ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যয় হবে ৭৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা

পর্যটকদের নিরাপত্তায় সোজা হচ্ছে সড়ক বাঁক

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৩ নভেম্বর ২০১৫

পর্যটকদের নিরাপত্তায় সোজা হচ্ছে সড়ক বাঁক

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে বাঁক সোজা করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ফলে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করার পাশাপাশি পর্যটন শিল্পের বিকাশে পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ ও পটিয়া শহরের যানজট দূর হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এজন্য ৭৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে এটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যেই এ প্রকল্পের প্রক্রিয়াকরণ শেষ করেছে পরিকল্পনা কমিশন। মঙ্গলবার এটি অনুমোদন দেয়া হতে পারে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায়। অনুমোদন পেলে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শেষ করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সাবেক সদস্য আরাস্তু খান পরিকল্পনা বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পটিয়া শহরের যানজট দূর হবে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বক্রতা সরলীকরণ করা হবে। এই সড়কে দ্রুত ও নিরাপদ সড়কে যোগাযোগ স্থাপিত হবে। তাই এটি একনেক অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ইন্দ্রপুল হতে চক্রশালা পর্যন্ত ৫ দশমিক ২০ কিলোমিটার বক্রতা সোজার করার জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। প্রস্তাবিত সড়কটি ব্যবহার করে নিরাপদ ও দ্রুত সড়ক যোগাযোগ সম্ভব হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে ৫৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট এ্যান্ড মেইনটেন্যান্স প্রজেক্ট-২ এর রোড ইমপ্রুভমেন্ট কম্পোনেন্ট-৪ এর আওতায় প্রস্তাবিত প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ ও ব্রিজের আংশিক নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কাজ করা হয়। ফলে প্রকল্পের আওতায় নতুন করে আর ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে না। প্রস্তাবিত প্রকল্পটির ওপর গত ১৭ আগস্ট পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের ২০১৫ সালের রেট সিডিউল অনুযায়ী পুনর্গঠিত ডিপিপির প্রাক্কলিত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৭৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়ন সময় ধরা হয়েছে ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, ৩ দশমিক ৯৫ লাখ ঘনমিটার মাটির কাজ, ৫ দশমিক ২০ লাখ ঘনমিটার ফ্লেক্সিবল প্রেভমেন্ট নির্মাণ, ৩৫ মিটারের একটি আরসিসি সেতু তৈরি, ৪৫ মিটারের ১৪টি আরসিসি কার্লভাট তৈরি, ইউটিলিটি অপসারণ, নির্মাণকালী রক্ষণাবেক্ষণ, সাইস সিগন্যল, কিলোমিটার পোস্ট ও রোড মার্কিংসহ অন্যান্য কার্যক্রম করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অর্থবছরভিত্তিক বরাদ্দ চাহিদা দেয়া হয়েছে, চলতি অর্থবছরে ২৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩০ কোটি ২০ লাখ টাকা এবং প্রকল্পের শেষ অর্থবছরে ২০১৭-১৮ এ ২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয় করার প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) সূত্র জানায়, সদ্য সমাপ্ত ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এক্সিলারেট গ্রোথ এ্যান্ড রিডিউচিং প্রভার্টি (পার্ট-২) এর সেক্টরাল স্ট্রাটেজিস প্রেগ্রিাম এ্যান্ড পলিসিস এর সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের আওতায় ৪ হাজার ৬৭২ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ, ৮ হাজার ৪৩৩ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন ও পুনর্বাসন এবং ২৩ হাজার ৭৭৭ মিটার নতুন সেতু/কার্লভাট নির্মাণ বা পুনর্নির্মণের লক্ষ্য ধরা ছিল। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পানায়ও এসব লক্ষ্যমাত্রা আরও বেড়েছে। প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের আওতায় ৫ দশমিক ২০ কিলোমিটার মহাসড়কের বাঁক সোজা করা হবে, যা সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
×