ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

টেস্টের দ্রুততম বল করে ইতিহাসে স্টার্ক

প্রকাশিত: ১৯:৫৩, ১৬ নভেম্বর ২০১৫

টেস্টের দ্রুততম বল করে ইতিহাসে স্টার্ক

অনলাইন ডেস্ক॥ প্রথম ইনিংসে দুই দলই তুলেছে পাঁচশোর বেশি রান। তৃতীয় দিন স্টাম্পসের মধ্যে সেঞ্চুরির সংখ্যা চার, তার দু’টো আবার ডাবল সেঞ্চুরি। শুনে ক্রিকেট বোদ্ধা বলতে বাধ্য, পিচটা নিশ্চয়ই একদম পাটা। অথচ সেই পাটা উইকেটেই প্রায় একশো মাইল প্রতি ঘণ্টার ম্যাজিক গতিতে পৌঁছে বিশ্বের দ্রুততম ডেলিভারি ক্লাবের সদস্যপদ ছিনিয়ে নিলেন মিচেল স্টার্ক! ১৬০.৪ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে যা টেস্ট ক্রিকেটের দ্রুততম ডেলিভারি হিসাবে ঢুকে গেল ইতিহাসের পাতায়! ২০০৩ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শোয়েব আখতারের ১৬১.৩ কিলোমিটার গতিবেগে রেকর্ড হওয়া গোলাটাই এখনও বিশ্বের দ্রুততম। কিন্তু সেটা এক দিনের ম্যাচে। ব্রেট লি আর শন টেট দ্রুততম ডেলিভারির তালিকায় (১৬১.১) যুগ্ম দ্বিতীয়। সে-ও এক দিনের ম্যাচে। কিংবদন্তি জেফ টমসনের দ্রুততম বল (১৬০.৬) রেকর্ড হয়ে এই ওয়াকাতেই, নেট প্র্যাকটিসে। খুনে গতির সেই তালিকায় এ বার স্টার্ক। অটুট রইল ওয়াকার সঙ্গে গতির অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। ১৯৭৫-এ ওয়াকাতেই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কিংবদন্তি অ্যান্ডি রবার্টসের ১৫৯.৫ গতিবেগের বলটি আজকের আগে পর্যন্ত ছিল টেস্টের দ্রুততম। বিতর্কও থাকল। দিনের শেষে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং কোচ ও প্রাক্তন তারকা ক্রেগ ম্যাকমিলান প্রশ্ন তোলেন গতিটা ঠিকটাক মাপা নিয়ে। বলেন, ‘‘দেখে তো দিনের অন্য বলগুলোর চেয়ে আলাদা লাগল না। আচ্ছা স্পিড মাপার দায়িত্বে থাকা কেউ ঠাট্টা করেনি তো? কিংবা মেশিনের কোনও ত্রুটি? কারণ আজ স্পিনারদের বলগুলোর গতিও বেশ বেশি উঠছিল!’’ জবাবে মুচকি হাসি-সহ চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন স্টার্ক। বলেছেন, ‘‘উনি চাইলে কালই নেটে ওঁর বিরুদ্ধে বল করতে পারি। সুযোগটা পেলে খুশিই হব।’’ ছ’ফুট পাঁচ ইঞ্চির অস্ট্রেলীয় পেসার একটা বিস্ফোরক স্পেলে ১৬০.৪ কিলোমিটারের ডেলিভারিটা করেন রস টেলরকে। অবশ্য পঁচিশ বছরের স্টার্কের গ্রিপ থেকে শুধু ওই একটা গোলাই নয়, ১৫৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার উপর এমন কয়েকটা ডেলিভারি বেরোলো, যার একটায় নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাকালামের ব্যাট ভাঙল। অন্য দু’টোয় ক্যাচ উঠলেও স্টার্কের কপাল দোষে একটা তৃতীয় স্লিপে বিশ্রী ফস্কালেন নাথান লিয়ঁ, অন্যটা গালিতে ডাইভ মারা মিচেল মার্শ। ওভারটা ছিল স্টার্কের একুশতম। ঠিক তার আগের ওভারেই স্টার্কের বলে ম্যাকালাম স্লিপে ক্যাচ তুলে বেঁচেছেন এবং শেষ বলে ইয়র্কার সামলাতে গিয়ে ব্যাট ভেঙেছেন। পরের ওভারে চতুর্থ বলটা করতে স্টার্ক দৌড় শুরু করার সময়েও বোঝা যায়নি টেস্ট ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছেন ওয়াকার দর্শক। স্টার্ক ডেলিভারি করার পর স্পিডোমিটারে গতি বড় স্ক্রিনে ফুটে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে হাততালিতে ফেটে পড়ে মাঠ।তবে দ্বিতীয় টেস্টে দুই টিমের মিলিত বোলিং শক্তির বুক বাজিয়ে বলার মতো ঘটনা একমাত্র এটাই। বাকিটা বোলিং লজ্জা এবং ব্যাটিং দাপটে একের পর এক রেকর্ডের চিত্রনাট্য। টস জিতে স্টিভ স্মিথ ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ডেভিড ওয়ার্নার (২৫৩) ও উসমান খোয়াজার (১২১) জোড়া দাপটে ৫৫৯-৯ তুলে ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করেছিল অস্ট্রেলিয়া। জবাবে মার্টিন গাপ্টিলকে (১) শুরুতেই হারিয়ে চাপে পড়া নিউজিল্যান্ডের হাল ধরেন টেলর ও কেন উইলিয়ামসন। নিজের শেষ সাত টেস্টে পাঁচটি সেঞ্চুরি হল উইলিয়ামসনের। এই সিরিজে গাব্বার পর আজও ১৬৬ করলেন। এবং পঁচিশ বছর বয়সে এক ডজন টেস্ট সেঞ্চুরি করে ফেলে এ দিন বসলেন ডন ব্র্যাডম্যান, সচিন তেন্ডুলকর এবং অ্যালিস্টার কুকের পাশে। এ দিকে টেস্টে নিজের সর্বোচ্চ ২৩৫ রান করে এখনও ক্রিজে টেলর। তাঁর সঙ্গে ৭ রানে খেলছেন মার্ক ক্রেগ। ৬ উইকেটে ৫১০ তুলে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে আর মাত্র ৪৯ রানে পিছিয়ে নিউজিল্যান্ড। সূত্র : বিবিসি বাংলা
×