ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসব ‘ঢাকা লিট ফেস্ট’

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৬ নভেম্বর ২০১৫

শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসব ‘ঢাকা লিট ফেস্ট’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৃহস্পতিবার থেকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হচ্ছে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসব। পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠেয় এ উৎসবের শিরোনাম ঢাকা লিট ফেস্ট। বাংলাদেশের সাহিত্যিকদের সঙ্গে এতে অংশ নেবেন ১৪টি দেশের ২৫০ জন সাহিত্যিক, লেখক, কবি, সমালোচক, সম্পাদক ও প্রকাশক। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উৎসব আঙ্গিনায় থাকবে সাহিত্যনির্ভর বিভিন্ন আয়োজন। সাহিত্যানুরাগীরা উন্মুক্ত এ আয়োজনে নিবন্ধনের মাধ্যমে অংশ নিতে পারবেন। এজন্য ৮টি বুথ থাকবে উৎসব আঙ্গিনায়। দেশের সাহিত্যকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে এই ফেস্টের আয়োজন করছে যাত্রিক। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সহযোগী আয়োজক হয়েছে বাংলা একাডেমি। উৎসব উপলক্ষে রবিবার বাংলা একাডেমির সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয় সংবাদ সম্মেলন। এতে উপস্থিত ছিলেনÑ সংস্কৃতি সচিব বেগম আক্তারী মমতাজ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান এবং উৎসবের পৃষ্ঠপোষক সিটি ব্যাংকের সিইও সোহেল আর কে হুসেইন। আয়োজনের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেনÑ লিট ফেস্টের পরিচালক সাদাফ সায্্ সিদ্দিকি, কাজী আনিস আহমেদ ও আহসান আকবর। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের খ্যাতিমান লেখকদের পাশাপাশি উৎসবে শামিল হবেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব। তাঁদের মধ্যে রয়েছেনÑ ভারতের জনপ্রিয় নারীবাদী লেখক শোভা দে এবং একই দেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক নয়নতারা শেহগাল, ব্রিটিশ সাংবাদিক ও টেলিভিশন উপস্থাপক জন স্নো, কিউবান শীর্ষ বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লেখক ইয়োস, কেনিয়ার শিশুসাহিত্যিক ও বক্তা মুথোনি গারল্যান্ড, পাকিস্তানী মানবাধিকারকর্মী আসমা জাহাঙ্গীর, ফিলিস্তিনী কবি ঘাসান জাকতান, ঔপন্যাসিক অমিত চৌধুরী ও কবি অরবিন্দ কৃষ্ণ মেহরোত্রা। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ জার্নাল ওয়াসাফিরিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সংখ্যার প্রকাশনা অনুষ্ঠিত হবে এ উৎসবে। এ সংখ্যায় প্রকাশিত হবে বাংলাদেশের লেখকদের লেখা। জার্নালের সম্পাদক সুশীলা নাসটা অতিথি হিসেবে অংশ নেবেন মতবিনিময় সভায়। এছাড়া এ দেশের সাহিত্যিকদের বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার লক্ষ্যে ঢাকা ট্রান্সলেশন সেন্টারের ‘লাইব্রেরি অব বাংলাদেশ’ নামের গ্রন্থাগার উদ্বোধন করা হবে। এই ট্রান্সলেশন সেন্টার থেকে প্রকাশিত হবে সৈয়দ শামসুল হক, হাসান আজিজুল হক, সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের বইয়ের ইংরেজী অনুবাদ। ফেস্টকে সামনে রেখে ট্রান্সলেশন সেন্টার নতুন অনুবাদক প্রজন্ম তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে। এর তত্ত্বাবধানে রয়েছেন ভারতীয় অনুবাদক অরুনাভ সিনহা। এছাড়া উৎসবে বাংলার আদি সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে মঞ্চস্থ হবে মনসা মঙ্গলের বিশেষ অংশ বেহুলার লাচারি। এই অংশটি মঞ্চায়নের জন্য টাঙ্গাইল থেকে আসছে যাত্রাদল। প্রকাশিত হবে কায়জার হকের ইংরেজী ভাষায় অনূদিত ‘মনসা মঙ্গল’। উৎসবের বিভিন্ন আয়োজনে অংশ নেবেন বাংলাদেশী কবি নির্মলেন্দু গুণ, মুহম্মদ নূরুল হুদাসহ অনেকে। আসছেন ভারতীয় কবি অরবিন্দ কৃষ্ণ মেহরোত্রা। ভারতীয় কবি সুদীপ সেনের সম্পাদনায় বাংলাদেশী লেখকসহ বেশ কয়েকজন আন্তর্জাতিক কবির একটি বইয়ের প্রকাশনা উৎসব হবে এই আয়োজনে। আন্তর্জাতিক সাহিত্য অঙ্গনে সাড়া জাগানো বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত গালিব হাসানের বই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আসবে এই উৎসবের মধ্য দিয়ে। প্যালেস্টাইনের কবি ঘাসান জাকতান আসছেন তাঁর কবিতা ও বই নিয়ে। তিনি শোনাবেন ১৩ বছর বয়স থেকে গৃহহীন হয়ে যাওয়ার গল্প। কিউবা থেকে আসছেন সাহিত্যিক হোসে ফার্নান্দেজ ইয়োস। উৎসব চত্বরে পাওয়া যাবে পাকিস্তানের ক্রিকেটের ইতিহাস নিয়ে একটি বই। এতে থাকছে কী করে বাংলাদেশীরা বঞ্চিত হয়েছে পাকিস্তান আমলে। বছরব্যাপী শাস্ত্রীয়সঙ্গীত কর্মশালা শুরু ॥ রবিবার হেমন্ত সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে উপস্থাপিত হলো শাস্ত্রীয়সঙ্গীত ও নৃত্যের অনবদ্য পরিবেশনা। শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত বছরব্যাপী শাস্ত্রীয়সঙ্গীত, শাস্ত্রীয় নৃত্য, সেতার ও সরোদ বাদন প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে এই মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে কর্মশালার উদ্বোধন করেন ওস্তাদ মোঃ ইয়াছিন খান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব বেগম আক্তারী মমতাজ। স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক শাওকাত ফারুক। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক সোহরাব উদ্দীন। উদ্বোধনী আলোচনা শেষে বছরব্যাপী কর্মশালার প্রশিক্ষকদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় শাস্ত্রীয়সঙ্গীত ও নৃত্যে সাজানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কর্মশালায় প্রশিক্ষণ প্রদান করবেন উচ্চাঙ্গ নৃত্যে শিল্পী শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায় (মোহিনী আট্টম), মুনমুন আহমেদ (কত্থক), লুবনা চৌধুরী (কথাকলি), বেনজীর সালাম (ওড়িশি), র‌্যাসেল এগনেস প্যারিস (গৌড়ীয়), শুক্লা সরকার (ভরতনাট্যম) ও তামান্না রহমান (মণিপুরী), উচ্চাঙ্গসঙ্গীতে শিল্পী অসীত দে ও প্রিয়াংকা গোপ, সেতারে শিল্পী ফিরোজ খান ও রিনাত ফৌজিয়া এবং সরোদে শিল্পী শাহাদাৎ হোসেন খান ও ইউসুফ খান। অমিত নন্দীর চিত্র প্রদর্শনীর সমাপ্তি ॥ তরুণ চিত্রশিল্পী অমিত নন্দী। ১০ নবেম্বর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে শুরু হয় এই শিল্পীর চিত্রকলা প্রদর্শনী। ‘অনন্ত সৌন্দর্য মাঝে’ শীর্ষক পাঁচ দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী শেষ হলো রবিবার। প্রাচ্যরীতিতে আঁকা ২৮টি চিত্রকর্ম দিয়ে সাজানো হয় প্রদর্শনী। বিভিন্ন মাধ্যম ও করণ কৌশলে চিত্রিত ছবিগুলোতে প্রকাশ ঘটেছে নানান অনুভূতির অনুষঙ্গ। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবর্তিত জলরঙের ওয়াশ পদ্ধতিতে সৃজিত হয়েছে অধিকাংশ চিত্রকর্ম। বিষয় হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে প্রকৃতি ও মানব অবয়বের বৈচিত্র্যময় বিভিন্ন কম্পোজিশন।
×