ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মুনতাসীর মামুন

দীপনরা কেন খুন হয় কেন খুন হবে

প্রকাশিত: ০৪:২০, ১১ নভেম্বর ২০১৫

দীপনরা কেন খুন হয় কেন খুন হবে

সম্প্রতি চাপাতির আঘাতে নিহত ফয়সাল আরেফিন দীপন নবী (দ.)-এর জীবন ও ইসলামের ওপর বেশ কয়েকটি ভাল বই প্রকাশ করেছিল। ঐ বইগুলো গত শতকে লিখেছিলেন কাজী আবদুল ওদুদ, ইয়াকুব আলী প্রমুখ মনীষী। ব্লগারও দীপন ছিল না। তার কুলখানিতে তার পিতা আমাদের অগ্রজ সহকর্মী আবুল কাশেম ফজলুল হক জানিয়েছেন, বরং ব্লগে ইসলামকে কটাক্ষ করে লেখা সে পছন্দ করত না। ছিল সে যুক্তিনির্ভর, বাঙালী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ঘোর বিরোধী। দীপনকে আমি চিনি যখন তার বয়স দুই বা এক থেকে। তার মতো ভদ্র, বিনীত ছেলে আমি খুব কমই দেখেছি। তাকে কিনা হত্যা করা হলো ইসলামের শত্রু হিসেবে। যারা এই হত্যাকা- ঘটিয়েছে তারা নবীজীর জীবন প্রকাশ করা দূরে থাকুক, তার পুরো জীবন, কর্ম ও বাণী সম্পর্কে জানে কীনা সন্দেহ। ইসলামের মহিমা প্রকাশ করে গ্রন্থ তো প্রকাশই করেনি। দীপন কিংবা টুটুল তুলে দিতে চেয়েছে বই যা শিক্ষা ও সংস্কৃতি এবং সভ্যতার প্রতীক। খুনীরা ব্যবহার করেছে চাপাতি যা কুশিক্ষা, বর্বরতা ও অমানবিকতার প্রতীক। অথচ, তারা নিজেদের ঘোষণা করে ইসলামের ঠিকাদার হিসেবে, এরা নাকি ইসলামের রক্ষক! এরা রক্ষক হলে ইসলাম ধ্বংসকারী কারা? এরাই কি সেসব মানুষ যারা আবির্ভূত হয়েছে ইসলাম ধ্বংসকারী হিসেবে যার কথা লেখা আছে ধর্মগ্রন্থে। চাপাতি ইসলামের ধারক বাহকরা রাজীব থেকে দীপনÑ এদের হত্যার ফতোয়া দিয়েছিল। আজ দৃঢ় ও উচ্চকণ্ঠে বলার সময় এসেছে, বাংলাদেশে যদি ইসলামবিরোধী কাজকর্ম কেউ করে থাকে এবং করছে তাহলো এই চাপাতি ইসলামের ধারকরা যারা মনে করে চাপাতির কোপে ইসলাম জিন্দা হোতা হ্যায় হার কারবালাকা বাদ। এখন চলছে শোকাবহ মহররম মাস। এখন ধর্ম চলে গেছে অধার্মিক, মতলববাজদের হাতে। পৃথিবীর সাংস্কৃতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, যারাই যুক্তির সমর্থক, মুক্তচিন্তার ধারক বা সমর্থক, ধর্মীয় উগ্রবাদের বিপরীতে যুক্তির পথ বিশ্লেষণ করেছেন, উগ্রবাদের বিপরীতে মানবতার পথে জয়গান গেয়েছেন, প্রাথমিকভাবে তাদের দেশান্তরি হতে হয়েছে অথবা নিগৃহীত হতে হয়েছে। এদের অনেকে এখন স্মরিত, বেশিরভাগই অজানা যারা পদাতিক হিসেবে কাজ করেছেন। সেই প্রাচীন আমলে সক্রেটিস, মধযুগে গ্যালিলিও আর কিছুকাল আগে আমাদের প্রিয় কবি নজরুল ইসলাম। সবার ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে। এটি নতুন কিছু নয়। স্যাভানোরোলা, ইমাম গাযযালী, অনেক অনেক পরে হিটলার বা আরও অনেকে সাময়িকভাবে বিজয়ী হয়েছেন কিন্তু অন্তিমে যুক্তিই টিকে গেছে। কারণ যুক্তি না টিকলে সভ্যতা-সংস্কৃতি টিকে না আর তা না টিকলে সমাজ-রাষ্ট্র থাকে না। ইসলাম সব সময় আখ্যায়িত হয়েছে শান্তির ও মানবতার ধর্ম হিসেবে। সব ধর্মই মূলত মানবতা ও শান্তির কথা বলে কিন্তু সর্ব ধর্মই সৃষ্টি করেছে অশান্তির। আইয়ামে জাহিলিয়াত থেকে রসুলুল্লাহ (দ.) মুক্তি দিলেন মানুষকে। অধর্মের বিরুদ্ধে যুক্তি। মানবিকতা প্রচার করতে গিয়ে তাকে নিগৃহীত হতে হয়েছে, জন্মভূমি ত্যাগ করতে হয়েছে। কিন্তু শান্তি তিনি এনেছিলেন। তার মৃত্যুর পর চার খলিফার মধ্যে [নবী (দ.) খিলাফত