ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে খালেদা ও তার পুত্র তারেক খুনী হিসেবে চিহ্নিত

বগুড়ার জনসমুদ্রে প্রধানমন্ত্রী- নৌকা মানুষকে বঞ্চিত করে না

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৩ নভেম্বর ২০১৫

বগুড়ার জনসমুদ্রে প্রধানমন্ত্রী- নৌকা মানুষকে বঞ্চিত করে না

উত্তম চক্রবর্তী ও মাহমুদুল আলম নয়ন, বগুড়া থেকে ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বগুড়ায় বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বলেছেন, নির্বাচন বানচাল ও আন্দোলনের নামে শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে খালেদা জিয়া ও তার কুলাঙ্গার পুত্র দেশের মানুষের কাছে ‘খুনী’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। দেশকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ও মানুষকে হত্যার পর এখন উনি (খালেদা জিয়া) বিদেশে বসে বিদেশীদের হত্যা করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছেন। মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা পুত্রের সঙ্গে বসে দেশে আবারও মানুষ হত্যা, জঙ্গী-সন্ত্রাসী, বাংলা ভাই সৃষ্টি করে দেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্র করছেন। কিন্তু দেশের মানুষ শান্তিতে বিশ্বাস করে। তাই তারা যতই চেষ্টা বা ষড়যন্ত্র করুক, দেশের বর্তমান অগ্রযাত্রাকে কেউ পেছনে টেনে রাখতে পারবে না। হত্যাকারী, খুনী, সন্ত্রাসী, জঙ্গীদের স্থান বাংলাদেশে হবে না। সন্ত্রাসী রাষ্ট্র নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ শান্তিময় দেশ হিসেবেই এগিয়ে যাবে। দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হত্যা, সন্ত্রাস আর দুর্নীতি ছাড়া খালেদা জিয়া দেশের মানুষকে কিছু দিতে পারেননি। নির্বাচনে না এসে উনি পুড়িয়ে মানুষ খুন করেছেন। কেউ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করলে তার খেসারত তার দলকেই দিতে হয়। কিন্তু বিএনপি নেত্রী তার দায় জনগণের ওপরে চাপাতে চান। বগুড়াবাসীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এসব সন্ত্রাসী কর্মকা- না করলে বাংলাদেশ ২০২১ সালের অনেক আগেই মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। তাই আপনারা (বগুড়াবাসী) আপনাদের পুত্রবধূকে (খালেদা জিয়া) বলুন- উনি যেন আর মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা না করেন। আর তার কুলাঙ্গার পুত্রকে (তারেক রহমান) বলবেন- বিদেশে পালিয়ে থেকে যেন আর মানুষ হত্যা না করান। বিএনপির দুর্গ বলে পরিচিত বগুড়ায় রীতিমতো কাঁপন ধরিয়ে আলতাফুন্নেসা খেলার মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত লাখো মানুষের বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বগুড়ার সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিশাল এ জনসমুদ্রে প্রধানমন্ত্রী জেলার মানুষের প্রাণের দাবি একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেললাইন স্থাপনের ঘোষণা দিয়ে বলেন, নৌকা কখনও দেশের মানুষকে বঞ্চিত করে না, বরং দিতে আসে। এই নৌকাই বাংলাদেশকে স্বাধীনতা দিয়েছে। নৌকা সরকার গঠন করলে সমগ্র দেশের উন্নয়ন হয়। আর বিএনপি ক্ষমতায় এলে দুর্নীতি, মানুষ হত্যা ও লুটপাটে ব্যস্ত থাকে বলেই তাদের আমলে দেশের কোন উন্নয়ন হয় না। বগুড়াকে বলা হতো বিএনপির দুর্গ। কিন্তু গত ৬ বছরের পথপরিক্রমায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সমর্থনও যে পাল্টে যেতে পারেÑ বৃহস্পতিবার তারই জানান দিয়েছে বগুড়াবাসী। বিএনপির দুর্গে রীতিমতো কাঁপন ধরিয়ে জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করে বগুড়া জেলার মানুষের মতপরিবর্তন এবং এখানেও যে নৌকার পালে হাওয়া লেগেছে- সাংগাঠনিক শক্তির এ মহড়ার মাধ্যমে জেলার নেতারা সেই বার্তাই জানিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। নির্দিষ্ট রাজনৈতিক গ-ির পরিচয়ে না থেকে সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বলয় থেকে মুক্ত হয়ে উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও