ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল ধ্রুপদী লড়াইয়ে মুখোমুখি

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১২ নভেম্বর ২০১৫

আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল ধ্রুপদী লড়াইয়ে মুখোমুখি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিনোদনের সেরা মাধ্যম খেলা। আর সেটা যদি হয় ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ফুটবল মহারণ, তাহলে তো কথাই নেই। ফুটবলবিশ্ব এখন সেই আকর্ষণীয় লড়াই দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল ৬টায় আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস ইয়ার্সে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ বাছাই ফুটবলে দক্ষিণ আমেরিকার অঞ্চলের ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। আকাক্সিক্ষত ধ্রুপদী ম্যাচটিতে সবাই মুখিয়ে ছিলেন দুই ক্লাব সতীর্থ লিওনেল মেসি ও নেইমারের দ্বৈরথ দেখার জন্য। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। কেননা নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক ফিরলেও ইনজুরির কারণে বাইরে থাকছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। শুধু তাই নয়, এই ম্যাচে কার্লোস দুঙ্গা পূর্ণশক্তির দল পেলেও জেরার্ডো মার্টিনো পাচ্ছেন ভঙ্গুর দল। ইনজুরির কারণে শুধু অধিনায়ক মেসিই নয়, খেলতে পারবেন না সার্জিও এ্যাগুয়েরো, পাবলো জাবালেটা ও ইজিকুয়েল গারাইয়ে। ইনজুরির এই মিছিলে সর্বশেষ যুক্ত হয়েছেন আরেক তারকা ফরোয়ার্ড কার্লোস তেভেজ। এ কারণে ব্রাজিল ও কলম্বিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে দলের বাইরে থাকবেন বোকা জুনিয়র্স তারকা। মেসি ও এ্যাগুয়েরোর অনুপস্থিতিতে আক্রমণভাগে আর্জেন্টিনার মূল ভরসা ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা তেভেজ। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী হাঁটুর ইনজুরি কাটিয়ে উঠতে না পারায় তাকেও দর্শক থাকতে হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ দুই ম্যাচে। আর্জেন্টাইন ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাঁ হাঁটুর ইনজুরি থেকে সেরে উঠতে পারেননি তেভেজ। এখনও তার ফিটনেসে ঘাটতি আছে। এ কারণে পরবর্তী দুটি বাছাইপর্বের ম্যাচে তিনি খেলতে পারবেন না। ইতোমধ্যেই পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দল ছেড়ে ক্লাব বোকা জুনিয়র্সে ফিরে গেছেন তেভেজ। মেসি-এ্যাগুয়েরো-তেভেজ ত্রয়ীর না থাকাটা নিঃসন্দেহে আর্জেন্টাইন কোচ জেরার্ডো মার্টিনোর জন্য দুশ্চিন্তার কারণ। তবে এসব নিয়ে তিনি এখন ভাবছেন না। পিএসজি উইঙ্গার এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া ও নেপোলি স্ট্রাইকার গঞ্জালো হিগুয়াইনদের দিয়ে ঘাটতি পুষাতে চান তিনি। বিশ্বকাপ ও কোপা আমেরিকার ফাইনালে দলকে হতাশ করা হিগুয়াইন অবশ্য চলমান মৌসুমে বেশ ভাল ফর্মে আছেন। ইতালিয়ান ক্লাবটির হয়ে এরই মধ্যে ১৫ ম্যাচে করেছেন ১১ গোল। এই দুটি ম্যাচ তাই হিগুয়াইনের জন্যও নিজেকে নতুন করে প্রমাণ করার মিশন। তাছাড়া ইজিকুয়েল লাভেজ্জি কিংবা তরুণ পাউলো ডাইবালারাও ভাল কিছু করার জন্য মুখিয়ে আছেন। হাইভোল্টেজ ম্যাচটিকে সামনে রেখে ব্রাজিলের অভিজ্ঞ প্লেমেকার কাকা ২০০৯ সালের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আর্জেন্টিনাকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে দেয়ার স্মৃতি ফিরিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছেন। চলতি বছরের শুরুতে কোচ কার্লোস দুঙ্গার দলে সুযোগ পাওয়া কাকা বলেন, এখন পর্যন্ত আর্জেন্টিনা কোন ম্যাচে জিততে পারেনি। তাই তারা ব্রাজিলকে হারানোর জন্য বিশেষ কৌশল নিয়েই মাঠে নামবে। ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে আমরা দারুভাবে জয় পেয়েছি। আমাদের এখন সেই ধারা বজায় রাখতে হবে। তবে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে কাজটা যে মোটেই সহজ নয় তা সহজেই অনুমেয়। তাদের বিপক্ষে খেলাটা সবসময়ই বিশেষ এক অনুভূতির জন্ম দেয়। কিন্তু আমাদের জেতার সব ক্ষমতা আছে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয় পেতে আত্মবিশ্বাসী ব্রাজিল কোচ কার্লোস দুঙ্গাও। তিনি বলেন, আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হওয়া মানেই যুদ্ধের আবহ। এ লড়াইয়ে খুঁটিনাটি বিষয়ও দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি যে প্রতি ট্যাকল আর পাসও ফলাফল নির্ধারক হয়ে উঠতে পারে। সাফল্যের জন্য খেলায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। আমাদের লক্ষ্য স্থির রাখতে হবে এবং ফল পেতে আমাদের সেরাটা দিতে হবে। বাছাইপর্বের প্রথম দুই ম্যাচে অধিনায়ক নেইমারকে ছাড়া চিলির কাছে প্রথম ম্যাচ হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ভেনিজুয়েলাকে ৩-১ গোলে হারায় রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। তবে আর্জেন্টিনা এখনও জয়ের দেখা পায়নি। প্রথম ম্যাচে ইকুয়েডরের কাছে ২-০ গোলে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে প্যারাগুয়ের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে আর্জেন্টিনা। এ কারণে ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচটি আকাশী-সাদা জার্সিধারীদের জন্য অনেকটাই বাঁচামরার।
×