সৃষ্টি করেননি] তিনজনই নিহত হয়েছেন। আরও পরে ইসলামে যারা ইজতেহাদের কথা বলেছিলেন তাদের নিপীড়িত হতে হয়েছে। আব্বাসীয় যুগে ইজতেহাদ প্রাধান্য বিস্তার করেছিল দেখে সেটিই মুসলমানদের একমাত্র স্বর্ণযুগ। ইমাম গাযযালীর উত্থানের পর সেই যে ইজতেহাদ অন্তর্হিত হলো তা আর ফিরে আসেনি স্ব-স্বভাবে। সুফিবাদ খানিকটা ইজতেহাদের পথ নিয়েছিল, আজ তাও ক্ষীয়মাণ। যিশুখ্রিস্টের ও তার অনুসারীদের দেখুন। একই ঘটনা ঘটেছে। তবে, এখন তা খানিকটা শান্ত হয়েছে। মানবতা বরং তারাই বেশি প্রদর্শন করেছে এবং করছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী মুসলমানরা যখন ইসলামের নামে আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল কোন মুসলমান [রাষ্ট্র] আমাদের সমর্থন করেনি কিন্তু খ্রীস্টানরা [রাষ্ট্র না করলেও] করেছিল। এখনও দেখি সিরিয়ার মুসলমানদের কোন মুসলমান অধ্যুষিত রাষ্ট্র আশ্রয় বা সাহায্য দেয়নি। দিয়েছে খ্রীস্টানরা। ১৯৭১ সালে ইসলামের নামে হত্যা করা হয়েছে এই ভূখ-ের ৩০ লাখ মানুষকে যার সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান। এই উগ্রতাই অন্য ফর্মে প্রচার করেছেন লাদেন ও তার অনুসারীরা। এই যদি হয় ধর্ম তাহলে ধর্মের মূল বাণীই নস্যাৎ হয়ে যায়। তা’হলে তো ধর্ম অধর্ম হয়ে যায়। বাংলাদেশে এখন যা চলছে ধর্মের নামে তা যদি সফল হয় তাহলে ধর্ম তার অর্থ হারাবে, ধর্ম হয়ে যাবে অধর্ম। ধর্ম নিয়ে পৃথিবীজুড়ে এখন উন্মত্ততা চলছে, যেন ক্রসেডের যুগ ফিরে এসেছে। এমনকী পরম অহিংস বলে পরিচিত বৌদ্ধরা শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারে ধর্মের নামে বদমাইশি করছে যা রাজনীতিকে প্রভাবিত করেছে। অং সান সুচির মতো মহিলাও এখন সাম্প্রদায়িকতা প্রচার করেন, তার দল থেকে মুসলমান প্রার্থীদের বাদ দিয়েছেন। ভোটের রাজনীতি যেন ক্রমেই গণতান্ত্রিক রাজনীতির ভিত্তি থেকে নষ্ট রাজনীতির ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের প্রগতিশীল রাজনীতিবিদরাও কীভাবে এই প্রপঞ্চ দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন তা পরে জানাচ্ছি। গত দু’দশকে ইসলামের নামে ‘মুসলমান’ উগ্রবাদীরা যা করছে তার উৎস সৌদি আরব, পাকিস্তান ও আমেরিকা। সৌদি ‘বাদশাহ’রা রাজতন্ত্র রক্ষার জন্য ওয়াহাবিবাদকে ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছেন। ওয়াহাবিরা রাজতন্ত্রের রক্ষক। ইসলামের মূল বা আদি রক্ষক আর এখনকার রক্ষকদের জীবনচর্যা পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় কেন ধর্ম বিপথে। এখন ধর্মের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে ক্ষমতা যা কর্তৃত্ববাদ কায়েম করবে এবং অর্থ। পৃথিবীর সমস্ত অশান্তির মূল আমেরিকার পররাষ্ট্র নীতি। সোভিয়েতের পতনের পর তা আরও জোরদার হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের রাজনীতি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে এই ত্রিশক্তি প্রকাশ্য ও গোপন রাজনৈতিক ফ্রন্টের পোষকতা করছে। অপরাজনীতির প্রকাশ্য ফ্রন্ট বিএনপি-জামায়াত। আর গোপন উগ্রবাদী সংস্থাগুলো যুক্ত জামায়াতের সঙ্গে। বাংলাদেশের রাজনীতি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে ঐ ত্রিশক্তি প্রকাশ্যে বা গোপনে রাজনৈতিক ফ্রন্ট বা গোপন