ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দখলবাজদের কবলে

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ২৬ নভেম্বর ২০১৫

দখলবাজদের কবলে

রফিক তালুকদার দিন দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভরাট ও দখল হচ্ছে নদ, নদী, খাল, বিল, জলাশয়, হাওড় ও বাঁওড়। এসব দখল ও ভরাটের মধ্য দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর, দোকানপাট ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে প্রতিদিন কোন না কোন স্থানে খাল, নদী, হাওড় বাওড়, কৃষিজমি, নিচু জমি ও জলাশয় ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের প্রতিযোগিতা চলছে। শুধু তা নয়, বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার নির্গত বর্জ্য ও আবর্জনা ফেলার মধ্য দিয়েও বিভিন্ন নদ-নদী, জলাশয় দূষিত করা হচ্ছে। আজ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নদ-নদী, জলাশয় বিলুপ্ত ও মৃতপ্রায় মানবসৃষ্ট এ ভয়াল থাবায়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিদিনই এ ভয়াবহতা প্রকাশিত হচ্ছে। প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদে উল্লেখিত তথ্য থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের সহস্রাধিক নদ-নদীর মধ্যে আজ পাঁচ শতাধিক নদী বিপন্ন। ৪১২টি হাওড়ের মধ্যে কমে ৩৭৩টি দাঁড়িয়েছে। অচিরেই আরও অসংখ্য নদ-নদী, জলাশয় বিপন্ন হবে এমন আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে অসংখ্য টিউবওয়েল ও পানির ঝর্ণা। তীব্র খরায় দেশের নদী, খাল আর পুকুর জলাশয়গুলোও পানিশূন্য হয়ে পড়ে। ফলে শুকনো মৌসুমে পানির জন্য হাহাকার চলে দেশজুড়ে। পানির অভাবে বিভিন্ন স্থানে এক মৌসুমে চাষ হলে অন্য মৌসুমে চাষ হয় না। পানির অভাবে বছর পর বছর চাষ করতে পারছে না এমন ভূমিও কম নয়। এছাড়া এসব জলাশয় ভরাট করার ফলে বর্ষা শুরু না হতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় বিভিন্ন স্থানে। ঢাকা শহর ও চট্টগ্রাম শহর তার বড় প্রমাণ। জানা যায়, এ সংক্রান্ত জলধারা সংরক্ষণ আইনানুযায়ী কোন ঝিল বা জলাশয় ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। এ আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় অনেকে সরকারী নদী, খাল, নালা, জলাশয়ও ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করছে। এভাবে কোন নিয়ম-নীতি ছাড়াই জলাশয়, জমি, ছড়া, নদীভরাট ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ রোধ করা না গেলে মানুষের জীবন ধারণের জন্য সত্যি একদিন পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাবে না। গুটিকয়েক স্বার্থন্বেষী মানুষের জন্য এতবড় ক্ষতি হতে দেয়া যায় না । এখনি আমদের সচেতন হতে হবে, রক্ষা করতে হবে খাল, নদী, হাওড়, বাঁওড় জলাশয়গুলো। তা না হলে হাওড়-বাঁওড়, খাল, বিল সমৃদ্ধ নদীমাতৃক এ দেশও একদিন অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে। ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম থেকে
×