ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাকার রিভিউ আবেদনের শুনানি আজ;###;মুজাহিদের আইনজীবী চেয়েছেন যাবজ্জীবন

আইনী লড়াই শেষ ॥ মুজাহিদের রায় আজ

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ১৮ নভেম্বর ২০১৫

আইনী লড়াই শেষ ॥ মুজাহিদের রায় আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলবদর কমান্ডার আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের উভয় পক্ষের শুনানি শেষ হয়েছে। আজ সাড়ে এগারোটায় রায় ঘোষণার জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। সুপ্রীমকোর্টের কার্যতালিকায় মুজাহিদের রিভিউয়ের রায় ঘোষণার জন্য ২ নম্বরে রাখা হয়েছে। এবং সময় দেয়া হয়েছে সকাল সাড়ে ১১টা। সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর রিভিউ শুনানির দিন মঙ্গলবার থাকলেও তা পিছিয়ে বুধবার করা হয়েছে। কার্যতালিকায় তিন নম্বরে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির সাজার বিরুদ্ধে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর করা আপীলের শুনানি শুরু হয়েছে। শুনানি আজ বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপীল বিভাগের চার সদস্য বিশিষ্ট বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেছেন। বেঞ্চের অপর বিচারপতিরা হলেন, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। আপীল বিভাগে মোট ৫টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামরুজ্জামানের দ- কার্যকর করা হয়েছে। দেলাওয়ার হোসাইন সাইদীকে মৃত্যুদ- কমিয়ে আমৃত্যু কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। এখনও আপীলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়নি। মঙ্গলবার আপীল বিভাগে মুজাহিদের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আইনজীবী এসএম শাহজাহান ও মোহাম্মদ শিশির মনির। আরও উপস্থিত ছিলেন, মুজাহিদের ছেলে আহমেদ মাবরুর। অপরদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির, ট্রাইব্যুনালের চীফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু ও প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী। তদন্ত সংস্থার প্রধান আবদুল হান্নান খানসহ সংশ্লিষ্টরা ৯টার মধ্যেই এজলাসে প্রবেশ করেন। সকাল ৯টা ৮ মিনিটে আসামিদের প্রধান আইনজীবী এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহাবুব হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে রিভিউ আবেদনের পক্ষে আদালতে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। এদিকে সাকা-মুজাহিদের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের শুনানিকে কেন্দ্র করে সুপ্রীমকোর্ট প্রাঙ্গণ ও এর আশপাশের এলাকায় নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। সুপ্রীমকোর্টের মাজার গেট, মূল গেট, সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনসহ সুপ্রীমকোর্ট প্রাঙ্গণে পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ভোর থেকেই নিরাপত্তাকর্মীরা এই এলাকায় অবস্থান নেয়। এর আগে সকাল ৯টা ৫ মিনিটে সুপ্রীমকোর্টের তালিকায় প্রথমে থাকা অন্য একটি মামলার আদেশ দেন। তার কয়েক মিনিট পরেই রিভিউ আবেদনের শুনানি শুরু হয়। প্রথমে মুজাহিদের পক্ষে যুক্তিতর্ক তুলে ধরে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী শুনানি করেন এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। এরপর ১০টা ৫৫ মিনিটে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শুরু করেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সকাল ১১টায় আধা ঘণ্টার জন্য শুনানিতে বিরতি দিয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় আবারও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন এ্যার্টনি জেনারেল। তিনি ১২টার সময় যুক্তি উপস্থান শেষ করেন। এর পর আদালত রায় ঘোষণার জন্য বুধবার দিন নির্ধারণ করেন। আদালতে রিভিউ শুনানির শুরুতেই খন্দকার মাহবুব তার যুক্তিতে বলেন, জেরায় তদন্ত কর্মকর্তা নির্দ্বিধায় স্বীকার করেছেন যে, তার তদন্তকালে রাজাকার, আলবদর, আলশামস বা শান্তি কমিটির সংশ্লিষ্ট কোন তালিকায় আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের নাম ছিল মর্মে তিনি কোন প্রমাণ পাননি। তাহলে আদালত কিসের ভিত্তিতে তাকে আলবদরের কমান্ডার সাব্যস্ত করলেন? এছাড়া আদালতে মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত ‘দি ভ্যাঙ্কুইশড জেনারেলস’ রেফারেন্স দিয়ে বলা হয়- এই বইয়ে রাও ফরমান আলী এবং জেনারেল এ এ কে নিয়াজি স্বীকার করেছেন যে, আলবদর বাহিনী সরাসরি আর্মির কমান্ডে এবং কন্ট্রোলে পরিচালিত হতো। প্রশ্ন হলো মুজাহিদ একজন ছাত্রনেতা হয়ে কিভাবে এই বাহিনীর কমান্ডার হলেন? খন্দকার মাহবুব তার যুক্তিতে আরও বলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যাকা- নিয়ে ১৯৭২ সালে দালাল আইনে ৪২টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এর একটিতে ও মুজাহিদকে আসামি করা হয়নি। রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলাগুলোর নথি আদালতে উপস্থাপন করেনি। অথচ ৪২ বছর পর কিভাবে এই হত্যাকা-ের সব দায়দায়িত্ব তার ওপর চাপানো হয়েছে? আদালতে শুনানির সময় শতাধিক আইনজীবী ও দেশী-বিদেশী মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ১৪ অক্টোবর ফাঁসির দ- থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন দাখিল করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ। মোট ৩৮ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ৩২টি যুক্তি দেখিয়ে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি ও মৃত্যুদ- থেকে খালাস চান মুজাহিদ। মুজাহিদের রিভিউ শুনানি শেষে এ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদ-াদেশ বহাল থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমি আশা করছি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দ-প্রাপ্ত জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের আদেশে খালাস পাবেন। এ্যাটর্নি জেনারেলের ব্রিফিং ॥ ট্রেনিং সেন্টারে গোলাম আযম ও নিজামীর সঙ্গে মুজাহিদকে দেখা গেছে বলে মন্তব্য করেছেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, আলবদর বাহিনীর সদস্যদের উৎসাহিত করেছেন, অনুপ্রেরণা দিয়েছেন এজন্য তাকে দেয়া আপীল বিভাগের মৃত্যুদ-ের শাস্তি সঠিক হয়েছে। মঙ্গলবার আদালত থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজ কার্যালয়ে এমন কথা বলেন। তিনি বলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যার ব্যাপারে বা মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে তাকে যে সব সময় হত্যাকা-ের স্থানে থাকতে হবে এই রকম কোন কথা নেই। আন্তর্জাতিক পরিম-লে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যেগুলো হয়েছে, সেই সব বিচারের কতগুলো নজিরও এই রায়ে এখানে তুলে ধরা হয়েছে। সেখানেও স্পষ্ট বলা আছে, যুদ্ধাপরাধের দায়ে দ-িত ব্যক্তির যে হত্যাকা-ের স্থানে থাকতে হবে, তাকে সরাসরি হত্যা করতে হবেÑ এই রকম কোন বাধ্যবাধকতা নেই। তিনি যদি পরিকল্পনার