ফ্রন্টগুলোকে পোষকতা করছে। প্রকাশ্য ফ্রন্ট বিএনপি-জামায়াত রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবহারে উৎসাহী ও পক্ষপাতী। আর গোপন সংস্থাগুলোর বেশিরভাগ জড়িত জামায়াতের সঙ্গে। তাদের অর্থ সমর্থন আসছে তিন দেশ থেকে। সম্প্রতি এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিবৃতি এর উদাহরণ। এ্যামনেস্টি যে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের পক্ষে কোন বিবৃতি দেয়নি, তারা মানবতাবিরোধী বিচারে অভিযুক্তদের পক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে বলেছে, ১৯৭১ সালে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার হতে হবে। এ ধরনের বিবৃতি আগে দিয়েছে পাকিস্তান ও জামায়াত। এ্যামনেস্টি বলেনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসীদের বিরুদ্ধে যেসব পার্টিজান লড়েছিল তাদের বিচার হবে কিনা? ২০০৬-৯ সালে ঐ ত্রিশক্তি কোন্ দলগুলোকে সমর্থন করেছে ভেবে দেখার চেষ্টা করুন, দেখবেন অংক মিলে গেছে। এই দলগুলো রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি নষ্ট করে তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে দিয়েছে। এ পটভূমি দিলাম বর্তমান পরিস্থিতির তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের জন্য। সমাজে যখন নিশ্চলতা আসে, মানস জগতে যখন স্থিতাবস্থা বিরাজ করে তখন যুক্তি বা মুক্ত মন হামলার শিকার হয়। খুব উন্নত গণতান্ত্রিক দেশ ছাড়া সব দেশের ক্ষেত্রেই এই যুক্তি প্রযোজ্য। চীন কি বাংলাদেশের থেকে সমৃদ্ধ নয়? সেখানে মুক্ত চিন্তা বা যুক্তি কীভাবে আক্রান্ত হচ্ছে তার খবর তো প্রতিনিয়ত প্রকাশিত হচ্ছে। অর্থাৎ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি একটি দেশকে পরিপূর্ণ বা সমৃদ্ধ করে না। শিক্ষা সংস্কৃতি সমৃদ্ধ হলে দেশটি পরিপূর্ণতা পায়। তাই বলে আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিরোধী নই। তিনটি ক্ষেত্রেই সমান্তরালভাবে উন্নতি হতে হবে। তা না হলে সমাজের নিশ্চলতা দূর হয় না। শুধু অর্থনীতি গুরুত্ব পেলে দেখা যায় শাসক ও এলিটরা [যার মধ্যে বিরোধীরা অন্তর্ভুক্ত] সমাজে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে চায়। এ ক্ষেত্রে শাসক ও আপাতদৃষ্টিতে বিরোধীদের মধ্যে এক ধরনের অলিখিত সমঝোতা হয়। আওয়ামী লীগ ও তার মিত্রদের আমরা মুক্তিযুদ্ধের বা প্রগতির শক্তি বলে মনে করি। কারণ মুক্তিযুদ্ধের মূল হচ্ছে সামাজিক সাম্য ও অসাম্প্রদায়িকতা। আমাদের ইতিহাসের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই রাষ্ট্রের নীতি হিসেবে ঘোষিত হয়েছিল এই দু’টি উপাদান, যা আমাদের কাছে পরিচিত ধর্ম নিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র হিসেবে। ১৯৭২ সালের সংবিধানে এই দু’টি নীতি যুক্ত হওয়াতে যুক্তরাষ্ট্র ও তথাকথিত ইসলামী দেশগুলো দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশের শত্রুতে পরিণত হয়। বঙ্গবন্ধু ও চার নেতাকে হত্যার মূল কারণ এই দু’টি নীতি। