ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাটলারে ধরাশায়ী পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৬:১২, ২২ নভেম্বর ২০১৫

বাটলারে ধরাশায়ী পাকিস্তান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এক জস বাটলারের কাছেই ওয়ানডে সিরিজটা হেরে গেল পাকিস্তান। দুরন্ত ব্যাটিং করলেন এই ইংলিশ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। বিশেষ করে ফল নির্ধারক হয়ে ওঠা শেষ দু’টি ম্যাচে। টেস্ট সাফল্যের ধারা ধরে রেখে প্রথম ম্যাচটি জিতেছিল পাকিস্তানই। কিন্তু এরপরই ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ দলটির ছন্দপতন। দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে ইংল্যান্ড ঘুরে দাঁড়ালে শেষ দুই ওয়ানডে হয়ে ওঠে সিরিজ নির্ধারক। ঠিক তখনই জ্বলে ওঠেন বাটলার। খেলেন অপরাজিত ৪৯ ও ১১৬ রানের দুরন্ত দুই ইনিংস। টানা তিন জয়ে ৩-১এ সিরিজ পকেটে পুরে টেস্ট হারের বদলা নেয় ইয়ন মরগানের দল। ম্যাচ ও সিরিজসেরার দু’টি পুরস্কারই পকেটে পুরেছেন বাটলার। দুবাইয়ে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি২০ বৃহস্পতিবার। তৃতীয়টির মতো শেষ ওয়ানডেতেও ইংল্যান্ডের কাছে পাত্তা পায়নি পাকিস্তান। টস জিতে মরগানের ব্যাটিং নেয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণ করেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৫৫ রানের বিশাল স্কোর গড়ে ইংল্যান্ড। বিদেশের মাটিতে এটিই ইংলিশদের দলীয় সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড। আগেরটি ছিল ৩৪০/৬ নেপিয়ারে, ২০০৭-০৮ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এদিন সেঞ্চুরি হাঁকান দু’জনে। ম্যাচের ‘নায়ক’ বাটলার মাত্র ৫২ বলে ১০ চার ও ৮ ছক্কায় ১১৬ রানে অপরাজিত থাকেন। ৪৬ বলে ১০০ রান পূর্ণ করেন তিনিÑ যা ইংল্যান্ডের হয়ে বাটলারের দ্রুততম সেঞ্চুরির নতুন অর্জন। ইনিংসের ২৫ ওভার হয়ে যাওয়ার পর ব্যাট করতে নেমে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এদিন ৩৬তম ওভারে ব্যাট করতে নেমে ট্রিপল ফিগার তুলে নেন বাটলার! ৬৫তম ওয়ানডেতে এটি তার তৃতীয় সেঞ্চুরি। তবে ওপেনার জেসন রয়ের ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটি ছিল দৃষ্টিনন্দন আর দারুণ ক্ল্যাসিক্যাল। ১১৭ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ১০২ রান করে আউট হন তিনি। শেষ দিকের ব্যাটসম্যানরাও রানের ফুলঝুরি ছুটিয়েছেন। শেষ দশ ওভারে ১২৯ রান যোগ করে ইংল্যান্ড। জো রুট ৭১ বলে ৭১, মরগান ১৩ বলে ১৪ ও জেমস টেইলর ১৩ বলে করেন ১৪ রান। পাকিস্তানের হয়ে পেসার মোহাম্মদ ইরফান এবং ‘অকেশনাল’ লেগস্পিনার আজহার আলি নেন ২টি করে উইকেট। জবাবে পাকিদের শুরুটা মন্দ ছিল না। ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৪৫ এবং ৯ ওভারে ২ উইকেটে ১৪৫ রান তুলে নেয় আজহার আলির দল। কিন্তু আগের ম্যাচগুলোর মতোই সম্ভাবনা জাগিয়ে সাজঘরে ফেরেন ব্যাটসম্যানরা। বাবর আজম ৫১ বলে ৫১, শোয়েব মালিক মাত্র ৩৪ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৫২ রান। এক পর্যায়ে ২৫ ওভারে ৩ উইকেটে ১৭৬ রান তুলে নেয় পাকিস্তান! মনে হচ্ছিল দারুণ এক ম্যাচই হতে যাচ্ছে। কিন্তু এ জুটি ফেরার পর তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়ে পাকি লাইনআপ। শেষদিকে সরফরাজ আহমেদের ২৪, আর আনোয়ার আলির ২৪ রান কেবল ব্যবধান কমিয়েছে। ৪০.৪ ওভারে ২৭১ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। ইংল্যান্ডের হয়ে দুই স্পিনার মঈন আলি ও আদিল রশিদ নেন ৩টি করে উইকেট। দুই শিকার পেসার ডেভিড উইলির। পাকিস্তান প্রথম ওয়ানডেতে জিতেছিল ৬ উইকেটে। এরপর টানা তিন ম্যাচে ইংল্যান্ড জিতল যথাক্রমে ৯৫ রান, ৬ উইকেট ও ৮৪ রানে। ২০১২ সালে আমিরাতে আগের দেখায় টেস্ট সিরিজে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হলেও এবার দারুণ ফাইট করে এ্যালিস্টার কুকের দল হারে ২-১এ। আর ইয়ন মরগান-বাহিনী তো ওয়ানডে সিরিজটাই জিতে নিল। তারুণনির্ভর এই ইংল্যান্ডকে বলা হচ্ছে ‘বদলে যাওয়া’ দল। মাঠেও যার প্রমাণ মিলল। সন্তুষ্ট অধিনায়ক মরগান বলেন, ‘এটা দলীয় নৈপুণ্যের ফসল। বাটলারের সামর্থ্যে আস্থা ছিল, ও ঠিকই প্রমাণ করে দিল। রয়ের ব্যাটিং দারুণ স্টাইলিশ সঙ্গে বোলারদের এ্যাফোর্ট। সব মিলিয়ে অর্জনটা মনে রাখার মতো।’ অন্যদিকে হতাশ পাক অধিনায়ক আজহার বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি আমিরাতের পিচে যথেষ্ট রান রয়েছে, কিন্তু আমাদের বড় জুটি হচ্ছে না। এদিন একাধিকবার আশা জাগিয়ে শেষ পর্যন্ত পরিণতিটা হয়েছে আগের মতোই। সব মিলিয়ে এই সিরিজে আমরা বাজে ক্রিকেট খেলেছি। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে সেটি কাজে লাগাতে হবে।’
×