ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাকা ও মুজাহিদের রায় কার্যকর হলেই হত্যাকা- বন্ধ হয়ে যাবে ॥ ইমরান

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১৪ নভেম্বর ২০১৫

সাকা ও মুজাহিদের রায় কার্যকর হলেই হত্যাকা- বন্ধ হয়ে যাবে ॥ ইমরান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডাঃ ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মুজাহিদের রায় কার্যকর হলেই গুপ্ত ও প্রকাশ্যে হত্যা বন্ধ হয়ে যাবে। দেশে আবারও শান্তি ফিরবে। মানুষ স্বস্তিতে বাস করতে পারবে। শুক্রবার শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে গণজাগরণ মঞ্চ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ‘মুক্তচিন্তায় হামলা, ‘রুখে দাঁড়াও বাংলা’ সেøাগান সামনে নিয়ে ‘ফয়সাল আরেফিন দীপনের হত্যাকারী এবং আহমেদুর রশীদ টুটুল, রণদীপম বসু ও তারেক রহিমের হত্যাচেষ্টাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ সকল খুনের বিচার ও জানমালের নিরাপত্তা চাই’ শীর্ষক সমাবেশে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বক্তব্য রাখেন। ইমরান এইচ সরকার বলেন, যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মুজাহিদের রায় আপীল বিভাগে চূড়ান্ত হয়েছে। এরপরও তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে ভিডিও বার্তা ছড়িয়ে কুৎসা রটাচ্ছে। তাদের বিচার বিলম্বিত হওয়ার কারণেই একের পর এক গুপ্ত ও প্রকাশ্যে হত্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই কুখ্যাত দুই যুদ্ধাপরাধীর রায় কার্যকর হলেই আমি মনে করি গুপ্ত, প্রকাশ্যে হত্যা বন্ধ হয়ে যাবে। ইমরান এইচ সরকার বলেন, শুধু তাদের বিচার না, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে যারা অস্থিরতা তৈরি করছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে যেসব প্রতিষ্ঠান আর্থিক সহযোগিতা করছে তাদেরও খুঁজে বের করতে হবে। ইমরান বলেন, দেশবিরোধী একটি চক্র গুপ্তহত্যার মহোৎসবে মেতেছে। তারা শুধু সাধারণ মানুষদেরই হত্যা করছে না আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরও হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারছি না। হত্যাকারীরা পরিষ্কার করে দিয়েছে যে এ দেশকে তারা স্থিতিশীল থাকতে দিবে না। তাই এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সারাদেশে গ্রাম পর্যায়ে সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই গুপ্ত হত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, দেশীয় সংস্কৃতি জেগে উঠলে এদেশ মৌলবাদ পালানোরও পথ খুঁজে পাবে না। তিনি বলেন, হত্যাকারীরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিচ্ছে, তারা এদেশকে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ হতে দেবে না। এ দেশে সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা হতে দেবে না। এদেশের নারীদের ঘর থেকে বের হতে দেবে না। মানুষকে স্বপ্ন দেখতে দেবে না। এদেশের অগ্রযাত্রাকে তারা মেনে নেবে না। তারা চায় এদেশের মানুষ মধ্যযুগীয় বর্বর শাসনের মধ্যে থাকবে। মানুষকে তারা হত্যা করবে, তাদের মন চাইলেই মানুষের চিন্তা-বুদ্ধি-স্বপ্ন সবকিছুকে তারা জব্দ করে দেবে। যে দেশগুলোতে এই হত্যাকারী হায়েনাদের আবির্ভাব হয়েছে, সেই দেশগুলোতে মধ্যযুগীয় বর্বর শাসন চলছে। ইমরান এইচ সরকারের বক্তব্যের আগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এতে উদীচীর শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন। একক আবৃত্তি করেন মিথুন আহমেদ ও বেলায়েত হোসেন। উপস্থাপনায় ছিলেন উদীচীরসহ সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম। সন্ধ্যায় মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে মুক্তমনাসহ সাধারণ মানুষদের হত্যার প্রতিবাদ জানানো হয়। এরপর আবার শুরু হয় গান, আবৃত্তি পরিবেশন। সমাবেশে বক্তারা বলেন, শুধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করলেই হবে না, যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াফত করতে হবে, কেননা তাদের সন্তানরা এই সম্পদ দেশের বিরুদ্ধে কাজে লাগাচ্ছে। তারা সারাবিশ্বে ভিডিওবার্তার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি সরকারের গোয়েন্দাবাহিনীকে বলছি, এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আপনাদের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
×