ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঘূর্ণি বিষে নীল প্রোটিয়ারা

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১৫ নভেম্বর ২০১৫

ঘূর্ণি বিষে নীল প্রোটিয়ারা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সকালে টস জিতে বিরাট কোহলি ফিল্ডিং নেয়ায় অনেকেই অবাক হয়েছেন। ব্যাঙ্গালুরুর এম চিন্মাস্বামী স্টেডিয়ামে ১৯৭৪ সালের পর গত ৪১ বছরে এখানে টস জিতে প্রতিটি দলই আগে ব্যাটিং করেছে। ‘ভাগ্য সাহসীদের সঙ্গে থাকে’Ñ বলে প্রবাদ আছে। উপমহাদেশে টস জিতে বোলারদের হাতে বল তুলে দিতে বুকের পাটায় সাহস লাগে। সেই সাহসী কাজটাই করেছেন ‘ক্রেজী কোহলি’। ফলটাও পেয়েছেন হাতেনাতে। প্রথম ইনিংসে দুর্ধর্ষ দক্ষিণ আফ্রিকাকে মাত্র ৫৯ ওভারে ২১৪ রানেই অলআউট করে দিয়েছে স্বাগতিকরা। রবিচন্দ্রন অশ্বিন আর রবিন্দ্র জাদেজার ঘূর্ণি বিষে নীল প্রোটিয়া শিবির। ভাগ্যিস শততম টেস্টে ৮৫ রানের সংগ্রামী ইনিংসটি খেলেছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। নইলে কি যে হতো। জবাবে দিন শেষে বিনা উইকেটে ৮০ রান করেছে ভারত। শিখর ধাওয়ান ৪৫ এবং মুরলি বিজয় ব্যাট করছেন ব্যক্তিগত ২৮ রান নিয়ে। চিন্মাস্বামীর উইকেট নিয়েও কম নাটকীয়তা হয়নি। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে তাঁবু দিয়ে আস্ত একটা ছাঁদই তৈরি করেন ভারতীয় কিউরেটর। লক্ষ্য একটাই ভ্যাপসা পরিবেশে কিছুতেই পিচ পেস-সহায়ক করা যাবে না! স্পিন-বান্ধব করতে সেখানে নাকি আগুনের তাপও দেয়া হয়েছে। স্বাগতিক থিঙ্কট্যাঙ্কদের পরিকল্পনাটা যে ভেস্তে যায়নি প্রথম দিনের চিত্রনাট্যেই সেটি পরিষ্কার। প্রতিপক্ষের ১০ উইকেটের ৮টিই নিলেন দুই স্পিনার অশ্বিন-জাদেজা। ১টি পেসার বরুন এ্যারন ও বাকিটি রানআউট। এ নিয়ে চলতি সিরিজে নিজেদের শেষ ৩০ উইকেটের ২৭টিই নিলেন ভারতীয় স্পিনাররা। ম্যাচের আগে কোহলি বলেছিলেন, ঘরের মাটিতে নিজেদের পছন্দ মতো উইকেটই চান তিনি। জবাবটা দিয়েছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। প্রোটিয়া তারকা বলেছিলেন, তাতে আপত্তির কি আছে, তারাও স্বাগতিক স্পিন মোকাবিলায় প্রস্তুত। দুটি বিষয় এভাবে কাজে লেগে যাবে সেটিই বা কে ভেবেছিল। সতীর্থরা যখন ঘূর্ণি বিষে নীল তখন বুক চিতিয়ে একাই লড়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডে অধিনায়ক। সকালে পেসাররা সুবিধা করতে না পায়ায় ৮ম ওভারেই অশ্বিনের হাতে বল তুলে দেন কোহলি। শুরুটা হয় ১০ রান করা ফন জিলকে তুলে নিয়ে। একই ওভারের পঞ্চম বলে ফ্যাফ ডুপ্লেসিসকে চেতেশ্বর পুজারার হাতে ক্যাচ বানিয়ে সুন্দর দিনের পূর্বাভাস দেন অশ্বিন। এটি তার ক্যারিয়ারে কম ডেলিভারির ব্যবধানে দুই শিকারের নতুন রেকর্ড। প্লেসিসকের রানের খাতা খেলার সুযোগ দেননি। এরপর বরুন যখন ৭ রান করা অধিনায়ক হাসিম আমলাকে ফেরান, প্রোটিয়াদের স্কোর বোর্ডে ৭৮ রান তুলতেই নেই ৪ উইকেট। ডুমিনি ফিরলে সেটি ১২০/৫-এ পরিণত হয়! মনে হচ্ছিল ১৬০-১৭০ রানে গুটিয়ে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। কিন্তু ওই যে ডি ভিলিয়ার্স। জাদেজার শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ১০৫ বলে ১১ চারের সাহায্যে সর্বোচ্চ ৮৫ রান করেন তিনি। সতীর্থরা যেখানে হাবুডুবু খেয়েছেন সেখানে স্পিনের বিপরীতে এবিডির গড় ৫৫.৫০! শেষ দিকে মরনে মরকেল ২২, জেপি ডুমিনির ১৫, ডেন ভিলাস ১৫ ও কাইল এ্যাবট ১৪ রান করলে দুই শ’র কোটা পেরোয় সফরকারীদের সংগ্রহ। জবাবে ভারতের ব্যাটিংয়ের শুরুটা হয়েছে দুর্দান্ত। কোন উইকেট না হারিয়ে ২২ ওভারেই কোহলির দল তুলে নিয়েছে ৮০ রান। মাত্র ১৩৪ রানে পিছিয়ে তারা। ধাওয়ান ৪৫ ও বিজয় ২৮ রানে অপরাজিত। উল্লেখ্য, মাত্র আড়াই দিনেই মোহালির প্রথম টেস্ট জিতে চার ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে ভারত।
×