ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ডেভিট স্ট্রিটফেল নিউইয়র্ক টাইমস

এ্যামাজনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১৪ নভেম্বর ২০১৫

এ্যামাজনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা

আমেরিকার বিখ্যাত অনলাইন রিটেইলার কোম্পানি এ্যামাজন সম্প্রতি দুটো অপ্রত্যাশিত ঘটনার জন্ম দিয়েছে। কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা দিতে বরাবরই অনীহার পরিচয় দেয়া এই কোম্পানি সম্প্রতি তার ২ লাখ ২২ হাজার কর্মচারীকে বাড়তি কিছু সুবিধা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্বিতীয়ত বহুদিন ধরে খুলছি খুলব এই জাতীয় কথা বলে আসার পর অবশেষে এ্যামাজন তার প্রথম বইয়ের দোকান চালু করেছে। সম্প্রতি এ্যামাজন কর্মচারীদের প্রাপ্য সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন এনে সন্তান সম্ভবা মাদের সবেতন গর্ভকালীন ছুটি ২০ সপ্তাহ পর্যন্ত করা হয়েছে। আর বাবারা এই ছুটি পাবেন সর্বাধিক ৬ সপ্তাহ। আগে বাবারা সন্তান জন্মের ব্যাপারে সবেতন কোন ছুটিই পেতেন না। আর মায়েরা পেতেন ৮ সপ্তাহের ছুটি। অর্থাৎ এদিক দিয়ে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় অনেক পিছিয়ে ছিল এ্যামাজন। অন্যান্য ছোটখাটো ব্যাপারেও বড়ই হাতটানের পরিচয় দিত কোম্পানিটি। যেমন বিনামূল্যে স্ন্যাকস পর্যন্ত পরিবেশন করত না কর্মচারীদের। সেদিক দিকে সুযোগসুবিধা বৃদ্ধির সর্বশেষ পদক্ষেপটি রীতিমতো বিপ্লবাত্মক সন্দেহ নেই। কর্মচারীরা আরও খুশি হয়েছে জেনে যে এ্যামাজন ছুটি শেষে কাজে ফেরার কর্মসূচী শিথিল করেছে এবং এই কোম্পানিতে কাজ করেন না এমন স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে ছুটি শেয়ার করার সুযোগও দিয়েছে কর্মচারীদের। উল্লেখ্য, মাইক্রোসফট ও নেটফ্লিক্সসহ বেশ কিছু কোম্পানি উদার পরিবারবান্ধব নীতি ঘোষণা করেছে, যেন কর্মচারীদের সুযো-সুবিধা বৃদ্ধি করা নিয়ে তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। মেধা বাগিয়ে নেয়া নিয়ে প্রযুক্তির জগতে প্রতিযোগিতা অবশ্যই চলে এবং সেক্ষেত্রে কোন কোম্পানি কি সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে তা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এ্যামজনের কর্মচারীদের কাজের চাপ এবং সেই অনুপাতে সুযোগ-সুবিধা তেমন না থাকা নিয়ে একটা নিবন্ধ গত আগস্টে নিউইয়র্ক টাইমস-এ বেরোয়। সেই নিবন্ধের প্রতিক্রিয়া হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি সুযোগ-সবিধা বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে এক মুখপাত্র বলেন, কোম্পানি ফি বছরই সুযোগ-সুবিধার কার্যক্রম পর্যালোচনা করে দেখে। এদিকে এ্যামাজনের একই রকমের আরেকটি অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপ হলো সিয়াটলের ইউনিভার্সিটি ভিলেজ মল-এ প্রথম দোকান উদ্বোধন। ১৯৯০-এর দশকের শেষভাগে এই অনলাইন রিটেইলারের যাত্রা শুরুর পর থেকেই দোকান খোলা হচ্ছে খোলা হচ্ছে এই মর্মে গুজব চলে আসছিল। গত বছর এমন খবরও বেরিয়েছিল যে ম্যানহাটান ও সিলিকন ভ্যালিতে দোকান দেয়া হয়েছে। এমনও শোনা গেছে যে রেডিওশ্যাক-এর কয়েকটি দেউলিয়া আউটলেট কিনে নেয়ার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। সবই ছিল কানকথা। এবার কিন্তু ব্যাপারটা সত্যি সত্যি ঘটেছে। দোকানটার নাম স্বাভাবিকভাবেই রাখা হয়েছে ‘এ্যামাজন বুকস্্’। আপাতত এতে প্রায় ৫ হাজার টাইটেল থাকবে যা তুলনামূলকভাবে কমই বলা যেতে পারে। এ্যামাজন গৃহ ডেলিভারি ব্যবস্থাকে উন্নততর ও ত্বরান্বিত করার কাজে শত শত কোটি ডলার ব্যয় করে থাকে। কোম্পানি বলেছে, ‘এ্যামাজন বুকস্’ হলো এ্যামাজন ডট কমের ভৌত সম্প্রসারণ। কিছু কিছু লোক এখানে বই দেখতে আসবে। তারপর বাসায় গিয়ে অনলাইনে অর্ডার দেবে। স্থানীয় বই বিক্রেতারা কিছুটা হতবুদ্ধির ভাব নিয়ে প্রকল্পটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। কারণ পুরনো ধারার সর্ববৃহৎ বইয়ের দোকান বার্নেস এ্যান্ড নোবল ২০১১ সালের শেষ দিকে ইউনিভার্সিটি ভিলেজে তাদের ৪৬ হাজার বর্গফুটের দোকানটি বন্ধ করে দিয়েছে সেটা অলাভজনক হয়ে পড়ার কারণে। জে,বি, ডিকি নামে এক বইয়ের দোকান মালিক বলেন, কী বোর্ডের মাধ্যমেই যেখানে যা চাই তা-ই পাওয়া যাচ্ছে সেখানে একটা দোকান খুলে বসার কি যুক্তি থাকতে পারে? হতে পারে এটা বড় কর্পোরেশনের ছোটখাটো ভ্যানিটি প্রকল্প।
×