ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

টঙ্গীতে যুবলীগ-শ্রমিক সংর্ঘষ ॥ মহাসড়ক অবরোধ

প্রকাশিত: ২০:২৫, ১১ নভেম্বর ২০১৫

টঙ্গীতে যুবলীগ-শ্রমিক সংর্ঘষ ॥ মহাসড়ক অবরোধ

নিজস্ব সংবাদদাতা, টঙ্গী,॥ টঙ্গীতে ট্রাক থেকে চাঁদা আদায় বন্ধ এবং ২জন ট্রাক শ্রমিক নেতাকে অপহরণ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবলীগ এবং ট্রাক শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অপহৃত শ্রমিক নেতার মুক্তির দাবীতে ট্রাক শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এক ঘন্টা অবরোধ করে রাখে। এ সময় চরম দুর্ভোগে পড়েন জেএসসি পরীক্ষার্থী,অফিসগামী যাত্রী ও সাধারণ মানুষ। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় টঙ্গীর -কামাড়পাড়া এজতেমা রোডে এ ঘটনা ঘটে। জেলার উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে অপহৃত দুই পরিবহণ শ্রমিক নেতাকে উদ্ধার করে ঘটনাস্থলে হাজির করলে ট্রাক পরিবহণ শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়। অপহৃত শ্রমিক নেতারা হচ্ছেন-জালাল উদ্দিন ও সুলতান গাজী। এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় যুবলীগের নেতৃবৃন্দ জানান, তারা কোন চাঁদাবাজীর সঙ্গে যুক্ত নন। যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ এ কর্মকান্ড চালাচ্ছে। গাজীপুর জেলা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা জানান, টঙ্গীর ওই রোডে প্রতিদিন প্রতি ট্রাক থেকে ৯০ টাকা, এবং প্রতি বাস ও কনটেইনার থেকে ২০০ টাকা করে যুবলীগের নামে চাঁদা আদায় করা হয়। প্রতি ট্রাক থেকে কথিত পাহারাদারের বিল বাবদ ৪০ টাকা, পার্কিং বিল বাবদ ৫০ টাকা অর্থাৎ মোট ৯০ টাকা এবং প্রতি বাস ও কন্টেইনার পার্কিং ও পাহাড়া বিল বাবদ ২০০ টাকা ভূয়া রশিদের মাধ্যমে আদায় করা হয়। কোন সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের নাম ছাড়া ছাপানো ওই রশিদের মাধ্যমে এভাবে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার চাঁদা আদায় করছেন নামধারী যুবলীগ নেতারা। চাঁদা না দিলে গাড়ির চালক ও শ্রমিকদের মারধর করা হয়। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে প্রায় প্রতিদিনই যুবলীগ নেতারা ট্রাক শ্রমিকদের মারধর করে। এমনকি ব্লেড বা চাকু দিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের শরীরে ক্ষতবিক্ষত করে। এ সব ঘটনায় বুধবার সকাল ৭টায় ট্রাক শ্রমিকদের মারধরের সংবাদ পেয়ে গাজীপুর জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি জালাল উদ্দিন ও কার্যকরি সদস্য সুলতান গাজী ঘটনাস্থলে গেলে যুবলীগ নেতারা ফাঁকা গুলি ও ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে এবং জালাল উদ্দিন ও সুলতান গাজীকে অপহরণ করে । এ ঘটনার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে ট্রাক শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিক্ষুব্ধ ট্রাক শ্রমিকরা টঙ্গী ট্রাক টার্মিনাল থেকে লাঠি সোটা নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে যুবলীগ নেতাদের ধাওয়া দেয়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এব্যাপারে গাজীপুর জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রশিদ জানান, দিনের বেলায় রাজধানীতে ট্রাক প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত পণ্যবাহী ট্রাক টঙ্গীতে এসে অবস্থান নেয়। দিনের বেলায় অপেক্ষার প্রহর শেষে রাতে এসব ট্রাক রাজধানীতে প্রবেশ করে। কামার পাড়া-এজতেমা বাইপাস রোডটি যানজটমুক্ত ও অপেক্ষাকৃত নিরাপদ হওয়ায় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত ট্রাক চালকরা ওই রোডে অবস্থান নিয়ে থাকে এবং এখানেই চাঁদাবাজীর ঘটনা ঘটে।
×