধরে চলা গণতন্ত্রে উত্তরণ প্রক্রিয়া আরেকটি মাইলফলকে পৌঁছেছে। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফলাফল কতদিনে মধ্যে ঘোষণা করা হবে তা স্পষ্ট না হলেও, প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সুচির দল ইয়াঙ্গুন, মান্দালয় ও রাজধানী নেপিডোতে এগিয়ে আছে। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের স্পীকার থুরা শোয়ে মান সোমবার সকালে সুচির দলের এক প্রার্থীর কাছে পরাজয় স্বীকার করে তার ফেসবুক পেজে একটি বার্তা পোস্ট করেছেন। গ্রামপ্রধান দেশটির নির্বাচনের ফলাফল গ্রামীণ এলাকায় জয়-পরাজয়ের ওপর নির্ভর করবে। এসব এলাকার ফলাফল আসতে আরও বিলম্ব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আরও অনেক অনিশ্চিয়তা রয়েছে এবং তা হলো ক্ষমতার লাগাম ধরে রাখা সামরিক বাহিনী কিভাবে এই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেবে। এদিকে অনেক দিক থেকেই এই নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ বলা যায় না। কারণ দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের লাখ লাখ লোকের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে তাদের ভোটাধিকার বঞ্চিত করা হয়েছে। তারপরও যেসব মিয়ানমারবাসী রবিবার ভোট দিয়েছেন, তাদের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করছে যে, বহু বছরের সামরিক শাসনের পর এবার হয়ত জনগণের ইচ্ছায় দেশটি পরিচালিত হবে। দেশটির নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটারদের উপস্থিতি ছিল প্রায় ৮০ শতাংশ। নির্বাচনে ভোটার ছিল তিন কোটি ২০ লাখের বেশি। অন্তত ৯০টি দলের কমপক্ষে ছয় হাজার প্রার্থী ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ইয়াঙ্গুনের এক সুপারি বিক্রেতা ইউ ওকার ও বলেছেন, আমি প্রথমবারের মতো ভোট দিতে পেরে খুবই খুশি। এরপর তিনি গান গেয়ে উঠেন, মাম্মা জয়ী হয়েছেন।
×