ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগে থাকবে গণজাগরণ মঞ্চ

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ২১ নভেম্বর ২০১৫

ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগে থাকবে গণজাগরণ মঞ্চ

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ বিএনপি নেতা সাকা চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগে গণঅবস্থান কর্মসূচীর ঘোষণা দিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ। সাকা-মুজাহিদের ফাঁসির রায় অনতিবিলম্বে কার্যকর করার দাবিতে শুক্রবার শাহবাগে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশ থেকে মঞ্চের মুখপাত্র ডাঃ ইমরান এইচ সরকার এ ঘোষণা দেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উদীচীর সহ-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম, এ্যাডভোকেট সাঈদা সুলতানা এ্যানী, ব্লগার মারুফ রসূল ভাস্কর রাশা, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এস এম জিলানী শুভ প্রমুখ। ডাঃ ইমরান এইচ সরকার বলেন, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি যে বিবৃতি দিয়েছে তাতে আমরা দেখি যে জামায়াতের সঙ্গে তাদের যে পার্থক্য সে পার্থক্য তারা মুছে ফেলেছে। এখন জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির আর কোন পার্থক্য নেই। কেননা তারা মুক্তিযোদ্ধা আর যুদ্ধাপরাধীদের পার্থক্য করতে পারছে না। তারা যুদ্ধাপরাধীদেরকে স্বাধীনতার বন্ধু হিসেবে দাঁড় করাচ্ছে। তিনি বলেন, সালাউদ্দিন কাদেরের যুদ্ধাপরাধের কথা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা পৃথিবীর মানুষ জানে। সে যে অমার্জনীয় অপরাধ করেছে তা পৃথিবীর কারো অজানা নয়। আমরা ভেবেছিলাম বিএনপি তাদের ভুল রাজনীতি থেকে সরে এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে দাঁড়াবে। কিন্তু তাদের বিবৃতি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে হতাশ করেছে। যেভাবে একজন যুদ্ধাপরাধীকে বিএনপি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আবির্ভূত করার চেষ্টা করছে এর মাধ্যমে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি আদতে আর কোন পার্থক্য রাখেনি। তারা আজকে একই কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেন ইমরান। গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, আমরা আগেই ঘোষণা করেছিলাম যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা করে রাজনীতি করার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো যদি সাধারণ মানুষের এই মনের ভাষা বুঝতে না পারে তবে তারা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। সাকা-মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করার মধ্য দিয়ে এই আন্দোলনে শহীদের সকলের আত্মা শান্তি পাবে। তাদের রক্তের ঋণ শোধ হবে। তাই আর কালক্ষেপণ না করে এই দুই যুদ্ধাপরাধীকে ঝুলিয়ে দিলে ১৬ কোটি মানুষের আশা পূরণ হবে। যুদ্ধাপরাধীদের কালক্ষেপণের চিত্র তুলে ধরে ইমরান বলেন, এই দুই যুদ্ধাপরাধী গত পাঁচ বছর ধরে আইনী লড়াই করেছে। তারা আইনের বিভিন্ন ধাপের সর্বোচ্চ সুযোগ নিয়েছে। তারা ধাপে ধাপে কালক্ষেপণ করেছে। দিনের পর দিন হরতাল দিয়েছে। তারা ভেবেছিল সময়ক্ষেপণ করে হয়ত আলাদিনের চেরাগের মতো দেশে এমন কিছু হয়ে যাবে এমন কেউ শাসন ক্ষমতায় আসবে যারা তাদের মুক্তি দেবে। তারা গলায় ফুলের মালা নিয়ে বেরিয়ে এসে জাতীয় পতাকা লাগানো গাড়িতে আবার চলাফেরা করবে। এ জন্যই তারা কালক্ষেপণ করেছিল। পঁচাত্তরের পর যে পরিস্থিতি হয়েছিল, যুদ্ধাপরাধীরা রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছিল তারা সে রকম কোন স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু বাংলাদেশে যে পরিবর্তন হয়ে গেছে, আর কখনই পঁচাত্তর আসবে না এ বিষয়টি তারা আঁচ করতে পারেনি। আজকের সময়টি একটি ঐতিহাসিক সময়। বাংলাদেশ স্বাধীনতার চূড়ান্ত লক্ষ্যের প্রতি যাত্রা শুরু করেছে।
×