অনলাইন ডেস্ক॥ বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপি নেতা সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
বাংলাদেশের কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখারউদ্দিন জানিয়েছেন, ''১২টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এই ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।''
স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪৪ বছর পর এই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলো।
এর আগে এই দুজনের প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি নামঞ্জুর করেন। এরপর কারাগারে শুরু হয় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি।
কারাগারের বাইরে নিরাপত্তা প্রহরা জোরদার করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত দু'জনের পরিবারের সদস্যরা রাতে কেন্দ্রীয় কারাগারে দুজনের সাথে শেষবারের মতো দেখা করতে যান।
বিকেলের দিকে মি চৌধুরী এবং মি. মুজাহিদ প্রাণভিক্ষার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন বলে নিশ্চিত করেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, দুজন ম্যাজিস্ট্রেট সকালে মি চৌধুরী এবং মি মুজাহিদের সাথে দেখা করলে তারা লিখিতভাবে এই প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন।
তবে দুই রাজনীতিকের পরিবারের সদস্যরা এই প্রাণভিক্ষার আবেদনের খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেন। কারাগারে দেখা করে বেরিয়ে এসে প্রাণভিক্ষার আবেদন করা হয়নি বলে তারা জানান।
২০১৩ সালের ১৭ জুলাই মানবতা-বিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
তাঁর বিরুদ্ধে আনা বুদ্ধিজীবী হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণসহ সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেছিলেন মি. মুজাহিদ। এ বছর ১৬ই জুন আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখে আপিল বিভাগ।
অন্যদিকে এ বছর ২৯ জুলাই, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
২০১৩ সালের ১ অক্টোবর চার অভিযোগে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচ অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
পরে গত ৩০ সেপ্টেম্বর উভয় রায়েরই পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয় ।
ওই দিন রাতে আপিল বিভাগের এই দুটি পূর্ণাঙ্গ রায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পৌঁছায়।
ট্রাইব্যুনাল মৃত্যু পরোয়ানায় সই করেন ও পরে ওই মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পাঠানো হয়।
কিন্তু আপীল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হলে ১৮ নভেম্বর সেই আবেদন খা্রিজ করে দেন।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: