ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গান-বাজনা ফ্যাশন হয়ে গেছে ॥ তিমির নন্দী

প্রকাশিত: ০৭:৪২, ১০ নভেম্বর ২০১৫

গান-বাজনা ফ্যাশন হয়ে গেছে ॥ তিমির নন্দী

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিক শিল্পী তিমির নন্দী। সঙ্গীত সাধনাই যার জীবনের ব্রত। নিরলস চেষ্টা ও অদম্য ইচ্ছাকে আঁকড়ে ধরে যিনি এখনও সঙ্গীত সাধনা করে চলেছেন। সঙ্গীতের অমিয় ধারায় নিজেকে শিক্ত করার পাশাপাশি অনেক শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তাঁর সঙ্গীতলব্ধ জ্ঞান। আগামী ১৩ নবেম্বর রাত ১২টায় একুশে টেলিভিশনের ‘ফোন লাইভ স্টুডিও কনসার্ট’ অনুষ্ঠানে সরাসরি গান শোনাবেন গুণী এই শিল্পী। কথা হয় তাঁর সঙ্গে। ‘ফোন লাইভ স্টুডিও কনসার্ট’ অনুষ্ঠানে কোন ধরনের গান করবেন? তিমির নন্দী : আমার বিশেষ কোন একক গানের অনুষ্ঠান সব সময়ই একটা বিষয়কে কেন্দ্র করেই করে থাকি। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। এবার আমার একক এ অনুষ্ঠানে উপমহাদেশের কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী শ্যামল মিত্রের গানই পরিবেশন করব। শ্যামল মিত্রের গান কেন বেছে নিলেন? তিমির নন্দী : কাকতালীয় হলেও সত্যি যে, উনার মৃত্যুবার্ষিকী আগামী ১৫ নবেম্বর, এবং আমার জন্মদিনও সেদিন। ছোটবেলা থেকে আমি তাঁর গানের দারুণ ভক্ত। তাঁর গান গেয়ে আমি অনেক পুরস্কারও পেেেয়ছি সে সময়। শ্যামল মিত্রের সঙ্গে আপনার কোন সাক্ষাত হয়েছে কখনও? তিমির নন্দী : ১৯৭১ সালে যখন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে ছিলাম, সে সময় দুইবার দেখা হয়েছে। এবং সামনাসামনি বসে তাঁর গান শোনারও সৌভাগ্য হয়েছে। তখন আমার বয়স কম থাকায়, লজ্জা ও ভয়ের কারণে কথা বলতে পারিনি। কিন্তু তাঁকে অন্তরে ধারণ করেছি ছোটবেলা থেকে। তাঁর গানের কোন বিষয়গুলো আপনার মনে দাগ কাটে? তিমির নন্দী : আকাশ বাণী কলকাতায় ‘গীতিকা’ নামে যখন একটি অনুষ্ঠান হতো, তখন সেখানে অনেক সময় তাঁর গান বাজত। গানগুলো শুনে সে বয়সেই আমার চোখে জল এসে যেত। অপেক্ষায় থাকতাম আবার কবে বাজবে তাঁর রেকর্ড। এছাড়া রেডিওতে অনুরোধের আসরেও তাঁর গান শুনতাম। এভাবেই তাঁর বহু গান শিখে ফেলতাম। তাঁর নোজাল কণ্ঠস্বর ও গলার রেঞ্জ, সঙ্গীতের ভাষায় যাকে বলে বেরিটন ছিল। এছাড়া গানে মিড়ের কাজ দারুণভাবে আমাকে টানতো। সলিল চৌধুরীর পরে তিনিই ছিলেন জনপ্রিয় সুরকার। তাঁর গানের সুক্ষ্ম কারুকাজ ও মেলোডি ছিল অতুলনীয়। অনুষ্ঠানে শ্যামল মিত্রের কোন গানগুলো প্রাধান্য পাবে? তিমির নন্দী : মূলত তাঁর জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যেই থাকার চেষ্টা করব। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা থাকে, কি নামে ডেকে বলব তোমাকে, চেনা চেনা লাগে তবু অচেনা, হংস পাখা দিয়ে, দূর নয় বেশি দূর ওই, এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়েসহ বেশ কিছু গান। আমাদের দেশে আধুনিক গানের বর্তমান অবস্থা কেমন... তিমির নন্দী : আধুনিক বাংলা গানের স্বর্ণযুগকে আমরা ফেলে এসেছি। এ গান এখন মূল ধারা থেকে সরে যাচ্ছে। এখনকার বেশিরভাগ শিল্পীরা গানের ফিউশন এবং কিভাবে টাকা আসবে সেটা নিয়েই বেশি ব্যস্ত। এখন গান-বাজনা ফ্যাশনের মতো হয়ে যাচ্ছে। শিল্পীরা নেম এ্যান্ড ফেম নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গানে দেশীয় ধারাকে অক্ষুণœ রেখে বিদেশী ভাবধারা গ্রহণ করা উচিত। তা-না হলে আমাদের সৃষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। -গৌতম পাণ্ডে
×