প্রগতির পক্ষে শামিল হতেই বৃহস্পতিবার লাখো বগুড়াবাসী জনসভায় হাজির হয়ে সমর্থন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। মানুষের স্রোত দেখে মঞ্চে উপবিষ্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও অবাক, বিস্মিত। তারা অকপটে স্বীকারও করেছেন- বগুড়ার মতো জায়গায় লাখ লাখ মানুষের এমন স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি তারা কল্পনাও করতে পারেননি। এও বলেছেন, বর্তমান সরকারের মাত্র ৬ বছরের শাসনামলে এই জেলার রাজনৈতিক সমর্থনও যে পাল্টে যাচ্ছে, জনসমুদ্রের উত্তাল ঢেউ তারই প্রমাণ। জেলার নেতাদের দাবি- বগুড়ার ইতিহাসে এমন বড় জনসভা অতীতে কখনও হয়নি। প্রায় ১১ বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বগুড়ায় রাজনৈতিক জনসভায় উপস্থিত হন। তার আগমন উপলক্ষে পুরো বগুড়াকে সাজানো হয়েছিল বর্ণাঢ্য সাজে। তাকে একনজর দেখতে এবং প্রত্যাশা-প্রাপ্তির হিসাব মেলাতেই অকল্পনীয় মানুষের ঢল নেমেছিল বগুড়া শহরের আলতাফুন্নেসা খেলার বিশাল মাঠে। শুধু দলীয় নেতাকর্মীরাই নন, হাজার হাজার স্বতঃস্ফূর্ত সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে জনসভাস্থল ছাপিয়ে দুই বর্গকিলোমিটার এলাকার কোথাও তিলধারণের ঠাঁই ছিল না। মানুষের স্রোতে দুপুর ১২টার পর থেকে পুরো বগুড়া শহর রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে যায়। পুরো শহরই পরিণত হয়েছিল মিছিলের নগরীতে। আর প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে সামনে রেখে পুরো শহরকেই কঠোর নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেয়া হয়। দুপুর দুইটায় জনসভার সময় নির্ধারণ করা হলেও বেলা ১১টা থেকেই মানুষের ঢল নামে আলতাফুন্নেসা খেলার মাঠে। বাদ্য-বাজনার তালে তালে এবং সেøাগানে সেøাগানে পুরো শহরকে প্রকম্পিত করে শত শত মিছিল আসতে থাকে জনসভাস্থলে। দুপুর ১২টার পর থেকে পুরো শহরে মিছিলের তোড়ে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একটার মধ্যেই জনসভাস্থল পরিপূর্ণ হয়ে উঠে। প্রধানমন্ত্রী জনসভাস্থলে আসার আগেই পুরো মাঠ ছাপিয়ে বগুড়া শহরের বড়গোলা থেকে সাতমাথা, নবাববাড়ি, কোর্ট মোড় হয়ে জলেশ্বরীতলা, সাতমাথা থেকে শেরপুর রোড হয়ে ইয়াকুবিয়া বালিকা বিদ্যালয় মোড়, স্টেশন রোড পর্যন্ত পুরো এক বর্গকিলোমিটার এলাকা মানুষে মানুষে সয়লাব হয়ে যায়। স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় জনসভাস্থলের প্রায় চারগুণ মানুষ বাইরে টানানো বড় বড় ডিজিটাল ব্যানার ও মাইকের সামনে দাঁড়িয়েই প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে দেখা যায়। বিপুল মানুষের স্রোত সামলাতে নিরাপত্তা বাহিনীকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। বিশেষ করে সোনাতলা-সারিয়াকান্দী থেকে আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নেতা আবদুল মান্নান এমপির সমর্থনে শত শত ট্রাক-বাস নিয়ে আসা মানুষের বিশাল মিছিল সবার নজর কাড়ে। বগুড়া ছাড়াও জয়পুরহাট, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, রাজশাহী, রংপুরসহ উত্তরবঙ্গের জেলার আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও সংসদ সদস্যরাও জনসভায় উপস্থিত ছিলেন। জনসভায় উপস্থিত লাখো মানুষকে হতাশ করেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপির দুর্গে অবহেলা নয় বরং উন্নযনের ঝাঁপি খুলে দেন তিনি। বগুড়া জেলায় প্রায় ৯১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ১৫টি নতুন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। একই সঙ্গে জেলার মানুষের প্রাণের দাবি অনুযায়ী বগুড়ায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু থেকে বগুড়া হয়ে রংপুর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণার সময় কান ফাটানো সেøাগান এবং করতালির মাধ্যমে লাখো বগুড়াবাসী তাদের উচ্ছ্বাস ও আনন্দের বহির্প্রকাশ ঘটান। সকালে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রথমে আসেন বগুড়া সেনানিবাসে। শহীদ বদিউজ্জামান প্যারেড গ্রাউন্ডে ১২ ল্যান্সারকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান শেষে বিকেল পৌনে তিনটায় বগুড়া আলতাফুন্নেসা খেলার মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগদান করেন। জনসভায় উপস্থিত হয়েই প্রধানমন্ত্রী ৯১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, বিদ্যুত উপকেন্দ্রসহ ১৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ১৫টি নতুন প্রকল্পের ভিস্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। জনসভা শেষে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় ফিরে যান প্রধানমন্ত্রী। