ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ জাপা নেতা সাখাওয়াতসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে কাল চার্জ গঠন বিষয়ে শুনানি

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২৩ নভেম্বর ২০১৫

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ জাপা নেতা সাখাওয়াতসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে কাল চার্জ গঠন বিষয়ে শুনানি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জাতীয় পার্টির নেতা যশোর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাখাওয়াত হোসেনসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের জন্য আগামীকাল ২৪ নবেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। মামলায় জামালপুরের ৮ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন প্রসিকিউশনের দ্বিতীয় সাক্ষী শহীদজায়া রওশন আরা মল্লিক। মামলার কার্যক্রম আগামী ২৫ নবেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। হবিগঞ্জের দুই সহোদর মহিবুর রহমান ওরফে বড় মিয়া, মুজিবুর রহমান ওরফে আঙ্গুর মিয়া ও আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ৮ম সাক্ষী জয়ফুল বিবির জেরা সম্পন্ন করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য ২৪ নবেম্বর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মোঃ শাহীনুর ইসলাম ও বিচারপতি মোঃ সোহ্রাওয়ার্দী। প্রসিকিউশনে ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম ও প্রসিকিউটর রিজিয়া সুলতানা চমন। সাখাওয়াত হোসেনসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের জন্য কাল ২৪ নবেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। রবিবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ আনোয়ার উল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ দিন ঠিক করেন। রবিবার রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম। অন্যদিকে, আসামিপক্ষে ছিলেন আব্দুস শুক্কুর খান এবং মামলায় অপর এক আসামিরপক্ষে সময়ের আবেদন করেন আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। পরে ২৪ নবেম্বর আসামিপক্ষের শুনানির দিন ধার্য করা হয়। সাখাওয়াত হোসেন ছাড়া অন্য আসামিরা হলেনÑ বিল্লাল হোসেন, ইব্রাহিম হোসেন, শেখ মোহাম্মদ মুজিবর রহমান, মোঃ আব্দুল আজিজ সরদার, কাজী ওয়াহেদুল ইসলাম, লুৎফর মোড়ল ও আব্দুল খালেক মোড়ল। জামালপুরের ৮ রাজাকার ॥ একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামালপুরের ৮ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন প্রসিকিউশনের দ্বিতীয় সাক্ষী শহীদজায়া রওশন আরা মল্লিক। রবিবার চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ তিনি সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্য গ্রহণে ছিলেন প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সংক্ষিপ্ত জেরার পর মামলার কার্যক্রম আগামী ২৫ নবেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। শহীদ নুরুল আমিন মল্লিকের স্ত্রী শহীদজায়া রওশন আরা (৬৮) বলেন, ১৯৬১ সালে ১৪ বছর বয়সে নুরুল আমিন মল্লিকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ১৯৭১ সালে নুরুল আমিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির পাশাপাশি জামালপুর শহরের মেডিক্যাল রোডে ওষুধের ব্যবসা (ফার্মেসি) করতেন। আমার স্বামীকে রাজাকাররা ধরে নিয়ে যায়। ১০ জুলাই ১৯৭১। শহীদ নুরুল আমিন মল্লিককে ফিরে পেতে স্থানীয় শান্তি কমিটি ও বদর বাহিনীর নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার পরিবারের সদস্যরা। শান্তি কমিটি ও বদর বাহিনীর নেতারা নুরুল আমিনকে ফিরিয়ে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিল। এ কথা সাক্ষী রওশন আরা তার শ্বশুর এবং ভাসুরের কাছে শুনেছিলেন। স্থানীয় শান্তি কমিটির নেতা হিসেবে ইউসুফ মাস্টার, মক্তব কবিরাজ, শরীফ, শামসুল এ্যাডভোকেটের নাম সাক্ষ্যে উল্লেখ করেন তিনি। সাক্ষী বলেন, পরদিন অর্থাৎ ১১ জুলাই আমার স্বামীর মরদেহ ব্রহ্মপুত্রের চাপাতলা ঘাটে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। আমার স্বামীর মুখে তখন কাপড় গোঁজা, দুই হাত এবং পা বাঁধা ছিল। গুলিবিদ্ধ শরীরে বেয়োনেটের আঘাতও ছিল। সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম রওশন আরা মল্লিক, আমার বর্তমান ঠিকানাÑ গ্রাম খিদিরপুর, থানা-বেলকুচি, জেলা-সিরাজগঞ্জ। আমার বর্তমান ঠিকানা সিএ্যান্ডবি রোড, দয়াময়ী পাড়া, জামালপুর। আমি একজন গৃহিনী। ১৯৬১ সালে আমার বিয়ে হয়। তখন আমার বয়স ছিল ১৪ বছর। এখন আমার বয়স আনুমানিক ৬৮ বছর। তখন আমি সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলাম। ১৯৭১ সালে আমার স্বামী নুরুল আমিন মল্লিক ওষুধের ব্যবসা করতেন। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। হবিগঞ্জের তিন রাজাকার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতারকৃত হবিগঞ্জের দুই সহোদর মহিবুর রহমান ওরফে বড় মিয়া, মুজিবুর রহমান ওরফে আঙ্গুর মিয়া ও আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ৮ম সাক্ষী জয়ফুল বিবির জেরা সম্পন্ন করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য ২৪ নবেম্বর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
×