ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আমিরের আগুন ঝরানো বোলিং

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২৩ নভেম্বর ২০১৫

আমিরের আগুন ঝরানো বোলিং

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অপরাধে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বেশ আগেই ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরেছেন। গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার দুয়ারও উন্মুক্ত হয়। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ ও টি২০ প্রতিযোগিতায় ফিরেছেন ঠিকই। তবে দেশ-বিদেশের ক্রিকেটারদের নিয়ে আয়োজিত কোন টুর্নামেন্টে এই প্রথম খেলতে নামলেন পাকিস্তানী তরুণ পেসার মোহাম্মদ আমির। আর প্রথমবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসরে খেলতে নেমেই আগুন ঝরিয়েছেন বল হাতে। চিটাগাং ভাইকিংসের হয়ে আগুন ঝরা বোলিং করে তিনি ৩০ রানে নেন ৪ উইকেট। দু’বার হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেয়েও অবশ্য তা কাজে লাগাতে পারেননি। আর তার দল বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিরুদ্ধে জিততে পারেনি, কিন্তু আলো ছড়িয়ে এখনও নিজের সামর্থ্য ফুরিয়ে যায়নি সেই ইঙ্গিত দিয়ে ফেললেন ২৩ বছর বয়সী এ পাক পেসার। চলতি বছর ২৯ জানুয়ারি ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার অনুমতি পান আমির। ধীরে ধীরে নিজেকে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছিল তখন থেকেই। এরপর সেপ্টেম্বরে আইসিসির নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি উঠে গেলে অক্টোবরে পাকিস্তানের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট এবং সেপ্টেম্বরে টি২০ লীগে খেলেছেন। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক ক্রিকেট আসরে দেশ-বিদেশের তারকাদের উপস্থিতি থাকে। এবার বিপিএলে প্রথমবারের মতো তিনি সুযোগ পান চিটাগাং ভাইকিংসের পক্ষে। রবিবার প্রথম ম্যাচেই দারুণ ঝলক দেখিয়েছেন বল হাতে। জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নামা রংপুর রাইডার্স শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে তার গতির দাপটে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ দুই বলে তিনি সাজঘরে ফিরিয়ে দেন দুই ওপেনার লেন্ডল সিমন্স ও সৌম্য সরকারকে। অবশ্য হ্যাটট্রিকের সুযোগটা নিজের ঠিক পরের ওভারের প্রথম বলে কাজে লাগাতে পারেননি। তবে তিনি যে রাইডার্স ব্যাটসম্যানদের জন্য ভীতিকর হয়ে উঠবেন সেটা বোঝা গিয়েছিল প্রথম ওভারেই মেডেন দেয়ার পর। টি২০ ক্রিকেটে মেডেন ওভার যে কোন বোলারের জন্য স্বপ্নের ব্যাপার। আমির সেই বিরল মেডেন দিয়েই শুরু করেন। পরের ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন। প্রথম স্পেলে ২ ওভারে এক মেডেনসহ ৫ রানে দুই উইকেট নিয়ে শেষ করেন। ইনিংসের ১৫তম ওভারে আবার বল হাতে ফেরেন দ্বিতীয় স্পেলে। সে সময় রাইডার্স বেশ ভালভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিল। ফিরতি ওভারে ১৭ রান দেন আমির। তবে ১৯তম ওভারে আবারও বল হাতে ফিরে এসে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে রংপুরকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিতে থাকা থিসারা পেরেরা ও মিসবাহ-উল-হককে ফিরিয়ে দিয়ে আরেকবার হ্যাটট্রিকের সুযোগ লাভ করেন। এবারও পারেননি। শেষ পর্যন্ত ৪ ওভারে ৩০ রানে ৪ উইকেটে শেষ হয় আমিরের স্পেল। এর আগে বিপিএলে ১০ বোলার ইনিংসে ৪ উইকেট নিতে পেরেছেন। আগের দু’টি ও এবারের আসর মিলিয়ে বিপিএলের সেরা বোলিংয়ের তালিকায় আমির সাত নম্বরে। আরেক পাক পেসার মোহাম্মদ সামি প্রথম বিপিএলে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিরুদ্ধে মাত্র ৬ রানে ৫ উইকেট শিকার করেছিলেন। সেটাই সেরা বোলিং বিপিএলের রেকর্ডে। বিপিএলের ইতিহাসে একমাত্র ৫ উইকেট শিকারেরও রেকর্ড সেটিই।
×