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মজনুর পরিচালনায় জনসভায় বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বগুড়া-১ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ইসমাত আরা সাদেক, রাজশাহীর সাবেক মেয়র এইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, হাবিবুর রহমান এমপি, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ, কৃষক লীগের শামসুল হক রেজা, শ্রমিক লীগের সিরাজুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ড. সিদ্দিকুর রহমান, যুবলীগের আবু আহম্মেদ নাসিম পাভেল, যুব মহিলা লীগের নাজমা আখতার, অধ্যাপিকা অপু উকিল, ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাবেক এমপি তানভীর শাকিল জয়, মাহমুদ হাসান রিপন, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা রাগেবুল আহসান রিপু, টি জামান নিকেতা, মঞ্জুরুল আলম মোহন, আসাদুর রহমান দুলু, ডাঃ রেজাউল আলম জুয়েল, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, সাগর কুমার রায়, রফিনেওয়াজ খান রবিন, শুভাশীষ পোদ্দার লিটন, অসীম কুমার সাহা প্রমুখ। জনসভায় জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার শাসনামলের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অস্ত্রের মাধ্যকে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জেনারেল জিয়া শত শত মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসারকে হত্যা করেছেন। প্রায় ১৯টি ক্যুর মাধ্যমে হাজার হাজার সেনাসদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যা করেছেন। আর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে হত্যা-সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও জঙ্গীগোষ্ঠীর উত্থান ঘটিয়ে দেশকে পিছিয়ে দিয়ে যায়। দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই দেশের মানুষ উন্নয়নের ছোঁয়া পায়, দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যায়। বগুড়ায় অনেক আসনে নৌকা বিজয়ী না হলেও আমরা কাউকে অবহেলা করিনি। সারাদেশের মতো বগুড়ারও অনেক উন্নয়ন করেছি। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর বগুড়ায় একটি পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করি। এ ব্যাপারে গেজেটও প্রকাশ হয়। কিন্তু খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে তা বন্ধ করে দেয়, বিশ্ববিদ্যালয় করতে দেয়নি। কারণ হত্যা-সন্ত্রাস ছাড়া উনি আর কিছু জানেন না। নির্বাচন বানচালের নামে নির্বিচারে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছেন, শত শত পবিত্র কোরান শরিফ পুড়িয়েছেন, মসজিদে আগুন দিয়েছেন। বগুড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি মমতাজ উদ্দিন এবং আবদুল মান্নান এমপিকে সপরিবারে হত্যার জন্য তাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আরও বলেন, মানুষ শান্তিতে থাকলে অশান্তিতে ভোগেন বিএনপি নেত্রী। নির্বাচন ঠেকানোর নামে খালেদা জিয়া ১৫৫ জনকে পুড়িয়ে হত্যার মতো জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছেন। আল্লাহ-রাসূলের ভয় নেই তার। বর্তমান সরকারকে উৎখাত না করে ঘরে ফিরে যাবেন না- এ কথা বলে খালেদা জিয়া নিজ অফিসে বসে থেকে ৯২ দিন ধরে নির্দেশ দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করিয়েছেন। জ্বালাও-পোড়াও ও পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেও ব্যর্থ হয়ে