ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনায় স্কুলছাত্রীকে ৭ মাস আটকে রেখে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৬ নভেম্বর ২০১৫

খুলনায় স্কুলছাত্রীকে ৭ মাস আটকে রেখে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে খুলনার দাকোপ উপজেলার লাউডোব ইউনিয়নের বাদামতলা গ্রামে এক স্কুলছাত্রীকে দীর্ঘ সাত মাস আটকে রেখে ধর্ষণের পর কীটনাশক প্রয়োগ করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার ভোরে ওই স্কুলছাত্রী খুলনা মহানগরীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। মৃত স্কুলছাত্রীর স্বজনরা অভিযোগ করেন, খুলনার দাকোপ উপজেলার লাউডোব ইউনিয়নের বাদামতলা গ্রামের দেবপ্রসাদ রায়ের ছেলে রাজু রায় (২০) পার্শ্ববর্তী কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের শতরূপা গ্রামের মৃত অরুণ ম-লের মেয়ে তুলিকা ম-লের (১৭) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরই সূত্র ধরে গত প্রায় সাত মাস আগে রাজু বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তুলিকাকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে এসে আটকে রাখে। তুলিকার পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে ফিরিয়ে নিতে বার বার যোগাযোগ করা হলে রাজুর বাবা দেবপ্রসাদ রায় বলেন, ‘তুলিকাকে তাদের পছন্দ হয়েছে, এ কারণে রাজুর সঙ্গে তার বিয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’ গত দু’সপ্তাহ আগে রাজুর বাবা দেবপ্রসাদ রায় তুলিকাকে সঙ্গে করে নিয়ে তার স্কুলে গিয়ে এসএসসির ফরম পূরণ করিয়ে আবারও তাদের বাড়িতে নিয়ে যান। কিন্তু তুলিকাকে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে দেননি। সর্বশেষ গত ১২ নবেম্বর তুলিকা কীটনাশক পান করেছে বলে কথিত প্রেমিক রাজু মোবাইল ফোনে তার ভাই অনুপকে খবর দিয়ে বলে, ‘তুলিকার অন্য ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, তাকে নিয়ে যান।’ এর পরদিন শুক্রবার তুলিকাকে গুরুতর অবস্থায় দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে শনিবার তুলিকাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু রাজুর পরিবার তাকে খুলনা মেডিক্যালে না নিয়ে শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় নগরীর একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে সে মারা যায়। নিহত তুলিকা ম-ল কয়রা উপজেলার এনএজিডি কান্তারাম মেমোরিয়াল হাই স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী। তুলিকার মামাত ভাই গৌর বর্মণ ও খালাত ভাই সঞ্জিত ম-ল অভিযোগ করেন, বিবাহ ছাড়াই তুলিকাকে দীর্ঘ সাত মাস আটকে রেখে রাজু ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন করেছে। পরে তাকে বিয়ে করবে না বলে কীটনাশক পান করিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে, খবর পেয়ে রবিবার দুপুরে পুলিশ, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীরা নার্গিস মেমোরিয়াল হাসপাতালে গেলে লাশ রেখেই রাজুর বাবা-মা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। এ বিষয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, খুলনা ইউনিটের সমন্বয়কারী এ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, যেহেতু ঘটনাটি দাকোপে ঘটেছে, সে কারণে দাকোপ থানায় মামলা দায়ের করা হবে। তবে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট এবং ধর্ষণের আলামত পরীক্ষার জন্য পুলিশ লাশ উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এ বিষয়ে খুলনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হচ্ছে।
×