ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার কাক্সিক্ষত জয়

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ১৯ নভেম্বর ২০১৫

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার কাক্সিক্ষত জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অবশেষে স্বস্তির জয়ের দেখা পেয়েছে আর্জেন্টিনা। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাইপর্বে নিজেদের চার নম্বর ম্যাচে প্রথমবারের মতো হেসেছে বিশ্বকাপ ও কোপা আমেরিকার বর্তমান রানার্সআপরা। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে আর্জেন্টিনা ১-০ গোলে পরাজিত করে স্বাগতিক কলম্বিয়াকে। আর্জেন্টিনার স্বস্তির রাতে জয়ের হাসি হেসেছে তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল এবং আরেক পরাশক্তি উরুগুয়েও। বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে অনুষ্ঠিত ম্যাচে নিজেদের মাঠে রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ৩-০ গোলে হারায় পেরুকে। একই ব্যবধানে উরুগুয়ে হারিয়েছে কোপা আমেরিকার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চিলিকে। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে দুর্দান্ত চমক দেখিয়ে চলেছে ইকুয়েডর। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, চিলি, কলম্বিয়ার মতো দেশগুলোকে পেছনে ফেলে তারা সবার শীর্ষে অবস্থান করছে। এবার অপ্রতিরোধ্য ইকুয়েডর ৩-১ গোলে হারিয়েছে ভেনিজুয়েলাকে। এটি তাদের টানা চার নম্বর জয়। আরেক ম্যাচে বলিভিয়াকে ২-১ গোলে পরাজিত করে প্যারাগুয়ে। এবার যে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপের টিকেট পেতে ‘মহাযুদ্ধ’ হবে প্রতিদ্বন্দ্বী দশটি দলের মধ্যে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। চারটি করে ম্যাচ শেষে এই আলামতই মিলেছে। বর্তমানে পূর্ণ ১২ পয়েন্ট নিয়ে এক নম্বরে ইকুয়েডর। ৯ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে উরুগুয়ে। ৭ পয়েন্ট করে তহবিলে জমা তিন দলের। তবে গোলগড়ে এগিয়ে থেকে তিনে ব্রাজিল, চারে প্যারাগুয়ে ও পাঁচ নম্বরে চিলি। ৫ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে আর্জেন্টিনা। ৪ পয়েন্ট নিয়ে সাতে কলম্বিয়া। ধারণা করা হচ্ছে, এই সাতটি দলের মধ্যে এবার সেরা চারে থাকার জন্য হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। এ অঞ্চল থেকে প্রথম চারটি দল সরাসরি বিশ্বকাপে খেলবে। পাঁচ নম্বর দল প্লেঅফের সুযোগ পাবে। প্রথম তিন ম্যাচে আর্জেন্টিনার সঙ্গী ছিল দুই ড্র ও এক হার। এবার কলম্বিয়াকে হারিয়ে জয়ের ধারায় ফিরেছে তারা। যদিও বাছাইপর্বের শীর্ষ পাঁচটি স্থান থেকে তারা এখনও বাইরে আছে। তবে আগামী বছরের মার্চে আবারও যখন বাছাইপর্বের খেলা শুরু হবে তখন নিজেদের টেবিলের শীর্ষে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আশাবাদী আর্জেন্টাইনরা। ততদিনে ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরবেন অধিনায়ক ও সেরা তারকা লিওনেল মেসি, সার্জিও এ্যাগুয়েরো, কার্লোস তেভেজের মতো তারকারা। কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে এ্যাওয়ে ম্যাচে তেমন সুবিধা করতে পারেনি অতিথি আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ১৯ মিনিটে ইজিকুয়েল লাভেজ্জির লো ক্রসে ল্যাজিও মিডফিল্ডার লুকাস বিগলিয়ার গোলে জয় নিশ্চিত হয় মার্টিনোর দলের। তবে ম্যাচ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অস্বস্তিতে ছিল আর্জেন্টিনা। ম্যাচ শেষে আর্জেন্টাইন কো জেরার্ডো মার্টিনো বলেন, জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল, এটি সবার মনে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে। তবে আমরা আরেকটি গোল করতে পারতাম। ঘরের মাঠে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল ছিল অপ্রতিরোধ্য। সালভাদরের ফন্টে নোভায় বেয়ার্ন মিউনিখ তারকা ডগলাস কস্টার গোলে ২২ মিনিটে এগিয়ে যায় সেলেসাওরা। চেলসি তারকা উইলিয়ানের ক্রস থেকে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। বিরতির পর ৫৭ মিনিটে রেনাটো আগাস্টো ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। ৭৬ মিনিটে ডগলাস কস্টার শক্তিশালী শট পেরু গোলরক্ষক দিয়াগো পেনি ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি বলে সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন ফিলিপ লুইস। কস্টার আরেকটি প্রচেষ্টা সাইডপোস্টে প্রতিহত ও নেইমারের করা গোলটি অফসাইডের কারণে বাতিল না হলে জয়ের ব্যবধান আরও বড় হতে পারত ব্রাজিলের। এরপরও সহজ এই জয়ে বাছাইপর্বে ঘরের মাঠে টানা ৪৫ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ডটাকে আরও বাড়িয়ে নিয়েছে পেলের দেশ। ম্যাচ শেষে কোচ কার্লোস দুঙ্গা বলেন, এই জয় আমাদের প্রয়োজন ছিল। দলের পারফরমেন্সে আমি খুশি। মন্টিভিডিওতে সব আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন চিলি ডিফেন্ডার গঞ্জালো জারা ও উরুগুয়ের স্ট্রাইকার এডিনসন কাভানি। গত জুনে কোপা আমেরিকায় এই দুজনের অযাচিত বিবাদের পর ফের একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় কাভানি লালকার্ড দেখেছিলেন। আর জারাকেও তিন ম্যাচ বহিষ্কার করা হয়। তবে এবার শেষ হাসি হেসেছেন কাভানি ও উরুগুয়ে। ম্যাচের ২৩ মিনিটে সেট পিস থেকে গোল করে উরুগুয়েকে এগিয়ে দেন অধিনায়ক দিয়াগো গোডিন। দ্বিতীয়ার্ধে ৬১ ও ৬৫ মিনিটে আলভারো পিয়েরা ও মার্টিন ক্যাসারাসের দুই গোলে সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বিশ্বকাপের প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়নরা। ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে ইকুয়েডরের সাবলীল জয়ে গোল করেন ফিডেল মার্টিনেজ, জেফারসন মন্টেরো ও ফিলিপ কাসেরেস।
×