নাকে খত দিয়ে খালেদা জিয়া অফিস থেকে বেরিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে ঘরে ফিরে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে মানুষ পুড়িয়ে মারার পর এখন উনি বিদেশে গেছেন। মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া কুলাঙ্গার পুত্রের সঙ্গে লন্ডনে বসে এখন উনি বাংলাদেশে বিদেশী নাগরিকদের হত্যা করিয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করাচ্ছেন। জঙ্গী-সন্ত্রাসী, বাংলা ভাই তৈরি করে দেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্র করছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সন্ত্রাস চায় না, শান্তিতে থাকতে চায়। তাই ওরা যতই ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করুক না কেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবেই। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ শান্তিময় দেশ হিসেবেই এগিয়ে যাবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আমলে একটি মোবাইলের দাম ছিল এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। বিএনপির এক মন্ত্রীর ছিল এ ব্যবসা। আওয়ামী লীগ আমলে এখন সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট। তিনি বলেন, বিএনপির আমলে সাবমেরিন কেবল সংযোগ বিনা পয়সায় দিতে চেয়েছিল। দেশের তথ্য ফাঁস হবে এমন অজুহাতে তা নেননি খালেদা জিয়া। এই তার জ্ঞানের বহর! ম্যাট্রিকে অঙ্ক ও উর্দু ছাড়া সব বিষয়ে ফেল করেছেন। তার স্বামী জিয়াউর রহমানও এইচএসসি পাস। এদের হাতে ক্ষমতা পড়লেই দেশ রসাতলে যায়, যা বার বার প্রমাণিত হয়েছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনীদের পুরস্কৃত করেছে, আর খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে খুনীদের সংসদে বসিয়েছে। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে দেশকে শুধু খাম্বা দিয়েছে, বিদ্যুত দিতে পারেনি। আমরা ক্ষমতায় এসে ১০০টি নতুন বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন করেছি। ইনশা আল্লাহ আমরা দেশের প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে আলো পৌঁছে দেব। বগুড়াকে ঘিরে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন আছে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, আমরা দেশের মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে কাজ করে যাচ্ছি। আমি বাবা-মা, তিন ভাইসহ সবাইকে হারিয়েছি। আমার ব্যক্তিগত কোন চাওয়া-পাওয়া নেই, আমার একটিই চাওয়া দেশের মানুষের উন্নতি, দেশের সমৃদ্ধি। আওয়ামী লীগ জনগণকে দিতে আসে, দিয়েই যাবে। হত্যাকারী, খুনী, ষড়যন্ত্রকারীদের ঠাঁই বাংলাদেশে হবে না। দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আমরা বিশ্বসভায় যে মর্যাদার আসনে বসিয়েছি, কেউ আর তা নামাতে পারবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই কেউ তা রুখতে পারবে না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, নির্বাচনে না এসে মহাভুল করেছেন। সেই ভুলে বিএনপি এখন ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে, নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে মাঠ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। খালেদা জিয়া এখন সংসদেও নেই, মাঠেও নেই। পরাজিত হয়ে এখন লন্ডনে বসে সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্র করছেন, মানুষ হত্যা করাচ্ছেন। কিন্তু যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, ২০১৯ সালের আগে দেশে কোন নির্বাচন হবে না। সেই নির্বাচনেও জিম্বাবুইয়ের মতো খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগের কাছে হোয়াইটওয়াশ হবেন। আবদুল মান্নান বগুড়াবাসীর পক্ষে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে বলেন, বগুড়ার ইতিহাসে এতবড় জনসভা কোনদিন হয়নি। বগুড়াবাসী অতীত ভুল থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের দল ছেড়ে বগুড়াবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের ধারায় শামিল হয়েছেন।
×