ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দেশ-বিদেশের ৩৫০ শিল্পী, সমকালীন চিন্তা- বিচিত্র প্রকাশ

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২৫ নভেম্বর ২০১৫

দেশ-বিদেশের ৩৫০ শিল্পী, সমকালীন চিন্তা- বিচিত্র প্রকাশ

মোরসালিন মিজান ॥ বড় আয়োজন বলতে হবে। শত শত শিল্পীর কাজ। শুধু বাংলাদেশ নয়, এশিয়া মহাদেশের আট দেশের শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেছেন। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে জাপান, ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর কোরিয়া ও শ্রীলঙ্কা। সঙ্গত কারণেই বিচিত্র ভাবনা। এসব ভাবনার কথা নানা মাধ্যমে প্রকাশিত। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মোটামুটি ভরে উঠেছে। প্রায় সব ক’টি গ্যালারি নিয়ে একটিই আয়োজন- সপ্তম আন্তর্জাতিক কাহাল আর্ট ফেয়ার। বাংলাদেশ ও জাপানের শিল্পীদের নিয়ে গঠিত কাহাল আর্ট গ্রুপ এই ফেয়ারের আয়োজক। শিল্পকলা একাডেমির সহায়তায় আয়োজিত ফেয়ারে ৩৫০ জন শিল্পী। শিল্পকর্ম সংখ্যা ৫৫০টি। মূল আয়োজনটি চিত্রশালার তৃতীয় তলায়। পুরোটাই শিল্পকর্ম দিয়ে সাজানো। প্রতিটি দেয়ালে চিত্রকর্ম। পাশাপাশি সাজানো। মেঝেতে স্থাপনা শিল্পের প্রদর্শনী। আছে ভাস্কর্যও। প্রদর্শনীতে প্রচলিত মাধ্যমের কাজ আছে। তবে, মডার্ন টেনোলজির ব্যবহার চোখে পড়ার মতো। প্রিন্ট, এ্যাক্রিলিক, মিশ্র মাধ্যমেও ভাল কাজ করেছেন শিল্পীরা। সিনিয়র শিল্পীদের কিছু ভাল শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে। তবে, প্রদর্শনীর বড় অংশজুড়ে রয়েছে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ শিল্পীদের কাজ। অনেকেই স্বতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল। প্রদর্শনী ঘুরে দেখতে দেখতে তাঁদের সমকালীন ভাবনা ও নিরীক্ষা সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। অপেক্ষাকৃত অনুজ্জ্বল শিল্পীদের কোন কোন শিল্পকর্মেও চোখ স্থির হয়ে যায়। প্রদর্শনীর বিদেশী শিল্পীদের ভাবনাজুড়ে আজকের অশান্ত পৃথিবী। চলমান সংঘাত, সংঘর্ষ শিল্পীর চেতনাকে নাড়া দিয়ে যায়। যুদ্ধাবস্থার অবসান, মানবিক পৃথিবীর আকাক্সক্ষার কথা ফুটে ওঠে বেশি কিছু চিত্রকর্মে। ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের নানা অসঙ্গতির কথাও বাদ যায় না। দেশীয় শিল্পীদের চিত্রকর্মে যথারীতি ফুটে উঠেছে আবহমান বাংলা। সবুজ প্রকৃতি, নদী-নৌকাকে এঁকেছেন তারা। বার বার দেখা দৃশ্য থেকেই নতুন অনষঙ্গ খুঁজে নিয়েছেন। প্রাকৃতিক রঙে বাংলার ঐতিহ্যের কথা বলছে পটচিত্র। আছে রিক্সা পেইন্টিং। ভাস্কর্য গ্যালারিটিও পরিপূর্ণ। বিন্নি শিল্পীর কাজ। টেরাকোটা, কাঠ, লোহা, সিমেন্ট ইত্যাদি মাধ্যমে গড়া ভাস্কর্য। প্রদর্শনীতে আছে কোওইচি তাকিতারও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিল্পকর্ম। জাপানের বিখ্যাত এই মৃৎশিল্পীর হাত ধরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মৃৎশিল্প বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। স্থাপনা শিল্পের ভাষাও জোরালো। সব মিলিয়ে সমৃদ্ধ প্রদর্শনী। এবার কাহাল আন্তর্জাতিক আর্ট ফেয়ারে প্রদর্শিত শিল্পকর্মগুলো থেকে মোট ১০ শিল্পীর শিল্পকর্মকে কাহাল পুরস্কার প্রদান করা হয়। এগুলোর ৩টি গ্র্যান্ড পুরস্কার। ৭টি সম্মাননা পুরস্কার। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় গ্র্যান্ড পুরস্কার লাভ করেন যথাক্রমে শিল্পী সৈয়দ জাহিদ ইকবাল, শিল্পী মোঃ তানভীর জালাল ও শিল্পী মোঃ পারভেজ হাসান। সম্মাননা পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীরা হলেন সৈয়দ হাসান মাহমুদ, বিকাশ আনন্দ সেতু, উপমা দাস, নারগিস পলি, সীমান্ত পাল, হারোকো কাওয়াশিমু (জাপান), পাক জাইওংমো (দক্ষিণ কোরিয়া)। প্রদর্শনী চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে।
×