ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শহিদুল ইসলাম

জীবনসঙ্গী নির্বাচনে করণীয়

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২৩ নভেম্বর ২০১৫

জীবনসঙ্গী নির্বাচনে করণীয়

মানুষ সামাজিক জীব। সামাজিক জীব হওয়ার কারণে মানুষকে অনেক সামাজিক নিয়মকানুন, রীতিনীতি মেনে চলতে হয়। বিয়ে একটি সামাজিক এবং ধর্মীয় নিয়মও বটে। জীবনের অনেক বড় এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হলো বিয়ে। সাময়িক কোন প্রতিকূল পরিবেশ বা অবস্থান বা আবেগের কারণে হয়তবা অনেকেই তাড়াহুড়ো করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। কিন্তু এমন বিয়ে খুব বেশিদিন দীর্ঘ হয় না। কারণ বিয়ের পরের জীবন শুধু আবেগ দিয়ে কাটে না। বিয়ের পরবর্তী জীবন কাটানোর জন্য অনেক কিছুরই প্রয়োজন পড়ে। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ‘মেহতাব খানব’ তার ‘মন ও মানসিকতা’ বইয়ে লিখেছেন, শুধু ভালবাসা দিয়ে দাম্পত্য জীবন সুখী হয় না। দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে বা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস, উদারতা, স্পর্শকাতরতা, প্রতিজ্ঞাবদ্ধতা, বিবেচনা, সহনশীলতা, বিশ্বস্ততা, সমঝোতা, মায়া-মমতা, সহযোগিতা, অন্যের সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা, ত্যাগ স্বীকার ইত্যাদি। এগুলোর উপস্থিতি থাকলেই দাম্পত্য জীবন ধীরে ধীরে সুন্দর একটি রূপ নিতে পারে। তাই মনেপ্রাণে যতই কাউকে ভালবাসুন বা ভালবাসার সম্পর্কে থাকুন না কেন, মনে রাখবেন কিছু গুণ সঙ্গীর মধ্যে না থাকলে আপনাদের আবেগের বিয়ে বেশিদিন টিকিয়ে রাখতে পারবেন না। ভালবাসা জীবনের অংশ কিন্তু প্রয়োজন যখন সামনে আসে, তখন ভালবাসা তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। তাই বিয়ে করার আগে অবশ্যই সঙ্গীর মাঝে কিছু প্রয়োজনীয় গুণ আছে কি-না তা দেখে নিন। যেমনÑ * সততা ও বিশ্বস্ততা : একজন সৎ মানুষ, নির্লোভ, স্বার্থহীন হয়ে থাকে। বিয়ের পরের জীবনে বিশ্বস্ততার খুবই প্রয়োজন। কারণ সম্পর্কের মূল ভিত্তিই নির্ভর করে বিশ্বস্ততার ওপর। তাই সঙ্গীর মাঝে সৎ ও বিশ্বস্ত মানুষ দেখতে পান কি-না তা পরখ করে নিন। * নিজ পরিবারের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক : মানুষকে যেমন তার কথাবার্তা, আচরণ এবং স্বভাব দেখে বিচার করা যায়, তেমনি ব্যক্তির সম্পর্ক তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কেমন, তা দেখেও বিচার করা যায় তিনি সম্পর্কে কেমন হবেন। তাই সঙ্গীর এই বিষয়টির দিকে নজর দিন। কারণ যিনি পরিবারের সঙ্গে ভাল সম্পর্কে আছেন, তিনি সম্পর্কের মূল্য বুঝবেন। * যিনি বিয়ের আসল অর্থ জানেন : বিয়ে মানে শুধু একাকিত্ব দূর করা বা সামগ্রিকভাবে একসঙ্গে থাকার স্বীকৃতি পাওয়া নয়। এর সঙ্গে জড়িত থাকে পরিবারের সবার জীবন। তাই ভাল করে দেখে নিন সঙ্গিনী বিয়ের আসল অর্থ জানে কি-না। * অনেক বেশি পরিশ্রমী : জীবন মানেই যুদ্ধ। জীবনে ভালভাবে বেঁচে থাকতে হলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই। অলস লোকেরা সর্বদাই অভাবের মধ্য জীবনধারণ করে। তাই দেখে নিন আপনার সঙ্গীর মাঝে পরিশ্রম করার মানসিকতা আছে কি-না। * লক্ষ্য নির্দিষ্ট রাখা : কিছু মানুষ আছে, যারা সর্বদাই সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে, তা ছোট-বড় যে কোন কিছুতেই। এ জাতীয় মানুষদের অস্থির মনের মানুষ বলা হয়ে থাকে। অস্থির মানুষগুলো নিজেরাও অসুখী থাকে, অন্যদেরও সুখী করতে পারে না। তাই দেখে নিন আপনার সঙ্গী স্থির না অস্থির মনের মানুষ। * অভিযোগে বেশি অভ্যস্ত : কিছু মানুষ, যারা শুধু অভিযোগ করতে পছন্দ করে। নিজের ভুল, দোষত্রুটি কখনই অনুভব করে না। এই অভিযোগে অভ্যস্ত মানুষগুলোর সঙ্গে কখনই ভাল থাকা যায় না। তাই দেখে নিন আপনার সঙ্গীর মাঝে এই খারাপ অভ্যাসটি বিদ্যমান কি-না। এছাড়াও আরও কিছু বিষয় দেখে নিনÑ সঙ্গীর উন্নত মানসিকতা আছে কি-না। পারস্পরিক সহযোগিতা, হাসিখুশি থাকা, মানুষকে সম্মান করার মনোভাব, প্রতিজ্ঞা রক্ষা করে কি-না, শুধু নিজের সুখ-সুবিধার কথা ভাবে কি-না, সঙ্গী আয়-ব্যয়ের হিসাব বুঝে চলে কি-না ইত্যাদি। ছবি : সালেক বিন তাহের মডেল : রাফি ও ইমা পোশাক : ভিসা
×