ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সম্পাদকমণ্ডলীর সভা

আওয়ামী লীগের জেলা সম্মেলন দ্রুত শেষ করার নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ২২ নভেম্বর ২০১৫

আওয়ামী লীগের জেলা সম্মেলন দ্রুত শেষ করার নির্দেশ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা কমিটিগুলোর সম্মেলন দ্রুত শেষ এবং সম্মেলন হওয়া জেলাগুলোয় দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শনিবার সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানম-ির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলটির সম্পাদকম-লীর সভায় কেন্দ্রীয় বিভাগীয় সম্পাদকদের এমন নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মেয়াদ থাকায় জানুয়ারির প্রথমদিকে কেন্দ্রীয় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সামনে রেখেই এমন নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার অধিকাংশেরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই। অনেক চড়াই-উতরাই পার করে কেন্দ্রীয় নেতারা ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে এ পর্যন্ত ৫৯টি সাংগঠনিক জেলার সম্মেলন সম্পন্ন করতে পারলেও সম্মেলন হওয়া একটি জেলারও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি। শুধুমাত্র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়েই চলছে এসব জেলার সাংগঠনিক কার্যক্রম। সম্মেলনের মাধ্যমে এই দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয়া হলেও সিংহভাগ জেলা দীর্ঘদিনেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি। কোন কোন জেলা দুই নেতার কমিটি দিয়েই পার করে দিয়েছে নির্ধারিত তিন বছরের মেয়াদ। সর্বশেষ গত ১১ সেপ্টেম্বর সব জেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে জমা দিতে ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল দলটির হাইকমান্ড। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে অধিকাংশ জেলাই পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এসব বিষয়েই শনিবার অনুষ্ঠিত সম্পাদকম-লীর সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং ব্যর্থ জেলার নেতাদের ব্যাপারে তীব্র অসন্তোষ ব্যক্ত করা হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চট্টগ্রামের সাংগঠনিক সম্পাদক বীর বাহাদুর ছাড়া অন্য বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকরা বিভাগের রিপোর্ট তুলে ধরেন। বৈঠক সূত্র জানায়, সভায় বৈঠকে সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। দলের জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা কমিটিগুলোর সম্মেলন দ্রুত সম্পন্ন করতে সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে সাংগঠনিক সম্পাদকদের। এসব জেলা সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম উপস্থিত থাকবেন বলেও সভায় জানান তিনি। এদিকে যেসব জেলায় ইতোমধ্যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে অথচ পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, সেসব জেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে নামের তালিকা দলের সভাপতির কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে। ঘণ্টাব্যাপী চলা রুদ্ধদ্বার এ বৈঠকে জানানো হয়, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে জমা থাকা বেশকিছু জেলা কমিটির বিষয়ে আপত্তি রয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদকদের এ বিরোধ নিষ্পত্তি করে শীঘ্রই ওই জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ফরিদপুর এবং ময়মনসিংহ মহানগর ও জেলা কমিটি আলাদা আলাদাভাবে গঠনের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, সভায় কেন্দ্রীয় শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়া কিভাবে হবে সে ব্যাপারে দলের সাধারণ সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, সংসদে পৌরসভা বিলটি পাস হয়েছে। এখন বিলে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন এবং গেজেট প্রকাশের পর দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে দলীয় কৌশল চূড়ান্ত করতে আরেকটি বৈঠক ডাকা হবে। ওই বৈঠকেই সবকিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের ৭৩টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ১৪ জেলায় সম্মেলন এখনও বাকি রয়েছে। এ জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, ঝিনাইদহ, কুমিল্লা উত্তর ও দক্ষিণ জেলা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, চাঁদপুর, ভোলা, ঝালকাঠি ও গাইবান্ধা। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যদের মধ্যে- যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, উপপ্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল হোসেন, আমিনুল ইসলাম আমিন, সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×