ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংক ঋণ ৯ শতাংশ করার দাবি

এসএমই খাতের প্রধান সমস্যা ব্যাংক ঋণ

প্রকাশিত: ০৪:২২, ১৯ নভেম্বর ২০১৫

এসএমই খাতের প্রধান সমস্যা ব্যাংক ঋণ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গ্রামভিত্তিক অর্থনীতি গড়তে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। বুধবার দুপুরে রাজধানীর ফেডারেশন ভবনে এফবিসিসিআইয়ের এসএমই বিভাগের স্ট্যান্ডিং কমিটি আয়োজিত ‘এসএমই খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, গ্রামভিত্তিক অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করতে চাই। তাই আজকে গ্রামের মানুষ খুব ভাল আছে। গ্রামভিত্তিক অর্থনীতিকে এগিয়ে নিলে শহরের চাপ কমে যাবে। অর্থনৈতিক কর্মকা- গ্রামে-গঞ্জে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়বে। তিনি বলেন, খালি প্লটগুলো নতুন উদ্যোক্তাদের দিতে বিসিককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এসএমই খাতের উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। সকলে সম্মিলিতভাবে কাজ করে দেশকে ২০২১ সালের আগেই মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গড়ার চেষ্টা করব। শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত আমাদের অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি। এ খাতের ওপর নির্ভর করে দেশের অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। শিল্পায়নের ধারা বেগবান হচ্ছে। তরুণ জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদনে সক্ষমতা বাড়ছে। পাশাপাশি রফতানি প্রবৃদ্ধিও দ্রুত বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার পথে এসএমই খাত বড় একটা ভূমিকা পালন করে। আর এ খাতের প্রধান সমস্যা হচ্ছে ব্যাংক ঋণ। তবে এ ব্যাপারে ব্যাংকের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশে এসএমই খাতে ঋণের পুনঃ অর্থায়নে ১৫ শতাংশ নারীর জন্য ১০ শতাংশ হারে সুদের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে তাদের ঋণ দেয়া হচ্ছে। অবকাঠামোগত সমস্যা দূর করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ঋণ সমস্যা দূর করা হচ্ছে। এসএমই ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনা হবে। এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কেএম হাবিবুল্লাহ বলেন, এসএমই ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে সর্বাত্মক সহায়তা করবে। আমাদের নিজস্ব তহবিল থেকে সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ দেয়া হচ্ছে। এফবিসিসিআইয়ের এসএমই বিভাগের স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ, শিল্পসচিব মোশাররফ হোসেন ভূইয়া, বিসিক চেয়ারম্যান আহমেদ হোসেন খান, এফবিসিসিআইয়ের প্রথম সহসভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, এসএমই বিভাগের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান নূরুল গনি শোভন। এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, এসএমই ইজ দ্য ফিউচার অব বাংলাদেশ। এসএমই ভাল হলে দেশ ভাল হবে। এসএমই বাঁচলে দেশ বাঁচবে, দেশের অর্থনীতি বাঁচবে। এসএমই খাতের সম্ভাবনা তুলে ধরে মাতলুব আহমাদ বলেন, বড় বড় শিল্প অর্থনীতিতে অবদান রাখে, এটা ঠিক। তেমন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। কারণ সম্প্রতি চীন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ কিছু দেশ এসএমইর মাধ্যমে তাদের নিজেদের দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাই আমরাও প্রতিটি জেলা-উপজেলায় এই শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা ব্যাংক ঋণ- এ কথা উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, এসএমই উদ্যোক্তারা এমনিতেই ব্যবসায় তেমন লাভ করতে পারেন না। আবার ব্যাংক ঋণ যদি বেশি হয় তাহলে তারা ব্যবসায় আর এগোতে পারেন না। শুরুতে হোঁচট খেয়ে দেউলিয়া হয়ে যান। তাই ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান, এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংক ঋণ ৯ শতাংশ করতে হবে। প্রয়োজনে সঞ্চয়ে ৫ থেকে ৬ শতাংশ দেয়া হোক। এ ছাড়া বিসিকের খালি প্লটগুলো কাজে লাগাতে হবে। প্রয়োজনে বিসিককে ঢেলে সাজাতে হবে।
×