ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিমক্ষেতে ভাইরাস

প্রকাশিত: ০৭:২৬, ২৪ নভেম্বর ২০১৫

শিমক্ষেতে ভাইরাস

নিজস্ব সংবাদদাতা, নরসিংদী, ২৩ নবেম্বর ॥ জেলার কৃষকরা এখন দিশেহারা। মোজাইক ও ফাকরা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জেলার বেলাব, শিবপুর, রায়পুরা উপজেলার প্রায় আড়াইহাজার হেক্টর জমির শিমগাছ হলুদ বর্ণ হয়ে ফলনহীন হয়ে পড়েছে। ফলে এসব জমির শিমগাছ এখন গো খাদ্য হিসেবে পরিণত হয়েছে। কিছু কিছু গাছে শিম হলেও তা আঁকাবাঁকা এবং পোকায় আক্রান্ত। এসব শিম বাজারে কেনাবেচা হয় না। বেলাব উপজেলার ভাটেরচর গ্রামের কৃষক আবদুর রহমান জানান, ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় শিম বাজারে বিক্রি হয় না। এগুলো গরুকে খাওয়ানো ছাড়া আর কোন কাজে লাগে না। ভাইরাস দমনে কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে আসেন না। কৃষকদের পরামর্শ দেয়ার কোন লোক নেই। বেলাব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার দাসকে বিষয়টি অবহিত করা হলেও তিনি এক দিনের জন্যও মাঠপর্যায়ে আসেননি। একই গ্রামের কৃষক আক্কাস আলী জানান, কীটনাশক ছিটিয়ে কোন ফল পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে। নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ লতাফত হোসেন জানান, মোজাইক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে শিবপুর, বেলাব ও রায়পুরা উপজেলার প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমির শিমগাছ। বীজবাহিত ভাইরাসে আক্রান্ত এসব শিমগাছে সবুজপাতা ফড়িং প্রথমে একটি পাতার রস খেয়ে অন্য একটি গাছে বসে, এতে ওই গাছটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। এভাবেই জমির অনান্য গাছে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। গাছগুলো আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কেটে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হতো। তা হলেই এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ত না। মাঠপর্যায়ে কৃষি বিভাগের লোকজন কৃষকদের পরামর্শ দিলেই এটা মহামারী আকার ধারণ করত না। গাইবান্ধায় আখক্ষেতে পোকার আক্রমণ নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা থেকে জানান, মাজরা পোকায় ক্ষতিগ্রস্ত গোবিন্দগঞ্জ উপজেলাধীন মহিমাগঞ্জের রংপুর চিনিকল এলাকার প্রায় ৪শ বিঘা জমির আখ। বাজারের ওষুধ ও চিনিকল কর্তৃপক্ষের সরবরাহ করা কীটনাশকে ও কোন কাজ না হওয়ায় সতীতলা ও পুনতাইড় ব্লকের জমির আখ মরে গেছে। এই এলাকার আখের জমির দিকে তাকালে চোখে পড়ে মাঠের পর মাঠ শুধু বিবর্ণ মরা দ-ায়মান আখ ক্ষেত। অর্থ ব্যয় করে দীর্ঘ মেয়াদি এ ফসল আবাদ করলেও এখন পোকায় খেয়ে ফেলা মাঠ ভরা মরা আখ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। চলতি মৌসুমে রংপুর চিনিকলের বিভিন্ন এলাকায় এবার ৩ হাজার ৮৮২ একর জমিতে আখ চাষ করা হয়েছে। এলাকাবাসী ও চিনিকলের পরিসংখ্যানে চিনিকল স্থাপিত হওয়ার পর এবারই প্রথম এত কম পরিমাণ চাষ হয়েছে। কম জমিতে আখ চাষ হলেও আখের ফলন হয়েছে ভাল। তবে চিনিকল এলাকার পুনতাইর ও সতিতলা ব্লকের চাষ করা আখে ব্যাপকভাবে পোকা ও রোগবালাই আক্রান্ত হয়ে আখের ক্ষেত মারা যাচ্ছে। ক্ষেতের পর ক্ষেত আখ মরে শুকিয়ে যাওয়ায় চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছে চাষীরা। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার একাধিক আখচাষীরা জানান, দায়িত্বরত চিনিকলের ইক্ষু উন্নয়ন সহকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তার দেয়া পরামর্শ অনুযায়ী এবং তার সরবরাহ করা কীটনাশক আক্রান্ত জমিতে প্রয়োগ করা হলেও তাতেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে রংপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল খালেক বলেন, পোকা আক্রান্ত এলাকায় বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক প্রয়োগসহ পোকা ও রোগবালাই প্রতিরোধে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হয়নি।
×