ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার;###;সাক্ষী সালামের জবানবন্দী

নাসির ও শামসুর নেতৃত্বে রাজাকাররা বাবাসহ ৭ জনকে হত্যা করে

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৩ নভেম্বর ২০১৫

নাসির ও শামসুর নেতৃত্বে রাজাকাররা বাবাসহ ৭ জনকে হত্যা করে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের দুই সহোদর এটিএম নাসির আহম্মেদ ও শামসুদ্দিন আহম্মদসহ পাঁচ রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের অষ্টম সাক্ষী মোঃ আব্দুস সালাম ও নবম সাক্ষী মোঃ আব্দুল গনি জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দীতে মোঃ আব্দুস সালাম বলেছেন, নাসির ও শামসুদ্দিনের নেতৃত্বে রাজাকাররা আমার বাবা আব্দুল জব্বারসহ সাতজনকে গুলি করে হত্যা করেছে। অন্যদিকে নবম সাক্ষী মোঃ আব্দুল গনি জবানবন্দীতে বলেছেন, রাজাকাররা আমার বাবা আব্দুল মালেক শেখ ও দাদা চান্দু শেখসহ সাতজনকে গুলি করে হত্যা করেছে। জবানবন্দী শেষে রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী সাক্ষীদের জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য ২৩ নবেম্বর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। ময়মনসিংহের দুই রাজাকার রিযাজ উদ্দিন ফকির ও ওয়াজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ৪ জানুয়ারির মধ্যে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউটর হৃষিকেশ সাহার আবেদনের প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বৃহস্পতিবার এ আদেশ প্রদান করেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মোঃ শাহীনুর ইসলাম ও বিচারপতি মোঃ সোহরাওয়ার্দী। কিশোরগঞ্জের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণে সাহায্য করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। পরে আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আব্দুস শুকুর খান সাক্ষীদের জেরা শেষ করেন। কিশোরগঞ্জের পাঁচ রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের অষ্টম সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম মোঃ আব্দুস সালাম। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৬৬ বছর। আমার ঠিকানা গ্রাম- আয়লা, থানা- করিমগঞ্জ, জেলা- কিশোরগঞ্জ। একাত্তরের মক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল ২২-২৩ বছর। আমি বিএ পরীক্ষায় পাস করেছি। একাত্তরের ১২ নবেম্বর সকাল অনুমান ৮-৯টার দিকে আমার নিজ গ্রাম আয়লার বাড়িতে চলে আসি। ওই দিন বাড়িতে আসার পূর্বে আমার নিজ বাড়িতে চলে আসি। ওই দিন বাড়িতে আসার পূর্বে আমরা রাজাকারদের ভয়ে বিভিন্ন গ্রামে আত্মগোপন করেছিলাম। আমি বাড়িতে আসার দেড় ঘণ্টা পর আমার বাবা আব্দুল জব্বারও পলাতক থাকাবস্থায় আমাদের বাড়িতে আসেন। এর কিছুক্ষণ পর আমার বাবা ঘর থেকে বেরিয়ে অন্যত্র চলে যান। আমি বাড়িতে অবস্থান করতে থাকি। ওই দিন দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে আমি আমাদের বড়ির পেছনে সুপারি বাগানে যাই সুপারি পাড়ার জন্য। আমি যখন সুপারি পাড়তে যাই তখন আমার সঙ্গে আব্দুল গনি নামে একজন লোক ছিল। এর কিছুক্ষণ পরই একজন মহিলা আমার কাছে এসে জানায়, রাজাকাররা আমাদের বাড়ির দিকে আসছে। কিছুক্ষণ পর গুলির শব্দ শুনতে পাই। রাজাকাররা চলে যাওয়ার পর আমার এক চাচা আব্দুল বারেক ও ভাগিনা গিয়াস উদ্দিন আমাকে জানায়, রাজাকাররা আমার বাবা আব্দুল জব্বারকে গুলি করে হত্যা করেছে। তারা আমাদের আরও জানায়, এ ঘটনার সময় আসামি এটিএম নাসির, আসামি শামসুদ্দিন আহম্মেদ এবং অপর রাজাকার আব্দুল হেকিম ছিল। এটিএম নাসির তার হাতে থাকা রাইফেল দিয়ে আমার বাবার পেছন দিক থেকে গুলি করে হত্যা করে। সাক্ষী তার জবানবন্দীতে আরও বলেন, চাচা আমাদের আরও জানায়, রাজাকাররা আমার বাবাকে হত্যা করার পর আয়লা গ্রামের আব্দুল মজিদ ও হবিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়া রাজাকাররা আব্দুল বারেক, শেখ চান্দু, শেখ মালেক, আফতাব উদ্দিন ও সিরাজ উদ্দিনকেও হত্যা করে। এছাড়া রাজাকাররা মিয়া হোসেনকেও গুলি করে হত্যা করে।
×