ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিকলীতে কবিরাজের তেলে কিশোরের মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৪:২২, ১৩ নভেম্বর ২০১৫

নিকলীতে কবিরাজের তেলে কিশোরের মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ১২ নবেম্বর ॥ নিকলীতে কবিরাজের ভুল চিকিৎসায় ইমন মিয়া (১২) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত তুরুক কবিরাজ (৪৫) পলাতক রয়েছে। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের বাবা বাদী হয়ে অভিযুক্ত কবিরাজের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নিকলী সদরের খালিশারহাটি গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে ইমন মিয়া তিন দিন আগে বাড়ির পাশে নদীতে মাছ ধরার সময় টেংরা মাছ কাটা ফুটালে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু ইমনের বাবা তাকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি না করে বাড়িতে নিয়ে যায়। বুধবার সন্ধ্যায় ইমনের অবস্থার অবনতি ঘটে। নিহতের বাবা হেলাল উদ্দিন জানান, ছেলের অসুস্থতার খবর পেয়ে রাতে উপজেলার ষাটধার গ্রামের মৃত শুক্কুর আলীর ছেলে হোসেন আলী ওরফে তুরুক কবিরাজ বাড়িতে আসেন। এ সময় কবিরাজ ইমনকে দেখে উপরি (জিন) ধরেছে মন্তব্য করে তাৎক্ষণিকভাবে সুস্থ করে তুলতে পারবেন বলে তাকে জানায়। পরে তুরুক কবিরাজ লম্বা কচুর ডগায় সরিষার তেল মেখে জোরপূর্বক ইমনের দুই নাকে প্রবেশ করালে ঘটনাস্থলেই ইমনের মৃত্যু হয় বলে তিনি জানান। সুযোগ পেয়েও ঢাবিতে ভর্তি হতে পারছে না মেধাবী রেন্টু নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ১২ নবেম্বর ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবিক বিভাগের খ-ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েও অর্থাভাবে রেন্টুর উজ্জ্বল ভবিষ্যত নষ্ট হয়ে যেতে বসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির খরচ যোগাতে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনভাবেই টাকার ব্যবস্থা করতে পারছেন রেন্টুর পরিবার। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া মেধাবী এ ছাত্রের ভবিষ্যত গড়তে চরম হতাশার সাগরে ডুবে আছেন রেন্টুর পরিবার। রেন্টু এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ এবং এইচএসসিতে জিপিএ ৪.৯২ অর্জন করে অসাধারণ মেধার পরিচয় রাখে। কিন্তু দারিদ্র্যের কষাঘাতে রেন্টুর সে স্বপ্ন আজ স্বপ্নই থেকে যাবে। রেন্টু নাটোরের সিংড়া উপজেলার লালোর ইউনিয়নের রাকসা গ্রামের মসলেম উদ্দিনের ছেলে। চারভাইয়ের মধ্যে সে দ্বিতীয়। বাবা দিনমজুর হওয়ায় পরিবারের চাকা ঘোরাতে তাকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। তার ওপর তিন ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ মসলেম উদ্দিনের নিকট যেন মড়ার উপর খাড়ার ঘা। রেন্টু বড় ভাই সেন্টু মেধাবী ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে আর লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেনি। সংসারের হাল ধরতে বাবার পাশাপাশি সেন্টু ঢাকার একটি গামের্ন্টেসে স্বল্প বেতনের চাকরি নিতে হয়। কিন্তু তিনিও গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়ায় ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হন। শেষ অবলম্বন বড় ভাই সেন্টুর শয্যাগত হওয়া ও দিনমজুর বাবার স্বল্প আয় দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াটা রেন্টুর জীবনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রেন্টু কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, বড় হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চেয়েছিলাম কিন্তু টাকার অভাবে আমার সে স্বপ্ন আজ নিঃশেষ হয়ে যেতে পারে না। কেউ হয়তো একটু সাহায্য করলে আমি আমার বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারতাম।
×