ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দ্বিতীয় দফায় ভারত গেলেন ৩১০ জন

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ২৫ নভেম্বর ২০১৫

দ্বিতীয় দফায় ভারত গেলেন ৩১০ জন

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ভারতের নাগরিকত্ব নেয়া ৩১০ জন স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফায় ভারত গেছেন। এর মধ্যে রয়েছে কুড়িগ্রামের বিলুপ্ত ছিটমহলের ৩০ পরিবারের ১৫৮ জন এবং পঞ্চগড়ের বিলুপ্ত দহলা খাগড়াবাড়ি ছিটমহলের ৩০ পরিবারের ১৫২ জন। আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীরা চোখের জলে ভারতগামী এসব মানুষকে শেষ বিদায় জানান। এ সময় সেখানে কান্নার রোল পড়ে যায়, সৃষ্টি হয় বেদনাঘন পরিবেশ। বিদায় বেলায় তাঁরা নিজেরা কাঁদলেন, অন্যদেরও কাঁদিয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বাগভা-র বিজিবি ক্যাম্পের নিকট আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ৯৬২-এর ১এস এর পাশ দিয়ে কুড়িগ্রামের ১৫৮ জন এবং চিলাহাটির হলদিবাড়ী সীমান্ত দিয়ে পঞ্চগড়ের ১৫২ জন ভারতে প্রবেশ করেন। খবর স্টাফ রিপোর্টারদের। সকাল সোয়া ৯টার দিকে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার কালিরহাট বাজারে পাশে শেখ ফজিলাতুননেছা দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ হতে ২৯ পরিবারের ১৫৭ জনের দলটি ২৪টি পিকআপে মালামাল এবং পাঁচটি মিনিবাসে ভারতীয় সীমান্তের দিকে রওনা দেন। পথে ভুরুঙ্গামারীর বিলুপ্ত ছিট গাড়লঝোড়া থেকে একটি পরিবারের আরও একজন যোগ দেন তাদের সঙ্গে। এ সময় তাদের তদারকি করেন ভারতীয় দূতাবাসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা অভিজিৎ রায়, ফারুক আজম ও অরুপ চক্রবর্তী। ভুরুঙ্গামারীর বাগভা-ার সীমান্ত চেক পোস্টে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারা ভারতীয় ভূ-খ-ে প্রবেশ করেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কুচবিহারের এমএলএ রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বরণ অনুষ্ঠানে বলেন, বঞ্চিত ৬৮ বছরের বন্দীদশা থেকে মুক্তি পাওয়া এসব মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা সাবেক ছিটমহল হতে যারা ভারতে আসছে তাদের গ্রহণ করা শেষে আমরা তাদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ নেব। পঞ্চগড় ॥ দেবীগঞ্জ উপজেলার বিলুপ্ত দহলা খাগড়াবাড়ি ছিটমহলের ৩০ পরিবারের ১৫২ জন নতুন ভারতীয় নাগরিক স্থায়ীভাবে ভারতে চলে গেলেন। ১৫০ জন যাওয়ার কথা থাকলেও দুই নবজাতকসহ এ সংখ্যা হয়েছে ১৫২। এরমধ্যে ৬৩ জন পুরুষ, মহিলা ৫০ জন এবং দুই নবজাতকসহ শিশু ৪৯ জন। চিলাহাটির ডাঙ্গাপাড়া সীমান্তে আব্দুর রউফ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেলের দিকে হলদিবাড়ী সীমান্ত দিযে ভারতে প্রবেশ করেন তারা। এর আগে সোমবার বিকেলে প্রয়োজনীয় মালামালসহ দেবীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে স্থাপিত চেকিং ও লোডিং পয়েন্টে আনা হয় তাদের। কাস্টমস ও বিজিবি কর্তৃপক্ষের চেকিং কার্যক্রমের পর সেখানে তাদের রাতযাপনের ব্যবস্থা করা হয়। মঙ্গলবার সকালে দেবীগঞ্জ চেকিং ও লোডিং পয়েন্ট থেকে ৪টি বাস ও ৮টি ট্রাকে মালামালসহ নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি ডাঙ্গাপাড়া সীমান্তে রওয়ানা দেন তারা। এসময় পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম আযম বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের ফাস্ট সেক্রেটারি রমাকান্ত গুপ্তা, দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। শেষ বিদায়ক্ষণে আত্মীয়স্বজন এবং বিদায়ী ভারতীয়রা কান্নায় ভেঙ্গে পরেন।
×