ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আপীল বিভাগে রায় বহাল

মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারী চাকরি থেকে অবসরের বয়স ৬৫ বছরে উন্নীত

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১৭ নভেম্বর ২০১৫

মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারী চাকরি থেকে অবসরের বয়স ৬৫ বছরে উন্নীত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারী চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীত করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তা বহাল রেখেছেন সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। এ সংক্রান্ত এক লিভ টু আপীলের নিষ্পত্তি করে সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপীল বিভাগ এই রায় দেন। আদালতে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রফিকুর রহমান, এ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার, এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, এ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও এ্যাডভোকেট আজহার উল্লাহ ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এ্যাডভোকেট আজহারুল্লাহ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, এর আগে সরকার যে আবেদনটি করেছিল তা নিষ্পত্তি করে দেয় আদালত। এখন রায় পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বয়স করার প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদে উপস্থাপন করতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স কত রাখবেন। ২০০৬ সালের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুসারে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ করতে আরেকটি রিট করেন জামাল উদ্দিন শিকদার। এ রিটের শুনানি শেষে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মোঃ সাইফুর রহমানের বেঞ্চ ৬০ দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করার নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপীল করে সরকার। ২০০৬ সালের ১২ জুলাই এক চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৫৭ বছর থেকে ৬৫ বছরে উন্নীত করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভার বৈঠকে উত্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। কিন্তু ওই সময় বিষয়টি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হয়নি। এরপর ২০০৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক অনুমোদনক্রমে সকলের অবসর গ্রহণের বয়স বৃদ্ধির বিষয়টি প্রশাসনিক উন্নয়ন সচিব কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স ৬২ বছর ও সাধারণ চাকরিজীবীদের বয়স ৬০ বছরে করার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। কিন্তু কোন ধরনের নির্দেশনা ছাড়াই তা ফেরত আসে। এরপর ২০১০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ‘গণকর্মচারী অবসর আইন ১৯৭৪’ সংশোধন করে মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়সসীমা ৫৭ বছর থেকে বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়। এদিকে ২০১২ সালে মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন শিকদারের এক রিটের প্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৬০ বছর করা হয়। এছাড়া ২০০৬ সালের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুসারে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর করতে আরেকটি রিট করেন জামাল উদ্দিন শিকদার। পরে আরও ৬৮০ মুক্তিযোদ্ধা ওই রিট আবেদনে পক্ষভুক্ত হন। আইন সচিব, মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জনপ্রশাসন সচিবকে ওই রিটে বিবাদী করা হয়। এ রিটের শুনানি শেষে গত ১৪ জানুয়ারি বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মোঃ সাইফুর রহমানের বেঞ্চ ৬০ দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করার নির্দেশ দেন। সোমবার ওই আদেশ আপীল বিভাগ বহাল রাখেন।
×