ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বড় মিয়া, আঙ্গুর মিয়া ও রাজ্জাক আমার স্বামীকে নির্যাতনে জখম করে

প্রকাশিত: ০৫:২০, ২৫ নভেম্বর ২০১৫

বড় মিয়া, আঙ্গুর মিয়া ও রাজ্জাক আমার স্বামীকে নির্যাতনে জখম করে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতারকৃত হবিগঞ্জের দুই সহোদর মহিবুর রহমান ওরফে বড় মিয়া, মুজিবুর রহমান ওরফে আঙ্গুর মিয়া ও আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ৯ম সাক্ষী রাজু বিবি জবানবন্দীতে বলেছেন, আসামিরা আমার স্বামী আনফর উল্লাকে ধরে নির্যাতন করে হাত ভেঙ্গে দেয়। জবানবন্দী শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য ৩ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যশোরের সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ২৩ ডিসেম্বর দিন নির্ধারন করেছেন ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেছে। এ সময় প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন, ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল ও প্রসিকিউটর রিজিয়া সুলতানা চমন। আসামি পক্ষের ছিলেন এ্যাডভোকেট মাসুদ রানা ও এ্যাডভোকেট আব্দুস শুকুর। হবিগজ্ঞের তিন রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম রাজু বিবি। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৬৮ বছর। আমার স্বামীর বাড়ির ঠিকানা গ্রাম- এরালিয়া বেড়িপাড়, থানা-বানিয়াচং, জেলা-হবিগঞ্জ। আমি আমার স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করি। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময়ও আমি আমার স্বামীর বাড়িতে বসবাস করতাম। আমার স্বামীর বাড়ি এরালিয়া বেড়িপাড় গ্রামের উত্তর পাড়ায় অবস্থিত। ঐ গ্রামটি খাগাউড়া ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। সাক্ষী বলেন, একাত্তরে ভাদ্র মাসের মাঝামঝি সময়ে কোন একদিন বেলা আনুমানিক ১০টার দিকে আসামি মহিবুর রহমান ওরফে বড় মিয়া, মুজিবুর রহমান ওরফে আঙ্গুর মিয়া ও আব্দুর রাজ্জাকসহ আরও কয়েকজন রাজাকার আমার স্বামীর বাড়িতে এসে আমার স্বামী আনফর উল্লাকে ধরে সৈয়দ কামরুল আহসানের বাড়িতে স্থাপিত রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায়। ঐ সময় আমি আমার স্বামীর বাড়িতে ছিলাম। আসামিরা যখন আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায়, তখন আমি আসামি ও রাজাকারদের পেছনে পেছনে গেলে আসামি মজিবুর রহমান ওরফে আঙ্গুর মিয়া আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তখন আমি আসামিদের পেছনে পেছনে রাজাকার ক্যাম্পে যাই। আসামিরা ও রাজাকাররা আমার স্বামীকে উক্ত রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার পর তাকে অমানুষিক নির্যাতন করে এবং আমি তার নির্যাতনের আর্তচিৎকার শুনতে পাই। পরের দিন সকালে আনুমানিক ১০টার সময় আসামি মহিবুর রহমান ওরফে বড় মিয়া, মুজিবুর রহমান ওরফে আঙ্গুর মিয়া ও আব্দুর রাজ্জাকসহ রাজাকাররা আমার স্বামী আনফর উল্লাকে আহত অবস্থায় আমাদের ঘরের পেছনে ফেলে যায়। সাক্ষী আরও বলেন, আসামি ও রাজাকাররা আমার স্বামীকে আমাদের ঘরের পেছনে ফেলে যাওয়ার সময় আমি তাদেরকে দেখেছিলাম। তখন আমি আমাদের ঘরের পেছনে গিয়ে আমার স্বামী আনফর উল্লাকে তার ডান হাত ভাঙ্গা এবং সমস্ত শরীর রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পাই। তখন বাড়ির আশপাশের লোকজনসহ আমি আমার স্বামীকে আমাদের ঘরে নিয়ে আসি। পরে ডাক্তার দিয়ে তাকে চিকিৎসা করাই।
×