ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিশু-কিশোরী হত্যা মামলার পৃথক রায়

চট্টগ্রাম ও ফরিদপুরে আট আসামির মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ১৮ নভেম্বর ২০১৫

চট্টগ্রাম ও ফরিদপুরে আট আসামির মৃত্যুদণ্ড

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ চট্টগ্রামে পাঁচ বছরের শিশু হত্যার দায়ে চার এবং ফরিদপুরে এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে চারসহ মোট আটজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মহিতুল হক এনাম চৌধুরী ও ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান মামলা দুটির রায় ঘোষণা করেন। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতার। চট্টগ্রাম ॥ পাঁচ বছরের এক শিশুকে হত্যার দায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে চট্টগ্রামের একটি আদালত। একই ঘটনায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত রাবিয়া বেগম নামে এক নারীকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মহিতুল হক এনাম চৌধুরী এ রায় দেন। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত চারজন-সিএনজি অটোরিক্সা চালক ইদ্রিস মিয়া (২৮), টেম্পোচালক মোঃ ফারুক (২৫), ওই চক্রের সদস্য মোঃ সুজন (২৩) ও মোঃ আনোয়ার (২৩)। এদের মধ্যে সুজন পলাতক রয়েছে। বেকসুর খালাস পেয়েছে অটোরিক্সাচালক ইদ্রিসের স্ত্রী রাবিয়া । ট্রাইব্যুনালের পিপি মোঃ আইয়ূব খান জানান, মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা ২০১২ সালে ১৭ ডিসেম্বর পাঁচ বছরের শিশু ইয়াছিন আরাফাত আবিরকে অপহরণ করে। পরে তাকে সিলেট নিয়ে যাওয়ার সময় সীতাকু- এলাকায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এ ঘটনায় ওই বছর ১৮ ডিসেম্বর শিশুর পিতা হালিশহর বি-ব্লকের বাসিন্দা গার্মেন্টস কর্মী রিয়াজ উদ্দিন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। ২০১৪ সালের ১৪ ফেরুয়ারি আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে ৩০২, ২০১/৩৪, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ও ৮ ধারায় অভিযোগ গঠন করে। চলতি বছর ২ ফেব্রুয়ারি মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসে। মামলায় ২৮ জনের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষে ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার ৩০২ ধারায় আসামিদের মৃত্যুদ- প্রদান করে। শিশু আবির নগরীর হালিশহর আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের বাসিন্দা গার্মেন্টস কর্মী রিয়াজ উদ্দিন ও মা রীনা বেগমের ছেলে। সে স্থানীয় প্রাণহরি আমিন একাডেমির শিশুশ্রেণীতে পড়ত। আবিরের পরিবার হালিশহর আবাসিক এলাকার বি-ব্লকে নানার বাড়িতে থাকত। টেম্পোচালক ফারুক ছিল ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া। ফরিদপুর ॥ ফরিদপুরে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মা-বাবা হারা কিশোরী জাকিয়া সুলতানা ওরফে চম্পাকে(১৩) ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় চারজনকে মৃত্যুদ-ের আদেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সাজাপ্রাপ্তদের ২০ হাজার টাকা করে অর্থদ- করা হয়েছে। ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের হাকিম আব্দুর রহমান মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্তরা হলো, রাজবাড়ীর সাইবেরিয়ার গ্রামের শামীম ম-ল (২৪) ও আকাশ ম-ল (২৪), রাজবাড়ীর কোলা গ্রামের জাহিদুল হাসান (২৪) এবং ফরিদপুরের কানাইপুরের উলুকান্দা গ্রামের রাজীব হোসেন বাবু (২২)। এ মামলার অপর আসামি মৌসুমী বেগমকে (২০) হত্যাকা-ে জড়িত থাকার প্রমাণ না পাওয়ায় বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত শামীম ম-ল ও জাহিদুল হাসান আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিল। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত অন্য দুই আসামী আকাশ ম-ল ও রাজীব হোসেন বাবু অনুপস্থিত ছিল। এর মধ্যে আকাশ এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি। রাজীব হোসেন গ্রেফতার হলেও জামিনে গিয়ে আত্মগোপন করেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, আদালত চম্পাকে হত্যার ঘটনায় ৩০২ ও ৩৪ দ-বিধিতে চার জনকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদন্ড ও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করে। এছাড়া চম্পাকে ধর্ষণ করার দায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে প্রত্যেকের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে তিন মাস করে সশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের পিপি মাহফুজুর রহমান বলেন, আসামিদের সর্বোচ্চ সাজাটাই ভোগ করতে হবে। তিনি বলেন, আদালতের রায়ের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল।
×