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল দেশীয় ষড়যন্ত্র। পরবর্তীকালে চীন ও ইউরোপের বিশেষ করে স্ক্যান্ডেনেভিয়ার দেশগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি বদলালেও উল্লেখিত দেশগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি একই রকম রয়ে গেছে। ১৯৭৫ সালে এই অপশক্তি ও তাদের বাংলাদেশী এজেন্টরা ক্ষমতায় আসে। আমেরিকা ছাড়া ঐ সব ‘ইসলামী’ দেশের শাসকরা ছিলেন হয় রাজরাজড়া বা সামরিক শক্তির প্রতিভূ। ধর্ম ছিল তাদের ক্ষমতার নিয়ামক। বাংলাদেশে সে কারণে দেখি ১৯৭৫ সালে ক্ষমতায় এসেছে সামরিক বাহিনী। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ধর্মের দোহাই দিয়ে তারাই দেশ শাসন করেছে। বাংলাদেশ নষ্ট হওয়ার পথ সেখান থেকে শুরু। যারা ঐ সময় দেশ শাসন করেছেন তারা ছিলেন পাকিস্তানী মানসিকতার বরপুত্র। সে সময়ই আমরা দেখি পরাজিত শক্তির দর্শন সমাজ-রাষ্ট্রে আধিপত্য বিস্তার করছে। তারপর খালেদা জিয়ার সময় পর্যন্ত যদি ধরি তা হলে দেখব ৪১ বছরের মধ্যে প্রায় ৩০ বছর তারাই শাসন করেছে। এই ৩০ বছরে তারা দু’টি কৌশল গ্রহণ করেছিল। এক. প্রতিক্রিয়ার অর্থনৈতিক ভিত্তি সুদৃঢ় করা ও দুই. মানস জগতে আধিপত্য বিস্তার করা। এ কারণে সংবিধান বদল থেকে সহকর্মী ও সাধারণ মানুষ হত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগ কোন কিছুই তারা বাদ রাখেনি। এদের বড় বৈশিষ্ট্য এরা রাজাকার আলবদরদের শুধু পুনর্বাসন নয়, তাদের দর্শনও গ্রহণ করেছিল। এ অপরাধ ক্ষমাহীন। ৩০টি বছর তারা ধর্ম ব্যবহার ও মওদুদীবাদ [যা কর্তৃত্বমূলক এবং যুক্তিহীন] প্রচারে মাদ্রাসার শক্তি বৃদ্ধি করেছে। একমুখী শিক্ষা নাকচ করে হাইব্রিড শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলন করেছে। এভাবে শিক্ষা ও অর্থ দিয়ে হাইব্রিড একটি ক্লাস সৃষ্টি করেছে যারা নিজ দেশে পরবাসী অথবা হয়ে গেছে পরবাসী। অর্থনৈতিক শক্তি ও অনৈতিক কৌশল তাদের শক্তি যুগিয়েছে মানস জগতে আধিপত্য বিস্তারে। অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, অনৈতিক কৌশল কী? এগুলো হলো, যেমন, জিয়াকে স্বাধীনতার ‘ঘোষক’ বলা, ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন ‘সৃষ্টি’ করা ইত্যাদি। এই সময় বিপুলসংখ্যক রক্ষণশীল গ্রামীণ ও মফস্বল সমাজের মানুষ মধ্যপ্রাচ্যে যায় এবং ওয়াহাবি ইসলাম দ্বারা প্রভাবিত হয়। ইরানের ইসলামী বিপ্লবও প্রভাব ফেলেছিল। তারপর আফগানিস্তান ও অন্যান্য ঘটনা। মধ্যপ্রাচ্যের জীবন চর্যা বিশেষ করে নারীর অবস্থান তাদের আকৃষ্ট করে। তাদের ধারণা, মক্কা যেহেতু সৌদি আরবে সেহেতু তারা যা করে তা অনুকরণীয়। রক্ষণশীল ইসলামের বিভিন্ন ফর্ম তাদের প্রভাবিত করে যা ছাপ ফেলে তাদের জীবন চর্যায়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় মিডিয়ার ধর্ম প্রচার, এখানে স্থান করে নেয় প্রধানত রাজাকার আলবদররা বা তাদের দর্শনে বিশ্বাসীরা। যেমন, গ্রামে বা মফস্বলে বোরকা প্রায় বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়ায়, বিনা কারণে কিশোরী-তরুণীরা হিজাব পরা শুরু করে। এলিট মহিলাদের মধ্যে ইরানের চাদর জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। জামায়াত অনুসারীরা মসজিদগুলোর দখল নিতে থাকে। মহিলা মাদ্রাসা, জামায়াতী ক্যাডেট মাদ্রাসা, কে জি স্কুল প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে। ১৯৭০-৭৫ পর্যন্ত এগুলো ছিল অভাবিত। মাদ্রাসা মসজিদে তালেবানী আদর্শ প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। চলবে...
×