ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দ্বারে ঐতিহাসিক দিবারাত্রির টেস্ট

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২৫ নভেম্বর ২০১৫

দ্বারে ঐতিহাসিক দিবারাত্রির টেস্ট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্ষণ গণনার পালা শেষ, দ্বারে ঐতিহাসিক দিবারাত্রির টেস্ট। আর দু’টি মাত্র দিনের অপেক্ষায়। এ্যাডিলেডে শুক্রবার শুরু অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ টেস্ট। যেটির মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে সাদা পোশাকের অভিজাত ক্রিকেট। এই ম্যাচ দিয়েই খেলাটির ১৩৮ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দিবারাত্রির টেস্ট ম্যাচ। যেখানে ফ্লাডলাইটের আলোয় ব্যবহৃত হবে গোলাপি বল। প্রস্তুত এ্যাডিলেড ওভাল, প্রস্তুত গোলাপি বল। প্রথম টেস্ট জিতে এরই মধ্যে সিরিজে ১-০তে এগিয়ে স্টিভেন স্মিথের অস্ট্রেলিয়া। ঐতিহাসিক ম্যাচটি তাই হয়ে উঠেছে সিরিজ নির্ধারক। এ এক নতুন অভিজ্ঞতা, নতুন আয়োজন। কিন্তু দিবারাত্রির টেস্ট ও এতে ব্যবহৃত গোলাপি বল নিয়ে আলোচনা কম হয়নি। পক্ষে-বিপক্ষে মত দিয়েছেন বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেট রথী-মহারথীরা। পক্ষে কথা বলেছেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) নির্বাহী প্রধান জেমস সাদারল্যান্ড। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি এটা এক ঐতিহাসিক ম্যাচ। টেস্ট ক্রিকেটকে আরও আনন্দদায়ক করতে এটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। আমি সকল ভার্সনের ক্রিকেটকেই (টি২০, ওয়ানডে, টেস্ট) ভালবাসি। তবে টেস্ট ক্রিকেটটাকে একটু বেশিই পছন্দ করি এবং সততার সঙ্গে বলছি এই আয়োজন টেস্ট ম্যাচকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।’ টি২০-ওয়ানডের দাপটে ক্রমশ জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে ঐতিহ্যের টেস্ট। কমে যাচ্ছে দর্শক। এ নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। মূলত মাঠে দর্শক টানতেই ফ্লাডলাইটের আলোয় গোলাপি বলে এ আয়োজন। যাতে অফিস শেষ করে বিকেল বেলায় দর্শকরা মাঠে আসতে পারেন। সমর্থন করেছেন মোড়ল দেশ ভারতের টেস্ট অধিনায়ক বিরাট কোহলিও, ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষাটা আমার সবসময়ই দারুণ লাগে। এটি টেস্ট ক্রিকেটকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে বলেই মনে হয়। সত্যি এ্যাডিলেড টেস্টটা দেখতে আমারও তর সইছে না!’ ফ্লাডলাইটের চেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে গোলাপি বলের কার্যকারিতা নিয়ে। সদ্য অবসরে যাওয়া অস্ট্রেলীয় ওপেনার ক্রিস রজার্স যেমন বলেন, ‘আমাকে পরিষ্কারভাবে বলটা দেখতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। ঠিক লাল বলের মতো পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছিলাম না। একটু ঝাপসা মনে হচ্ছিল যা কখনোই আদর্শ হতে পারে না।’ গোলাপি বলে অনুশীলনের অভিজ্ঞতা থেকে একথা বলেন তিনি। ডেভিড হাসি তো পরীক্ষামূলক নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া একাদশের মধ্যকার প্রস্তুতি ম্যাচটিতে মাঠেই ছিলেন। তিনি বলেন, ‘এটা ৮০ ওভারের মতো টেকসই নয়। ম্যাচে আমাদের দু’বার বল বদল করতে হয়েছিল। সুতরাং আমার মনে হয় দেরি হওয়ার আগেই ভাবার প্রয়োজন আছে!’ তবে ইতিহাসের সাক্ষী হতে পুরোপুরি প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন গোলাপি বল প্রস্তুতকারক কোম্পানি কোকাবুরার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ব্রেট এলিয়ট, ‘শেষ পাঁচ বছর ধরেই অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে এমসিস, ইসিবি ও সিএ গোলাপি বলে প্রচুর সংখ্যক ম্যাচ খেলেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আত্মপ্রকাশের জন্য এটি এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। যদিও অনেকে বলটির দৃশ্যমানতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছিলেন। কিন্তু আমরা গোলাপি ও সাদা দু’টি বলের ক্ষেত্রেই প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করেছি। ফলে এটা আগের চেয়েও উজ্জ¦ল হয়েছে। এছাড়া যতভাবে সম্ভব বলটিকে পরীক্ষা করা হয়েছে। আশা করছি মাঠের ক্রিকেটার থেকে গ্যালারির দর্শক কারোই দেখতে মোটেই সমস্যা হবে না।’
×