ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কবিতা

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৩ নভেম্বর ২০১৫

কবিতা

ওয়েস্টহিল কটেজ থেকে সরকার মাসুদ জানালা দিয়ে পাহাড়ের নিচে তাকিয়ে আছি আমার মাথার ভেতর থেকে পাহাড়ি নদীর দিকে তাকিয়ে আছি ওপারে কমলা বাগান- কমলা গাছ সাজুগুজু করে আছে স্বচ্ছ উজ্জ্বলতার ভেতর আমি ভাবছি পাহাড়ি নদী জন্ম নেয় রহস্যঘেরা ভূ-দৃশ্যের অনিঃশেষ সংশয়ের কেন্দ্রে গিরিপথে দাঁড়িয়ে থাকা গাছের এলো চুলগুলো আঁচড়ে দিচ্ছে ভবঘুরে বাতাস। অনুভব চঞ্চল শাহরিয়ার ক্যাম্পাসের কৃষ্ণ বলে ডাক দিলে আজো ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাই। দেখি, মৌনতার খামে মোড়া ফাগুন দুপুর মহুয়ার বনে তোমার হলুদ শাড়ির আঁচল মুগ্ধ অভিমান নিয়ে একা পথ চলা। মেঘ, পাখি, চিরকুটে লেখা নাম কলা ভবনের করিডোরে যেন মধুর মূর্ছনা। মন্নুজান হল গেটে অপেক্ষার দিন প্যারিস রোডের সন্ধ্যা ফিরে ফিরে আসে বন জোছনায়। ক্যাম্পাসের কৃষ্ণ বলে ডাক দিলে আজো মাদার বখশ্্ হল থেকে শুনি তোমার চুড়ির রিনিঝিনি সুর টুকরো কথার খুনসুটি মাখা ভোর। হেমন্তের গান বদরুল হায়দার অব্যাহত মনের লোড শেডিংয়ে তোমাকে আলাদা করা কষ্টকর। সচরাচর স্বাভাবিকতায় পালাক্রমে আত্মহারা হেমন্তের গানে গড়ো হৃদয় নগর। শুল্কমুক্ত প্রেমের দাবিতে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে প্রেম সহায়তায় জীবন দেবতার কাছে নত হয় অভিমান। দ্বৈত নীতিতে অবগতির মনগড়া রীতির অনুশীলনে চূড়ান্ত মাকাল, ফলে সবুরে মেওয়া ভুলে ঐতিহ্য ঐশ্বর্য মিলে ভাগ করে ঘোলাজল। আক্কেল ভুলের মক্কেলের মাসুলে আবেগে কাঁদে দুঃখের না বলা আগুন। নদী মাতৃকতা ধ্যানে কার্তিক অগ্রহায়ণে মনে জাগে শিহরণ। অরক্ষিত প্রেমের সড়কে হৃদয়ের পর্যবেক্ষণে উজাড় হচ্ছে পণ। সম্পর্কন্নয়নের ধারাবাহিকতার বিকল্প নেই। মনের অববাহিকায় তুমি বাস করো। আমি দায় স্বীকারের সত্য হাওয়ায় হেমন্তের ঋতু বদলের মনে নিজেকে ভুলতে থাকি। গরম ভাতের দুঃখবিলাস সমর চক্রবর্তী মেয়েটি চুমু খেতে খেতে খেয়ে নিলো প্রেমিক পুরুষের চিবুক থেকে অভিজাত মেদ প্রেমের ভাষা বদলে বুকের ভিতর গুঁজে দিলো অনাহারী হৃৎপি-ের আণবিক অক্ষর! মেয়েটি পূর্ণ-দৈর্ঘ্য জীবন বৃত্তায়নে দাঁড় করায় শরীরের পাশে জীবন কালের পাশে অসীম সে বোঝাতে চায় শূন্য পাকস্থলীর জটিল ভাষার