ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনায় চিংড়ি কেনা বন্ধ ॥ অপদ্রব্য পুশের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৭:০১, ২৩ নভেম্বর ২০১৫

খুলনায় চিংড়ি কেনা বন্ধ ॥ অপদ্রব্য পুশের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ খুলনা অঞ্চলের এক শ্রেণীর অসাধু চিংড়ি ডিপো মালিকের চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ ঠেকাতে হিমায়িত মৎস্য রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো গলদা চিংড়ি কেনা বন্ধ রেখেছে। ভরা মৌসুমে গলদা চিংড়ি কেনাবেচা বন্ধ থাকায় এ অঞ্চলের চিংড়ি চাষীরা বিপাকে পড়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনা অঞ্চলে নোনা পানিতে বাগদা চিংড়ির পাশাপাশি মিষ্টি পানিতে গলদা চিংড়ি চাষ বেড়েছে। খুলনা জেলায় গলদা চিংড়ি ঘেরের সংখ্যা ৪৭ হাজার ৪৬৪। যার আয়তন ২০ হাজার ৭০৬ হেক্টর ও বাগদা চিংড়ির ঘেরের সংখ্যা ২২ হাজার ৭৬১টি। জমির পরিমাণ ৩৬ হাজার ৪০৫ হেক্টর। মাঠ পর্যায়ে জুলাই থেকে গলদা চিংড়ি ধরা শুরু হয়। নবেম্বর মাসে গলদা মৌসুম শেষ হতে থাকে। কিন্তু গত ১৫ নবেম্বর থেকে রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হঠাৎ করে গলদা চিংড়ি কেনা বন্ধ করে দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন মাঠ পর্যায়ে চাষীরা। অনেকে গলদা চিংড়িকে বাড়তি খাবার খাওয়াতে গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাছাড়া সময়মতো চিংড়ি ধরে বিক্রি করতে না পারলে এটি রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে বলে চাষীরা আশঙ্কা করছেন। বটিয়াঘাটা উপজেলাধীন কৈয়া বাজারের চিংড়ি ডিপোমালিক শেখ মামুনুর রহমান বলেন, মাছ কোম্পানিগুলো বর্তমানে গলদা চিংড়ি নিচ্ছে না। তারা বলছে, গলদা চিংড়িতে ব্যাপক অপদ্রব্য (সাগু, জেলি, জলই) পুশ করা হচ্ছে। চিংড়ি কিনতে না পারার কারণে ঘর চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। আর্থিকভাবে লোকসান হচ্ছে। ডুমুুরিয়া বাজারের আনোয়ারা পাইকারি মৎস্য আড়তের সাধারণ সম্পাদক গাজী মেহেদী হাসান বলেন, প্রতিদিন সকাল ও দুপুরে এখানে মাছের পাইকারি বাজার বসে। দৈনিক প্রায় ১ হাজার কেজি চিংড়ি কেনাবেচা হতো। কিন্তু এখন ২০/৩০ কেজির বেশি হচ্ছে না। তাও বিক্রি হচ্ছে অর্ধেক দামে। চিংড়িতে পুশ করা হচ্ছে এমন অভিযোগে ভাল চিংড়িও নষ্ট করে ফেলছে প্রশাসন। তাই ডিপো মালিকরাও চিংড়ি কিনতে চাচ্ছে না। বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস্ এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি শেখ আবদুল বাকি বলেন, মাঠ পর্যায়ে বর্তমানে গলদা চিংড়িতে ব্যাপক অপদ্রব্য পুশ করা হচ্ছে। এটি বন্ধ করতেই সাময়িকভাবে গলদা চিংড়ি কেনা বন্ধ রাখা হয়েছে। মৎস্য অধিদফতরের মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগের উপ-পরিচালক প্রফুল্ল কুমার সরকার বলেন, চিংড়ি প্রক্রিয়াজাত কোম্পানিগুলো নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে গলদা চিংড়ি কেনা বন্ধ করে দিয়েছেন। বাগদা চিংড়ি কেনা বেচা হচ্ছে। তিনি বলেন, চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ বন্ধের লক্ষ্যে গত মাসে ৪৭টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে। ডিপোমালিকদের প্রতিযোগিতামূলক দামে চিংড়ি ক্রয় করতে গিয়ে তারা বেশি দামে চিংড়ি কিনছেন। ফলে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চিংড়ির ওজন বাড়ানোর জন্য চিংড়িতে অপদ্রব্য (সাগু, জেলি, জলই ইত্যাদি) পুশ করছে। এতে চিংড়ির আন্তর্জাতিক বাজার নষ্ট হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।
×