নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে যারা যুক্তরাষ্ট্রে সিরীয় অভিবাসীদের আগমন বন্ধ করতে চাইছে তাদের এ আচরণকে ‘উন্মাদনা’ আখ্যা দিলেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তার রাজনৈতিক বিরোধী যারা প্যারিস হামলার পর হঠাৎ করে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন ওবামা তাদের কঠোর সমালোচনা করেছেন। এদিকে সিরিয়া ও ইরাক থেকে আসা শরণার্থীদের পুনর্বাসনের যে উদ্যোগ হোয়াইট হাউস নিয়েছে তাকে বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছেন বিরোধী রিপাবলিকান দলীয় সিনেটররা। খবর বিবিসির।
ওবামা অনেকটা নজিরবিহীনভাবে শরণার্থী বিরোধী রাজনীতিকদের প্রতি কঠোর ভাষা ব্যবহার করেছেন। প্যারিসের ছয়টি জায়গায় শুক্রবার রাতে একযোগে চালানো বন্দুক হামলায় ১৩২ জন নিহত হওয়ার পর অভিবাসী আগমন ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন রিপাবলিকান দলীয় সদস্যরা। ইরাক ও সিরিয়ায় তৎপর জঙ্গী গ্রুপ ইসলামিক স্টেট (আইএস বা আইসিল) ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে। অভিবাসী পুনর্বাসনমূলক সরকারী প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ আটকে দিতেও তারা ওঠে পড়ে লেগেছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে ওবামা তাদের প্রতি কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অভিবাসীদের খ্রীস্টান ও অখ্রীস্টান এই দুই ভাগে ভাগ করে তাদের জন্য ভিন্ননীতি তৈরির যে পরামর্শ কোন কোন রাজনীতিক দিয়েছেন তার সমালোচনা করে ওবামা বলেছেন যে, এটি আমেরিকান মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ম্যানিলায় অবস্থানরত ওবামা বুধবার বলেন, ‘বিতর্কের নামে এখানে এমন কিছু রাজনৈতিক বাগড়ম্বর করা হচ্ছে আইএস লোক নিয়োগ করার জন্য এর চেয়ে ভাল কোন হাতিয়ার আর কিছু হতে পারে বলে আমি মনে করি না।’ যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক বছর বাকি থাকলেও রাজনীতির অঙ্গনে এরই মধ্যে বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া। প্যারিস হামলাকে সামনে রেখে রিপাবলিকান সদস্যরা অভিবাসী বিরোধী হয়ে উঠেছেন। এ প্রসঙ্গে ওবামা বলেন, ‘মানুষের মনের ভয়কে নিয়ে তারা রাজনৈতিক খেলা খেলছেন, প্রচারাভিযান চালাচ্ছেন। এটি দায়িত্বহীন আচরণ। এগুলো এখনই বন্ধ হওয়া প্রয়োজন, কেননা বিশ্বের নজর এদিকে রয়েছে।’ চলতি অর্থবছর আরও ১০ হাজার সিরীয় অভিবাসী গ্রহণের যে পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে স্থগিত রাখার জন্য ২৫টি অঙ্গরাজ্যের গবর্নর ওবামা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে। এর জবাবে ওবামা বলেছেন, ‘উন্মাদনা ও অতিরঞ্জনের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিলে তা সঠিক হবে না। তা করা হলে সন্ত্রাসী হামলায় আমরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি এরকম একটি বার্তাই সবাইকে দেয়া হবে।’