করেন, উৎসাহিত করেন, তিনি যদি নানারকম সহযোগিতা করেন, তার বক্তৃতায় বা তার লেখায় যদি কেউ উজ্জীবিত হয়ে কেউ হত্যাকা- ঘটায় তিনি ও দায়ী হবেন। এখানে ফৌজদারি মামলায় একটা সময়ে কেউ যদি উল্লেখ নাও করে, ওই সময়ে কেউ যদি নাও জেনে থাকে, তার পরে পরবর্তী সময়ে যদি ঘটনার সম্পর্কে কোন এফআইআর হয়,সাক্ষীদের প্রমাণ আসে, লিখিত ও মৌখিক সাক্ষীতে, তাহলে তার বিচার হবে না কেন? যে রায় আপীল বিভাগ দিয়েছেন, তাকে দ- দিয়েছে, একটা চার্জে মৃত্যুদ- দিয়েছেন, সেটা বহাল থাকবে, এটাই আমার প্রত্যাশা। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের দায়ে দ-িত জামায়াত নেতা মুজাহিদের রিভিউ পিটিশনের আজকে শুনানি সম্পন্ন হয়েছে এবং বুধবার এই মামলায় রায় ঘোষণা করা হবে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলাটি মঙ্গলবারের ছিল তালিকায়, তার আইনজীবী বুধবার এটা শুনানি করবেন এই মর্মে বলায়, সেটা বুধবারের জন্য নির্দিষ্ট করা আছে। আশা করি আজ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রিভিউ আবেদনের শুনানি হবে। মঙ্গলবার নিজামী আপিলের ওপর শুনানি আবার শুরু হয়েছে। মুজাহিদ রিভিউতে তার আইনজীবী যে বক্তব্য দিয়েছে তাদের মোদ্দাকথা হলো তিনি তো নিজে কোন লোককে মেরেছেন বা কোন বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করেছেন-এরকম তো সাক্ষ্য মামলায় নাই, এ ছিল তাদের মুখ্য বক্তব্য। সুতরাং তাকে মৃত্যুদ- থেকে অন্তত পক্ষে যাবজ্জীবন করা হোক, এই মর্মে তারা আদালতের কাছে বক্তব্য রেখেছেন। প্রতিউত্তরে আমরা বলেছি তিনি সেসময় ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় যে বক্তব্য রেখেছেন এবং যেভাবে এই স্বাধীনতাকামী জনগণকে নিশ্চিন্ন করার জন্য এবং যারা মুক্তিযোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য যে সমস্ত আহ্বান জানিয়েছেন যেসব বক্তব্য রেখেছেন এবং সেইসব বক্তব্যের ফলে এই মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছে এবং বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে। বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকা-ের যে হেড কোয়ার্টার ছিল মোহাম্মদপুরে ফিজিক্যালট্রেনিং কলেজ সেখানেও মুজাহিদকে দেখা গেছে। সেখানে মতিউর রহমান নিজামী ও গোলাম আযমকেও দেখা গেছে। সুতরাং বুদ্ধিজীবী হত্যার ব্যাপারে সরাসরি তাকে হত্যা করতে হবে এটা কোন কথা না, তিনি এই ব্যাপারে প্ল্যান করেছেন, এ ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন এবং এব্যপারে তার যারা সহকর্মী তদের উজ্জীবিত করেছেন-এটাও বিরাট অপরাধ। এই অপরাধে তাকে যে শাস্তি দেয়া হয়েছে আপীল বিভাগ থেকে সঠিক ভাবেই শাস্তি দেয়া হয়েছে। এই ছিল আমার বক্তব্য। আইনেরও কোন ব্যত্যয় ছিল না এবং রিভিউর যে পরিসীমা বা স্কোপ সেই স্কোপের ভেতর তার মামলা পুনর্বিবেচনার কোন অবকাশ নেই মর্মে বক্তব্য রেখেছি। খন্দকার মাহবুব হোসেন ॥ মুজাহিদের প্রধান আইনজীবী এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন আশা প্রকাশ করে বলেছেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দ-প্রাপ্ত জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের আদেশে খালাস পাবেন। মঙ্গলবার আদালত থেকে বেরিয়ে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, বুধবার রিভিউর রায়ে মুজাহিদ খালাস পাবেন।’ খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘মুজাহিদ আলবদর বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না মর্মে আমরা যুক্তি উপস্থাপন করেছি। আমরা আশা করছি, আমাদের যুক্তি আদালত বিবেচনায় নিয়ে মুজাহিদকে খালাস দেবেন। রায়ের বিষয়ে প্রত্যাশা সম্পর্কে জানতে চাইলে খন্দকার মাহবুব সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা যখন মামলা করতে যাই, তখন সব সময়েই প্রত্যাশা করি, আসামি খালাস পাবে। তিনি বলেন, এখানে কিন্তু আমরা সমস্ত চার্জের বিরুদ্ধে যাইনি। তার বিরুদ্ধে অন্যান্য চার্জে তার যাবজ্জীবন হয়েছে, ৫ বছর সাজা রয়েছে। তার বিষয়ে আমাদের কোন বক্তব্য নাই। আমাদের বক্তব্য একটিমাত্র চার্জে। যে চার্জে তাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। ওইটার ব্যাপারে বলেছি, সে চার্জের পক্ষে যে ধরনের সাক্ষ্য প্রমাণ এসেছে, তার উপর ভিত্তি করে মৃত্যুদ- দেয়া বেআইনী হয়েছে। রিভিউতে খুব লিমিটেড স্কোপ। সেই জন্য আমরা বলছি, চার্জ-৬ এ যে দ-টা দেয়া হয়েছে, সেটা ‘নট ইন এ্যাকোর্ডেন্স উইথ ল’। এখানে যে সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে, তাতে এই ধারায় তার সাজা হতে পারে না।” বাকি যেসব অভিযোগে যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড রয়েছে- সেগুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাকিগুলো আমরা চ্যালেঞ্জ করছি না। আমরা বলছি, এইটা যেটা আছে, এটাতে যে সাক্ষ্য প্রমাণ আছে, তাতে এটায় ওই ধারায় সাজা দেয়া যায় না। খন্দকার মাহবুব সাংবাদিকদের বলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যার অভিযোগে এর আগে ৪২টি মামলা হয়েছে, সেখানে মুজাহিদের নাম ছিল না। আলবদরের কোন তালিকায় তার নাম পাওয়া যায়নি বলে তদন্ত কর্মকর্তাও বলেছিলেন। আমরা দেখিয়েছি, আলবদরের কমান্ড ছিল আর্মি কমান্ড। সেটা আমরা মুনতাসীর মামুনের একটা বই থেকে নিয়াজী সাহেবের ইন্টারভিউ থেকে দেখিয়েছি। নিয়াজী সাহেব বলেছেন, আলবদর, আলশামস সরাসরি আর্মি কমান্ডে ছিল। আমরা বলেছি, অন্য কেস যখন আমরা করেছি, তখন মামলায় যারা আসামি ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল, অমুক স্থানে তারা হত্যাকা- ঘটিয়েছে, আগুন দিয়েছে, নির্যাতন করেছে। কিন্তু মুজাহিদ সাহেবের বিরুদ্ধে চার্জে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। মুজাহিদের জন্য দুই দফায় প্রায় দুই ঘণ্টার শুনানির পর এই আইনজীবী বলেন, ‘আদালত ধৈর্য সহকারে আমাদের বক্তব্য শুনেছেন, এ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শুনেছেন। মতিউর রহমান নিজামী ॥ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির সাজার বিরুদ্ধে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর করা আপীলের শুনানি বুধবার পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেছে আদালত। মঙ্গলবার এ আদেশ দেন সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। আইনজীবী এ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান নিজামীর পক্ষে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। বেলা ১২টার পর তিনি নিজামীর মামলার আপীলের পেপারবুক আদালতে পড়া শুরু করেন। দুপুর ১টা পর্যন্ত তিনি পেপারবুকের কিছু অংশ আদালতে পড়ে শোনান। ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর মতিউর রহমান নিজামীর মামলায় রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ । রায়ে ১৬টি অভিযোগের মধ্যে আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে ২, ৪, ৬ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে বুদ্ধিজীবী গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, সম্পত্তি ধ্বংস, দেশত্যাগে বাধ্য করার অপরাধে রায়ে নিজামীর ফাঁসির দ- দেয়া হয়।
×