ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পুঁজিবাজারে ৮ মাসের সর্বনিম্ন লেনদেন

প্রকাশিত: ২৩:৫৭, ১৫ নভেম্বর ২০১৫

পুঁজিবাজারে ৮ মাসের সর্বনিম্ন লেনদেন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ একদিনের সূচকের বড় উত্থানের পরে পুঁজিবাজারে আবারো দরপতন ঘটেছে। বেশিরভাগ কোম্পানির দরপতনের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমছে। রবিবার চলতি সপ্তাহের প্রথম লেনদেন দিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ২২১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। গত ৮ মাসের মধ্যে এটিই ডিএসইর সর্বনিম্ন লেনদেন। এর আগে ডিএসইতে চলতি বছরের ১৯ মার্চ সর্বনিম্ন ১৬৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। লেনদেনের পতন সম্পর্কে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে লেনদেনের পরিমাণ কমছে। এ ছাড়া ধারাবাহিক দর পতনের কারণে বিনিয়োগের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও। বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমে যাওয়ার কারণে লেনদেনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে জানান তিনি। বাজার সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা কমিয়ে আনায় এবং আগামী ২১ জুলাইয়ের মধ্যে অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয়ে আইনী বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আগে ব্যাংকগুলো তার দায়ের ১০ শতাংশ পর্যন্ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারত। কিন্তু ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে এটি মূলধনের ২৫ ভাগে নির্ধারণ করা হয়েছে। এ কারণে শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ সক্ষমতা বহুগুণে কমে গেছে। উপরন্তু অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয় করতে গিয়ে শেয়ারের বিক্রি চাপ বাড়ছে। কিন্তু বিক্রি চাপ সামলানোর মতো ক্রেতা না থাকায় বাজারে ধারাবাহিক দরপতনের ঘটনা ঘটছে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি হারিয়ে চলছেন। ফলে বাজারে সংকট বেড়েই চলছে। এদিকে ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয়ে সময় বাড়ানোর দাবি করে আসছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) পক্ষ থেকে বিনিয়োগের সমন্বয়ের সময় ২০২০ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে। বিএসইসির কাছে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে। প্রস্তারে পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর এক্সপোজার লিমিটে শুধুমাত্র তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারকে অন্তর্ভুক্ত করা, সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে ইক্যুইটি ইনভেস্টমেন্টকে এক্সপোজার লিমিটে অন্তর্ভুক্ত না করাসহ বেশ কিছু দাবি জানানো হয়েছে। গত সপ্তাহে বিএসইসির সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ডিএসইর পক্ষ থেকেও ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিটেডের জন্য পুঁজিবাজারে পতন হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। এদিকে এক দিনের ব্যবধানে ফের পতন হয়েছে বাজারে। রবিবার সপ্তাহের প্রথম দিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের পতন হয়েছে ৯.৩৬ পয়েন্ট। দিনশেষে সূচক গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪২৪.২০ পয়েন্টে। বৃহস্পতিবার সূচক বেড়েছিল ৬২.০৩ পয়েন্ট। এর আগে টানা ৬ দিনের দর পতনে ডিএসই সূচক কমেছিল ১৮০ পয়েন্ট। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩০৮টি ইস্যুর মধ্যে দিনশেষে দর বেড়েছে ১০৮টির, কমেছে ১৫৮টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৪২টির দর। লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে তিতাস গ্যাস। দিনশেষে কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৯৫ লাখ ৪৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিএসআরএম লিমিটেডের লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৯৩ লাখ ৪ হাজার টাকা। ৮ কোটি ১২ লাখ ৭৯ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে কাশেম ড্রাইসেল। লেনদেনে এরপর রয়েছে যথাক্রমে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, সাইফ পাওয়ারটেক, শাহজিবাজার পাওয়ার, কেডিএস এক্সেসরিজ, এমারল্ড অয়েল, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, স্কয়ার ফার্মা। দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএসসিএক্স ৩.৭৪ পয়েন্ট কমে দিনশেষে ৮ হাজার ২২৮.৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ২১০ কার্যদিবসের মধ্যে এটি সিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন। লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮২টির, কমেছে ১০৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০টির দর। সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : কেডিএস এক্সেসরিজ, বিএসর্আএম লিমিটেড, তিতাস গ্যাস, স্কয়ার ফার্মা, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, বে´িমকো, শাহজিবাজার পাওয়ার, সাইফ পাওয়ার, বিএসআরএম স্টিল ও অলিম্পিক এক্সেসরিজ।
×