পাশে প্রেম, কীভাবে রাজনীতি করে যায় শরীরে! মেয়েটি প্রেমিকা-বধূ কিছুই হতে চায় না হামীম ফারুক প্রমিথিউস অরণ্যের ছায়ায় বড় হয়ে ওঠে দুরন্ত প্রমিথিউস অগ্নি-উপাসনার ঘণ্টা বাজে, মৃত মানুষের শেষ নিঃশ্বাসে অভিশাপের তাপ, খাদের শেষ প্রান্তে কয়েদীর পোষাকে, হাতে খড়কুটো; ঘিরে ধরা কুলীন দেবতাদের কাছে জিউসের বার্তা, স্ফুলিংগের মতো ছড়িয়ে পড়ে পেশীর ভেতরে রক্তের নাচন, টাইটানদের হুংকার খসে পড়ে শেকলের আয়োজন, অলংকার। প্রাতঃরাশ রাশহা মুনতাকা কী জ্বলজ্বলে সেই বিবমিষা! আধসকালে অমন ঘুমটা এরমভাবে চটে গেলো! রাতের প্রোলং করা কাজগুলো একেবারে কাঁটা দিয়ে মনে পড়ছে! ছিলো তক্ষকের ভের্সেস শোনানোর কথা, কথা ছিলো মৃত্যু, ট্রাঙ্কুইলিটি, আলো, গোলক আর তাতে আটকা পড়ে যাওয়া ত্রিভুজের ধাঁধা নিয়ে কথা বলবো... বুঁদ হয়ে কইলাম, দঘরৎাধহধ-ফরফহ’ঃ ধং ও ফরাব ভৎড়স যরময ড়ঁঃ ড়ভ ঃৎবঢ়রফধঃরড়হ ুবঃ’; দরজা ছাড়ো আহা ওকে ঢুকতে দাও! কী আছে? ভুল সময়ে এসে উপস্থিত হয় বলেই ভয়কে আমরা ডাকি ‘ভয়’, এর বেশি কী আর? কপালের চোখ চায়নি মহিষাসুরমর্দিনী। বিশ্বাস করো ওই চোখ ওর ভালো লাগে না- তবু তো ঝু লি য়ে রাখে। রাখে না? দেবতা ছিলেন ভাদ্রের ক্ষ্যাপা একুশের ক্রুশে বিদ্ধ! তবু থাকেন কিনা আমার সঙ্গে এক ছাদ এর নিচে, বলো! পৃথিবী এখনো ঘোরে ছুঃ মন্তরের জোরে। কামরূপ ক্যামাক্ষ্যা উড়হি রহঃড় ধ ঢ়ড়বঃ ঈশ্বরকে এনেছে নামিয়ে! ‘অপ্রত্যক্ষ কারণখানা কি তার কাঠপাথরের আলাপি কলিগ? কে জানে হয়তো পাপিষ্ঠা সঙ্গিনীটার জন্যেই...!’ এয়ারববড়ো লোমওয়ালা মহিষমতোন বিশাল কিম্ভূতকিমাকার কী একটা ভদ্রলোকের পারা আমার পেছনে বসে গম্ভীর মুখে চুইংগাম চিবোচ্ছেন সেই দুঃস্বপ্ন ভুলতে আমার হাজারখানেক জন্ম কেটে যাবে। ভয়াল দর্শন বিকট মহাশয় দয়া করে মহিষ হওয়া সত্ত্বেও ক্যানো আমাদের দলে ভিড়েছেন ঐটা জানার উপায় নাই। ভয় পেয়েছি। ভীষণ ভ্যাপসা একটা ভয়! দ্বিতীয় গিরোটা দেবার আগ মুহূর্তের ভয়, একটুখানি প্রাণঘাতী দুরুদুরু! ... কিন্তু ছেলেবেলায় মৃত্যুকে ভাবতাম উৎসব। পারিবারিক সম্মেলনের ভালো কারণ। কী বীভৎস সারল্য। সুযোগ পেলে ‘ফেয়ারলি অড প্যারেন্টস’-এর দুটো পরীর একটা হয়ে যাবো- ফ্রুটগাম চিবিয়ে চেয়ারের তলে লেপটে দিয়েছি যতো জলদি! সিঁড়ি ভেঙে হাঁটুব্যথার মতন পুরনো বদভ্যাস। ‘রাগ লাগে না বল?’ বলে হেসে ফেলা হোস্টেলে দুপুর হলো। আজকের শেষ লেখাটা না লিখে কিছুতেই করবো না চান! একটা পোকাকেও দেবো না শরীর থেকে বেরুতে! সাবানজলে নিষ্পাপ ঘাম, তাতে ভেসে যাবার আগে কোনটির কোন কামড়ে কী জগজ্জাগরী লাইন টপকে বেরিয়ে আসবে কে জানে...। আপাতত নোংরা থাকি। ভুল নির্ভুলের চরিত্রসকল শিমুল আজাদ কেউ ভুল বুঝলে তার শোধরানোর দায়িত্ব আমার নয়! আমার কর্তব্য শুধু এই জ্ঞাতে-অজ্ঞাতে ভুল থেকে দূরে থাকা। আমি মানি যে, ভুল করবার মানুষ বেশী এ সংসারে। আর ভুল ধরবার মানুষের সংখ্যাও নয় কম চারিপাশে। অনুধাবন সচল হলে দেখি, ভুল ধরবার মহান মানুষেরা বড্ড অলস প্রিয়; কাজহীন-কর্মহীন থেকে তারা বসে বসে নিজ মেধার- দৌরাত্ম্যে গর্ববোধ করে; আর একদিন সত্যি-সত্যি গর্ভবতী হয়- অবৈধ সন্তানের। যারা ভুল করে, মূলত তারা কর্মময় প্রাণ আলস্যের কাফনকে সরিয়ে, জীবনমুখী প্রতিটি সঞ্চালন ঘটায় শ্রমে আর ঘামে। অন্যত্র ভুল ধরবার সুধীজনেরা বসে বসে খায়, আর যখন-তখন ঘুমায়। তাদের হা করা মুখে মশা ও মাছি ঢুকে পড়ে। ভুলবোঝা মানুষেরা প্রকৃত নির্বোধ, হিংস্র, গোঁয়ার; তারা ভুল করে, ভুল বোঝে ও অন্যকে বোঝায়; আর কান কথায় মজে নির্দোষকে ফাঁসিতে ঝোলায়। দাও মানজুর মুহাম্মদ একটি সকাল দাও দোয়েলের শিষ আর কাঁচা রোদ মেখে পাড়ার অলি গলি গুঞ্জনে তোলপাড় করে তোমার চলে যাওয়া একটি সুবর্ণ সকাল দাও একটি দুপুর দাও ঢলে পড়া সূর্যের কোলে ঝিমানো পথে বাউরী হাওয়ায় মাতাল করা ধূলিকণায় অলস পায়ে তোমার ফিরে আসা একটি দুরন্ত দুপুর দাও একটি বিকেলও দাও তোমার নগ্ন পায়ে লুটিয়ে পড়তে আকুল সাগরের সোনালী সৈকতের একটি সোনার বিকেল দাও আমার আর কোন সকাল নেই, দুপুর কিংবা বিকেল নেই উল্টো পথ, উল্টো বনের যাত্রী আমি খুঁজি আতিপাতি ফেলে আসা পথের নুড়ি প্রহরের নিশ্বাস বাজায় কানে অতীত স্মৃতির চুড়ি। সিনাদ সৌম্য সালেক যেসব রক্তরেখা মুছে দেয় বিনিদ্র রাতের বিলাপ গুচ্ছগীত, অধিঅঙ্গ রোদের ছোবল ও পাখি, বাঁশির দীর্ণস্বর শুনে... যেটুকু স্পর্শ ছিলো জ্যোৎ¯œাময়- অভিমানি চোখে- মুখে লিখে রাখে ছিন্নপক্ষ জাগর পাখিরা কে জানে ওষ্ঠআগুন এমন লীলা জানে ভাসার রে পাখি, নিশির পুষ্পগুলি ঝরে... ঘুম ও ঘামের বিন্দু মুছে অধীর অশ্রু থেকে তবে তো জলকে দেই আরো জল অর্ঘ্য আশিস ভোরের মিনতি শুনে, বিচ্ছেদের গোপন রাগিণী- আমার ব্যর্থবুলি- জলকামী মরুর সিনাদ মধুমাতৃক, অন্বেষণে ছুটো কী আনন্দ, কীরম বিষাদ !
×